সংগ্রামী নেতা ডাক্তার নুরুল ইসলাম (তাজুল) কে নিয়ে ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২৩ ডিসেম্বর ২০২০ ০৮:৫১

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৩ ডিসেম্বর ২০২০ ০৮:৫১

ছবি সমসাময়িক
 

বি এম হাফিজুর রহমান।। আমি তখন মনিরামপুর উপজেলার অন্যতম সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐতিহ্যবাহি নাগোরঘোপ বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।সেই ১৯৯৭/৯৮ সালের কথা।সে বছর ১৫ ই আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস রাষ্ট্রীয় ভাবে পালনের পাশাপাশি সম্ভবত সে বারই প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পালনের জন্য তৎকালীন সরকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ নেন।তখন বুঝতাম না যে ১৫ ই আগষ্ট কি এবং তা কেন পালন করা হবে? ১৫ ই আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠ্যক্রম বন্ধ ঘোষণা থাকলেও বিদ্যালয়ে যথাযথ মর্যাদায় অন্যান্য কার্যক্রমের নির্দেশ থাকার ১৪ ই আগষ্ট বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সকল ছাত্র/ছাত্রী নোটিশের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছিল।সাথে সাথে পরদিন সকালে অর্থাৎ ১৫ ই আগষ্ট সকাল ১০ টায় স্কুলের হলরুমে আলোচনা অনুষ্ঠানসহ জাতীয় পতাকা অর্ধ নিমিত করার কর্মসূচি,র‍্যালি ইত্যাদি ইত্যাদি পালনের বিষয় গুলি নোটিশে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।সে কারণে আলোচনা অনুষ্ঠানের পূর্ব প্রস্তুতি এবং আলোচনা করার ইচ্ছা পোষণ করা ছাত্র/ছাত্রীদের নাম আলোচনা অনুষ্ঠান শুরুর পূর্বেই স্কুলের অফিস কর্তৃপক্ষের কাছে লেখানোর কথাও উল্লেখ করা হয়েছিল ঐ নোটিশে। মনিরামপুর উপজেলার ১২ নং শ্যামকুড় ইউনিয়নের ফকিররাস্তায় অবস্থিত ঐতিহ্যববাহি নাগোরঘোপ বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক ছিলেন স্বর্গীয় বাবু প্রাণকৃষ্ণ চক্রবর্তী।নাগোরঘোপ বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় শুধু পড়াশোনার জন্য সুনামি ছিল তা কিন্তু নয় বরং ঐ সময়ে যশোর শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে যে কয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ছাত্র/ছাত্রীরা ভাল রেজাল্ট করতো তার মধ্যে নাগোরঘোপ বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছিল অন্যতম।পাশাপাশি সকল শিক্ষক/কর্মচারী/কর্মকর্তা বৃন্দ সকলেই শুধু শ্যামকুড় ইউনিয়নই নয় বরং মনিরামপুর উপজেলার মধ্যে সে সময়ের সেরাদের তালিকায় অন্যতম।আর স্বনামধন্য খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ স্বর্গীয় বাবু প্রাণকৃষ্ণ চক্রবর্তী সে বারই প্রথম যশোর জেলার শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হয়ে গোল্ড মেডেল পান।ঠিক সেই কারণে স্কুলের শিক্ষার মান,ছাত্র/ছাত্রীরা খেলাধুলা,সাংস্কৃতি,উপস্থিত বক্তৃতা,বিতর্ক প্রতিযোগিতা ইত্যাদি কার্যক্রমে উপজেলাসহ জেলার মধ্যে সুনাম বয়ে আনে।সেই সুনাম ধরে রাখার জন্য ঐ বারের ১৫ ই আগষ্টের আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠানে না জেনে,না বুঝে কাকতালীয় ভাবে আমি বক্তৃতায় নাম লিখে দিই। ১৪ ই আগষ্ট দুপুর ২:৩০ মিনিটে স্কুল ছুটি হওয়ার পর প্রাইভেট পড়ে বাড়ি এসে দুপুরের খাওয়া শেষ করে বাড়ির পাশের স্কুলের মাঠে খেলার বন্ধুদের সাথে যোগ না দিয়ে খুঁজতে থাকি সিনিয়র কোন বড়ভাই যিনি ১৫ ই আগষ্টের আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণের জন্য প্রস্তুতি মুলক কিছু ধারণা দিতে পারেন।মাথায় শুধু একটি বিষয় ঘুরপাক খাচ্ছিল সেটি হচ্ছে স্কুলের আলোচনা অনুষ্ঠানে কি বলতে হবে?আলোচনা বাস্তব সত্য কথা হল,১৫ ই আগষ্ট কি?কেন এবং কি তার কারণ? এসব ছিল আমার কাছে তখন হিমালয় পর্বতমালার মত বড় প্রশ্ন! আমার বাড়ির পাশের ছোট্ট একটি মোড় যেটি এখন বাজারে রুপ নিয়ে আস্তে আস্তে উন্নতির দিকে এগিয়ে চলেছে।ঐ সময়ের অত্র অঞ্চলের সবাই শ্যামকুড় মোড় নামে চিনত!সেই পরিচিত নাম এখনও আছে তবে এখন অধিকাংশ সাধারণ মানুষ রামনগর বাজার নামে বেশি সম্বোধন করে থাকে।সময় এবং কালের বিবর্তনে এগুলি হচ্ছে এটা সবারই জানা।যাক সে সব কথা।আমার বাড়ির মোড়ে ঐ সময়ে যে কয়টি মুদি দোকান ছিল তার মধ্যে আমার এক প্রতিবেশী বড়ভাই সাবেক সেনা কর্মকর্তা মোঃ মোমতাজ উদ্দীন সরদার উনি ছিলেন অন্যতম এবং ঐ সময়ে শ্যামকুড় মোড়ের দোকানদারের সভাপতি।এমনকি ঐ সময়ে তিনি উক্ত ওয়ার্ড অর্থাৎ আমার জন্মস্থান রামনগর/জামলা ০৬ নং এর আওয়ামীলীগের সম্মানিত সভাপতি।এটা তখন আমার অজানা ছিল।বাড়ি থেকে মোড়ে এসে চায়ের দোকানে বসে চা খাওয়া এবং সাথে পত্রিকায় পাতায় চোখ বুলিয়ে সিনেমার খবর আর খেলাধুলার খবর পড়া ছিল নিত্যদিনের অভ্যাস যেটা ঐ সময়ে কলেজ পড়ুয়া বড়ভাই রুহুল কুদ্দুস শিখিয়েছিলেন।চা খেয়ে পত্রিকা দেখতে দেখতে স্কুলের আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার কথাটি একটু ভয়ে ভয়ে অন্যদের সাথে শেয়ার করতেই পাশ থেকে প্রতিবেশী বড়ভাই সাবেক সেনা কর্মকর্তা মোমতাজউদ্দীন আমাকে ডেকে বললেন কি হয়েছে? তোমার কি সমস্যা বলো তো?আমি একটু হেসে উঠে বললাম ভাই আগামী কাল স্কুলে নাকি ১৫ ই আগষ্টের আলোচনা অনুষ্ঠান! তো আমি সেই আলোচনা অনুষ্ঠানে নাম দিয়েছি আলোচনা করবো বলে!কিন্তু ১৫ ই আগষ্ট কি এবং কেন?কি কারণে হয়েছিল বা পালন করা হবে!সেখানে কি আলোচনা করতে হবে তা আমি জানি না!মোমতাজ ভাই মৃদু হেসে বললো আচ্ছা তোমার এই সমস্যা! আচ্ছা তুমি একটু বসো আমি দেখছি।বলে উনি দোকান থেকে উঠে বাইরে গিয়ে পাশের একটি চায়ের দোকান থেকে একজন মুরব্বী,সাদা পানজামী/লুঙ্গি পরিহিত কাচাঁপাকা চুল একটি বাটওয়ালা কালো চশমা চোখে পরা ভদ্রলোক মোমতাজ ভাইয়ের সাথে এসে আমার পাশে বসলেন।আমার কাছে কিছু শোনার আগেই আমার পরিবারসহ পারিবারিক সকল অবস্থা,অবস্থানসহ যাবতীয় তথ্যাদি,আমার ব্যক্তিগত সকল কিছুই মোমতাজ ভাই ঐ ভদ্রলোককে বলে আমার মুল সমস্যার কথা তুলে ধরলেন!ভদ্রলোকটি ও আমার সমস্যার কথা শুনে মৃদু হেসে বললেন আচ্ছা তা তুমি এতো ভয় পাচ্ছো কেন?ঠিক আছে আমি তোমাকে সব কিছু বলে বুঝিয়ে দিচ্ছি।আর তোমার আরও ভাল মনে রাখার জন্য একটি পত্রিকার পাতা দিয়ে দিচ্ছি যেটি একটু পড়লে তোমার মুখস্থ হয়ে যাবে।যেন বক্তৃতা দেওয়ার সময় তোমার সবই মনে থাকবে।ভয় পাবার কিছুই নেই!মনে সাহস নিয়ে সব কিছু ভাল ভাবে বলবে।বলা শুরু হল ১৫ ই আগষ্ট কি?কেন এবং কি তার কারণ? সকল তথ্যাদি নির্ভুল ভাবে একেবারে যেন সাহিত্য।বাঁচন ভঙ্গি থেমে থেমে বুঝিয়ে,গুছিয়ে একেবারেই মুখস্থ করে দিয়ে ছিলেন সবকিছুই।সাথে একটি পত্রিকা যেখানে ১৫ ই আগষ্ট মহান জাতীয় শোক বা জাতীয় দিবসের মর্মকথা এবং বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস!পরদিন সকালে অর্থাৎ ১৫ ই আগষ্ট স্কুলের হলরুমের আলোচনা সভায় আমার আলোচনা তথা বক্তব্য শুনে আমার শিক্ষাগুরু,আমার অনুপ্রেরণার মধ্যমণি স্বর্গীয় বাবু প্রাণকৃষ্ণ চক্রবর্ত্তী স্যার বলেছিলেন তোমার বক্তব্য খুবই ভাল হয়েছে। এ সকল রাজনৈতিক পদ/পদবীর কথা শুধু বললে চরম ভুল হবে!শুধু আমার মত নগন্য মানুষ নয় মনিরামপুর উপজেলার ১২ নং শ্যামকুড় ইউনিয়নের ১৯ টি গ্রাম,৯ টি ওয়ার্ড এবং প্রায় ৩২০০০ ভোটার জনগোষ্ঠীর অধিকাংশ সচেতন,শিক্ষিত,জ্ঞাণীগুণি,রাজনৈতিক,সামাজিক সকল শ্রেণি পেশার মানুষের কাছে একজন আদর্শবান সুনাগরিক,আদর্শবান সামাজিক,সাংস্কৃতিক,অসম্প্রদায়িক চেতনার দেশপ্রেমিক নিখাঁদ মানুষ হিসেবে তার জুড়ি মেলা ছিল ভার!ব্যক্তিগত লোভ লালসার উর্ধে থেকে কিভাবে ভাল মানুষ হতে হয়,কিভাবে মানুষকে ভালবাসতে হয়!তা তিনি শুধু আমাকে নয় আমার মত অজস্র মানুষ এবং তার নিজ দলীয় নেতাকর্মিদের শিখিয়ে গেছেন।ব্যক্তিগত জীবণে সাত/আট সন্তানের জনক হলেও সবাইকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মত মানুষ করার চেষ্টা করেছেন আমরণ পর্যন্ত।তিনি পুরোপুরি সফল না হলেও ব্যর্থ হয়নি। সম্মানিত পাঠক বৃন্দ,বলছি আর আদর্শের অন্যতম একজন শ্রদ্ধীয় মহৎ ব্যক্তি মনিরামপুর উপজেলার ১২ নং শ্যামকুড় ইউনিয়নের শ্যামকুড় গ্রামের কৃর্তীসন্তান!যিনি সফল ভাবে ১৯৮১ সাল থেকে ১৯৯৭/৯৮ সাল পর্যন্ত শ্যামকুড় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সম্মানিত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন!২০০৪ থেকে ২০১১/১২ সাল পর্যন্ত মনিরামপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর অন্যতম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনসহ অন্যান্য রাজনৈতিক,সামাজিক,বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সফলতার সাথে পালন করে আজ ভোর ৫ টার দিকে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন!মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক,সততার মূর্তমান প্রতীক,বিশিষ্ট পল্লী হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক ডাক্তার নুরুল ইসলাম বিশ্বাস তাজুল(৮০) বার্ধক্য জনিত কারণে তিনি নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন(ইন্নাইল্লাহি_রাজিউন)।মহান আল্লাহ পাকের কাছে মরহুম ডাক্তার নুরুল ইসলাম বিশ্বাস তাজুল চাচার আত্মার মাগফিরাত কামনা সহ শোকাহত পরিবারের সকল সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি। সম্মানিত পাঠক বৃন্দ,আমার দেখা কোন রাজনৈতিক নেতা কিংবা কর্মি যিনি লোভ,লালসার উর্ধে থেকে শতভাগ নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন।বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কঠিন দুঃসময়ে পায়ে হেটে সারা শ্যামকুড় ইউনিয়নের সাধারন নেতাকর্মিদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে সংগঠনকে গতিশীল করার প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে গেছেন!শতশত হাজার শিহ্য,নেতাকর্মি,দলীয় অনুসারী সৃষ্টি করেছেন। অর্থনৈতিক ভাবে একেবারেই নিঃশ্ব হলেও সাধারণ পল্লী হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক হয়ে মানুষের নাম মাত্র মূল্য নিয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে গেছেন।দলীয় নেতাকর্মিসহ কেউ কোন বিপদে পড়লে নিজের রোজগারের পয়সা ব্যয় করে সংগঠন করেছেন।পাশাপাশি সন্তানদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে মানুষের মত মানুষ করার চেষ্টা করেছেন।নিজে না খেয়ে রাতদিন পরিশ্রম করে সন্তানদের গড়ে তুলেছেন পাশাপাশি নিজের আদর্শ নীতি রক্ষার আদর্শ শিক্ষাদানে তিনি শতভাগ সফল বাবা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছেন।ব্যক্তিগত জীবনে মরহুম ডাক্তার নুরুল ইসলাম বিশ্বাস তাজুল চাচা অঢেল সম্পদের মালিক না হলেও সকলের কাছে তার সম্মান ছিল আকাশ ছোঁয়া। ডাক্তার নুরুল ইসলাম বিশ্বাস তাজুল চাচা আত্ন সম্মান,আদর্শ,চেতনা বোধ বিসর্জন দিয়ে কোন কাজ কোনদিনই করেননি।সততার প্রশ্নে আপোষ করেননি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত! রাজনীতি করতে গিয়ে জেল,জুলুম,নির্যাতন,হামলা,মামলা সহ হাজার হাজার প্রকার সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন কিন্তু নীতি আর বঙ্গবন্ধুর আদর্শের দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের পতাকা থেকে হাত সরিয়ে নেননি কোনওদিনও।সে জন্য তিনি সহ তার পরিবারের প্রায় সকল সদস্য বহুবার অপরিসীম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। ১৯৯১ সালে বহু মামলায় ডাক্তার নুরুল ইসলাম বিশ্বাস তাজুল চাচাসহ তার বড় ছেলে সাবেক ছাত্রনেতা,বর্তমান ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সম্মানিত সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ,মেঝ ছেলে আকরামকে বহু মামলায় আসামি করা হয়।কিন্তু পরবর্তীতে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসলে প্রতিহিংসা বশত কারো কোনদিন কোন ক্ষতি তো দুরে থাক খারাপ ব্যবহার পর্যন্ত করেননি। ২০০১ সালের ১লা অক্টোবর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ হেরে গেলে দু/তিন দিন পর তৎকালীন শাসক দলের নেতাকর্মিরা তার বড় ও মেঝ ছেলেকে বেদম মারপিট করে মৃত ভেবে ফেলে রেখে যায় এমনকি ডাক্তার নুরুল ইসলাম বিশ্বাস তাজুল চাচাকেও মারপিট করা হয় কিন্তু ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর আওয়ামীলীগ আবারও ক্ষমতায় আসলে সেই নির্যাতন কারীদের সবাইকে ক্ষমা করে দেওয়ার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন মরহুম বর্ষিয়ান এ রাজনৈতিক ও তার পরিবার!সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ ই জানুয়ারি উনার নিজ ভোট সেন্টার শ্যামকুড় ময়নাবাড়ি হাইস্কুলে নিজ ভোট প্রদান করে ভোট সেন্টারে হামলা হলে তিনি শারীরিক অসুস্থতার জন্য চিনাটোলা বাজারে ঔষধ কিনতে গেলে তৎ সময়ের নাশতা,জ্বালাও পোড়াও বাহিনী ডাক্তার নুরুল ইসলাম বিশ্বাস তাজুল চাচাকে লোহার রড/জেআই পাইপ দিয়ে বেদম মারপিট করলে সেই থেকে তিনি মারাত্মক অসুস্থ হয়ে দিন দিন মৃত্যুর দিকে এগিয়ে আসেন।সেই নির্বাচনেও আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করলেও তিনি কখনও সেই অত্যাচার কারীদের বিরুদ্ধে দলীয় হাই কমান্ডের কাছে কোন অভিযোগ দেননি। সম্মানিত পাঠক বন্ধু গণ,আজকের দিনে দলীয় এ পর্যায়ের একজন নেতার গাড়ি,বাড়ি,টাকা পয়সার কোন অভাব থাকার কথা নয়!কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে রাজনৈতিক ভাবে দুটি টাকা অবৈধ কিংবা রাজনৈতিক ভাবে অহেতুক সুবিধা নিয়েছেন এমন নজীর ডাক্তার নুরুল ইসলাম বিশ্বাস তাজুল চাচার জীবনে কোন দিন ঘটেনি!বরং দলীয় ফোরামে সততার দৃষ্টান্ত স্থাপনে মনিরামপুর উপজেলার মধ্যে তিনিই প্রথম তৎকালীন প্রভাবশালী সাংসদ মরহুম জননেতা এ্যাডভোকেট খাঁন টিপু সুলতানের বিভিন্ন সময়ের অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে জবাব চান?যা আজ অবদি মনিরামপুর উপজেলা আওয়ামীলীগে বিরল!যে কারণ তিনি বার বার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা লাঞ্ছিত বঞ্চনার শিকার হয়েছেন।বিরাগ ভাজন হয়েছেন।দলীয় কাউকে অসততার জায়গায় দেখলে প্রতিবাদ করেছেন।এ সব কারণ ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ হেরে যাওয়ার পর রাজগঞ্জ ডিগ্রি কলেজে তৎকালীন সাংসদ মরহুম জননেতা এড খাঁন টিপু সুলতানের সুপারিশ হওয়া চাকুরী তৎকালীন সরকার দলীয় সন্ত্রাসীদের নির্যাতনের শিকার হয়ে স্বেচ্ছায় চাকুরী হতে বিদায় নিতে হয়। আর জীবন প্রদীপ যখন টিপটিপ করে জ্বলছে,চলছে!যেখানে যাকে দেখতো তাকেই কি যেন বলতে চাইতো এমন দূর অবস্থার সময় মনিরামপুর থেকে নির্বাচিত বর্তমান সাংসদ/বর্তমান মাননীয় প্রতিমন্ত্রী বাবু স্বপন ভট্টাচার্য্য মহোদয় সরকারি তহবিল থেকে সামান্য কিছু নগদ অর্থ প্রদান করেন।আর মনিরামপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের তরুণ উদীয়মান নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আলমগীর হোসেন আলম মরহুম ডাক্তার নুরুল ইসলাম বিশ্বাস তাজুল চাচার বাড়ির সার্বিক অবস্থা এবং সার্বিক পরিস্থিতি বর্তমান মাননীয় প্রতিমন্ত্রী বাবু স্বপন ভট্টাচার্য্য এমপি মহোদয়ের কাছে বিনয়ের সাথে তুলে ধরলে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী মহোদয় সরকারি ভাবে বরাদ্দ দিয়ে একটি নতুন বাড়ি তৈরি করার ব্যবস্থা করে দেন!কিছু দিন পূর্বে বাড়ির কাজ শেষ করে উদ্বোধন করলে মরহুম ডাক্তার নুরুল ইসলাম বিশ্বাস তাজুল চাচা সেই বাড়িতে থাকতে শুরু করেন এবং সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।সৎ,ত্যাগী,জনদরদি,জনকল্যানকর,দেশদরদী এ মহৎ রাজনৈতিক কে স্যালুট জানাই! মরহুম বর্ষিয়ান রাজনৈতিক ডাক্তার নুরুল ইসলাম বিশ্বাস তাজুল চাচা মারা গেছেন কিন্তু রেখে গেছেন হাজার স্মৃতি,হাজারও দৃষ্টান্ত!আমার মত অনেক'কেই শিখিয়ে গেছেন আওয়ামী রাজনৈতিক অসম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ বিনির্মাণের মন্ত্র,বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার সৈনিক হিসেবে ভুমিকা রাখার দায়িত্ব সম্পর্কে।আদর্শবান আমরণ নীতি ধারণ করে চলা ডাক্তার নুরুল ইসলাম বিশ্বাস তাজুল চাচার মৃত্যু খবর ভোর ৫ টায় আসলে সেই থেকে উনার উদ্দেশ্যে কিছু লেখার জন্য বসেছি!এখন বিদায় নিতে! কারণ জানাজার নামাজে অংশ নেওয়ার প্রবল ইচ্ছা আছে আমার!বাকি আল্লাহ ভরসা।ডাক্তার নুরুল ইসলাম বিশ্বাস তাজুল চাচার শেখানো,দেখানো আদর্শ পথ ধরে এখনও হেটে চলছি বাকি আল্লাহ ভরসা!উনার জন্য তেমন কিছুই করতে পারিনি এটাই হয়তো সারাজীবন আফসোস থেকে যাবে কিন্তু স্মৃতির পাতায় এ দিনটি আমার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে_ইনশাল্লাহ!

লেখক, বি এম হাফিজুর রহমান হাফিজ। একজন গণমাধ্যম কর্মি এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ১, ১২ নং শ্যামকুড় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: