
চেনা অচেনা অলিয়ার রহমান।
এই যে তোমার মনের ঘরে জ্বলছে সদা সুখের আলো, অশ্রু মুছে দুঃখগুলো জীবনটাকে সাজিয়ে দিলো। ভালবাসার কুঞ্জবনে ছড়িয়ে শত সুখের আশা, বুকের মাঝে আছড়ে পড়ে সাত জনমের ভালবাসা। হলদে পাখির ডানায় চড়ে স্বপ্ন আসে চোখের কোণে, হাত বাড়ালেই মধুর পরশ এটাই বুঝি সুখের মানে?
কৃষ্ণচূড়া ফুলের বনে এই যে তোমার বসতবাড়ি, মোমের শরীর জড়িয়ে থাকে মুগ্ধ করা নীলের শাড়ি। এতো সুখের মাঝে হঠাৎ যেদিন তোমার লাগবে একা, জানবে আমি হারিয়ে গেছি বুকের মাঝে নেইকো সখা। অনেক দুরে থাকবো সেদিন থাকবো সেদিন অনেক দুরে, চেনা জানা সুরগুলো সব বাজবে কেমন অচিন সুরে।
এই যে তোমার বুকের মাঝে সুখ পাখিদের আনাগোনা, এমন মানিক যাহার আছে তুচ্ছ সেথায় খাঁটি সোনা। ছোট ছোট দুষ্টুমি আর মান অভিমান সারাবেলা, কান্না হাসির পালা বদল এটাই ভালবাসার খেলা। মিষ্টি মধুর আলিঙ্গনে ভিজিয়ে তোমার আঁখিদুটি, প্রেমের খেলা খেলছে সখা দিবস রাতে নেইকো ছুটি। হঠাৎ যেদিন থামবে হাসি লাগবে তোমার ভীষণ একা, জানবে আমি হারিয়ে গেছি বুকের মাঝে নেইকো সখা। অনেক দুরে থাকবো সেদিন থাকবো সেদিন অনেক দুরে, চেনা জানা সুরগুলো সব বাজবে কেমন অচিন সুরে।
সেদিন এমন সুখের মাঝেও বাদল ধারা নামবে চোখে, উদাস হাওয়া বইবে সেদিন শুন্যে ভরা তোমার বুকে।
এই যে তোমার চাওয়াগুলো পাওয়ার মাঝে ঘুমিয়ে থাকে, ভালবাসার পদ্ম ফোটে জীবন নদীর বাঁকে বাঁকে। চোখ খুললেই স্বপ্নসিড়ি যেথায় খুশি যাচ্ছো চলে, সুখের বেলি সুবাস ছড়ায় ভালবাসার পাপড়ি মেলে। হঠাৎ যেদিন ফুল শুকাবে ফুলদানিতে সাজিয়ে রাখা, জানবে আমি হারিয়ে গেছি বুকের মাঝে নেইকো সখা। অনেক দুরে থাকবো সেদিন থাকবো সেদিন অনেক দুরে, চেনা জানা সুরগুলো সব বাজবে কেমন অচিন সুরে।
কবির মন্তব্য: আমাকে বহুবার আমার প্রিয় কবিতার নাম বলতে বলা হয়েছে। আমি সবসময় বলি - আমার লেখা প্রায় সব কবিতাই আমার প্রিয়। তারপরও কিছু ব্যতিক্রম অবশ্যই থেকে যায়। একবার একটা টিভি চ্যানেলে আমার প্রিয় কবিতার নাম বলেছিলাম " চেনা অচেনা "। ঐ অনুষ্ঠানে কবিতাটা আমি আবৃত্তিও করেছিলাম ( অবশ্য আমি ভালো আবৃত্তি করতে পারি না)। বলে রাখা ভালো - কবিতাটা আমার সহধর্মিণীর খুবই অপছন্দ। এই কবিতা আমি কেন লিখেছি - সেই কৈফিয়ত আমাকে অনেকবার দিতে হয়েছে। জীবনের এক চরম সত্যকে আমরা পাশ কাটিয়ে যেতে চাই, কিন্তু পারি কি? হুমায়ুন আহমেদের মত জীবনের পরিধি নিয়ে আমারও অনেক হতাশা। সত্যিই তো - একটা কচ্ছপ কেন দু'শো থেকে তিনশো বছর বাঁচবে? পৃথিবীর এই সীমাহীন সৌন্দর্য কি ষাট থেকে সত্তর বছরে উপলব্ধি করা যায়? এই যে আমাদের চোখে জল আনা এতো মায়ার বাঁধন - এসব কিছু কেন ছোট্ট পরিধিতে শেষ হয়ে যাবে? আমি কোন উত্তর খুঁজে পাইনা। একবুক হাহাকার নিয়ে শূন্যে তাকিয়ে থাকি। আপনাদেরও কি আমার মত অবস্থা, নাকি ভিন্ন কিছু? মন খুলে জানাতে পারেন আমার মত করে।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: