মনিরামপুরে সদ্য যোগদানকারী এসিল্যান্ডের হস্তক্ষেপে মিস মামলার জট খুলতে শুরু

মনিরামপুর। | প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০২৫ ০২:২১

মনিরামপুর।
প্রকাশিত: ২১ নভেম্বর ২০২৫ ০২:২১

ছবি- দৈনিক সমসাময়িক নিউজ।

মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি।। যশোরের মনিরামপুর ভূমি অফিসের দুইজন কর্মচারীর দায়িত্ব পালনে অবহেলা ও ঘুষ বাণিজ্যের ফাদে পড়ে দীর্ঘদিন ধরে মিস মামলার জট বাঁধার অভিযোগ রয়েছে। ফলে সেবা গ্রহীতারা পড়ে মহাবিপাকে। বিষয়টি জানাজানি হবার পর সদ্য যোগদানকারী এসি ল্যান্ডের হস্তক্ষেপে বিতর্কিত সেই দুই কর্মচারীর দপ্তর রদবদল করাসহ নান্দনিক উদ্যোগের ফলে সেই জট খুলতে শুরু করেছে। এসিল্যান্ডের প্রত্যাশা জমে থাকা সহ¯্রাধিক মিস মামলা আগামি দুই মাসের মধ্যে নিরসন করার। আর এ খবরে ভূক্তভোগীদের মাঝে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে।

জানাযায়, মনিরামপুর উপজেলার ১৭ টি ইউনিয়ন এবং একটি পৌরসভার জমির নাম পত্তন এবং মিস মামলার নিস্পত্তি হয়ে থাকে উপজেলা ভূমি অফিসে। মিস মামলার জন্য সহকারি কমিশনার(ভূমি) বরাবর সেবা গ্রহীতাদের লিখিত আবেদন করতে হয়। আবেদনের ওপর ২০ টাকার কোর্ট ফিসের রাজস্ব ষ্ট্যাম্প লাগাতে হয়। সেবাগ্রহীতাদের এ আবেদন জমা দিতে হতো অফিসের প্রধান সহকারি কাম হিসাব রক্ষক ইফসুফ আলীর নিকট। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে ইফসুফ আলী এবং নৈশ্য প্রহরী আসাদুজ্জামান জোগসাজস করে প্রতি মিস মামলা বাবদ এক হাজার টাকা উৎকোচ আদায় করে আবেদন এন্ট্রি করতেন। যারা তাদের উৎকোচ না দিতেন তাদের আবেদন এন্ট্রি করা হতোনা। ফলে এন্ট্রি না করা আবেদনের সংখ্যা দিন দিন বাড়তে থাকে। উপজেলার টুনিয়াঘরা গ্রামের কৃষক আবদুর রাজ্জাক মোড়ল জমির নামপত্তনে ভূল হওয়ায় তিনি ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর মিস মামলার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে ইউসুফকে উৎকোচ না দেওয়ায় তার আবেদনটি এন্ট্রি করা হয়নি। ফলে দীর্ঘদিন ধরে তার সেই আবেদনটি তার ড্রয়ের মধ্যে পড়ে ছিল। আবার হানুয়ার গ্রামের কৃষক হৃদয় হোসেনের ৬ শতক জমির পর্চায় করিমের পরিবর্তে হয়েছে নরিম। শুধুমাত্র নামের সংশোধনীর জন্য তিনি মিস মামলার আবেদন করেন গত ২৭ ফেব্রæয়ারি। হৃদয়ের অভিযোগ তার আবেদনটিও এন্ট্রি করেনি প্রধান অফিস সহকারি ইউসুফ আলী। আর এ অভিযোগ শুধু রাজ্জাক মোড়ল অথবা হৃদয় হোসেনের নয়। অভিযোগ রয়েছে ইউসুফের টেবিলে এ ধরনের সহ¯্রাধিক আবেদন পড়ে ছিল। ফলে সেবা গ্রহীতাদের মধ্যে এ নিয়ে দেখা দেয় চরম অসন্তোষ। বিষয়টি জানাজানি হলে সদ্য যোগদানকারী সহকারি কমিশনার(ভূমি) মাসুদুর রহমান তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে বিতর্কিত দুই কর্মচারী ইউসুফ আলী এবং নৈশ্য প্রহরী আসাদুজ্জামানের দায়িত্ব রদবদল করেন এবং মিস মামলার জট কমাতে গ্রহন করেন বেশ কয়েকটি নান্দনিক উদ্যোগ। তবে উৎকোচ আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান অফিস সহকারি ইউসুফ আলী জানান, জমে থাকা মিস মামলার আবেদনে অধিকাংশ ভূল থাকায় এমনটি হয়েছে। জানাযায়, অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ১২ নভেম্বর ইউসুফের পরিবর্তে নতুন করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সার্টিফিকেট সহকারি আলমগীর হোসেন ও মহাসিনা খাতুন তন্বিকে।এসিল্যান্ড মাসুদুর রহমান জানান, জমে থাকা পুরাতন সহ¯্রাধীক মিস মামলা নিষ্পত্তি অগ্রাধীকার দিয়ে প্রতি বুধবার বিশেষ শুনানী করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে দুইশত মামলা নিস্পত্তি করা হয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন বাকী মামলাসমুহ আগামি দুই মাসের মধ্যে নিস্পত্তি করার। তার এই এ নান্দনিক উদ্যোগ গ্রহন করায় সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন: