
মণিরামপুর প্রতিনিধি॥ যশোর মণিরামপুরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জয় পরাজয়ে প্রতিহিংসার জেরে নিক্ষিপ্ত হাত বোমা মোটরসাইকেল ও রাস্তার উপর পড়লেও বিস্ফোরিত হয়নি। এভাবে একটি নয়, পরপর তিনটি বোমা নিক্ষেপ করা হলেও তার একটিও বিস্ফোরিত হয়নি। অথচ হত্যা উদ্দেশ্যে বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে মর্মে থানায় মামলা হয়েছে। ওই মামলায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্মআহ্বায়ক ও তার ছেলেসহ ৭ আসামি জেলহাজতে রয়েছে।
২ মার্চ যশোরের মণিরামপুর উপজেলার মোবারকপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। আসামি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্মআহ্বায়ক আমজেদ হোসেন ও বাদি যুবলীগ নেতা মশিউর রহমান সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচনে মেম্বর পদে প্রতিদ্বন্ধীতা করেছিলেন। নির্বাচনে মশিউর রহমান জয়ী হন। ইউপি নির্বাচনে প্রতদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার ঝাল মেটাতেই এ মিথ্যা মামলা করা হয়েছে বলে আসামি পক্ষসহ স্থানীয় অনেকের দাবি।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন একই গ্রামের আসাদুজ্জামান, মনিরুজ্জামান মনি, আল-আমিন,শফিকুল ইসলাম,রাকিবুল ইসলাম ও নাজমুল খাঁন।
সরেজমিন জানা যায়, মামলার আসামি মনিরুল ইসলাম ইসলাম মনির বয়োবৃদ্ধা মা শাহিদা খাতুন কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, তার ছেলে বাড়ি ফেরার পথে আচমকা ওহাব ধরে নিয়ে মারপিট করতে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ইমরান খান পান্না, যুবলীগ নেতা ইমন খান, শহিদুল ইসলাম এসে তার ছেলেকে বেদম মারপিট করে। পরে মেম্বরকে বোমা মেরেছে বলে তার ছেলেকে পুলিশের কাছে তুলে দেয়।
ছেলে একদিন কাজে না গেলে চুলো জ্বলে না। আজ কয়েকদিন ধরে মনিরুজ্জামানের দুই শিশু সন্তান ছামিয়া (৮) ও শামীমসহ (১০) তারা অর্ধাহারে-অনাহারে দিনাতিপাত করছে। মনির স্ত্রী দাবি করেন, তার স্বামী মেম্বর নির্বাচনে আমজেদের পক্ষে পোস্টার সাটাতো (টাঙ্গানো) বলে বোমা মারা নাটক সাজিয়ে তার স্বামীকে ফাঁসানো হয়েছে।
উপজেলার চালুয়াহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্মআহ্বায়ক মোবারকপুর গ্রামের আমজেদ হোসেন এবং একই গ্রামের মশিউর রহমান মেম্বর পদে প্রতিদ্বন্ধীতা করেন। নির্বাচনে দুই প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীর বাড়ি পাশাপাশি হওয়ায় গ্রামের ভোটাররাও দুই প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন করেন। মূলতঃ এ নির্বাচনকে ঘিরে দুই প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে প্রতিহিংসা বিরাজ করে আসছিল। এরই জের ধরে এ ধরনের বোমা নিক্ষেপের নাটক সাজানো হয়েছে বলে গ্রামের অনেকেরই দাবি।
গ্রামের ভ্যানচালক রফিকুল ইসলাম, বিলকিস খাতুন, জোবেদা খাতুন, মসজিদের ইমাম আশরাফুলসহ একাধিক নারী-পুরুষ বলেন, বোমা ছুঁড়ে মারলে একটিতো বিস্ফোরিত হবে। মেম্বর মশিউর রহমান প্রথমে ইট মেরেছে বলে জানায়। ঘটনার প্রায় ঘন্টা খানেক পরে প্রচার করা হয় বোমা মেরে মেম্বরকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে।
মামলার বাদি ইউপি মেম্বর মশিউর রহমান বলেন, তিনি এদিন রাত ১১টার দিকে মোটরসাইকেলযোগে রাজগঞ্জ বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে তার প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী আমজেদ হোসেন তার গতিরোধ করেন। এ সময় আমজেদ হোসেনের হুকুমে তার উপর বোমা হামলা হয়। বোমার আঘাতে তার ডান পায়ের হাটু ও ডান হাতের আঙ্গুলে লেগে ফুলে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় ওই দিন আমজেদ হোসেন ও তার ছেলে নিজের চায়ের দোকানে চা বিক্রি করছিলেন। আমজেদ হোসেনের চায়ের দোকানের পাশের মুদি দোকানি শ্যামল পাল বলেন, ওই ঘটনার রাতে আমজেদ ও তার ছেলে রাকিবুল হোসেন রাত প্রায় ২টা পর্যন্ত দোকানেই ছিলেন ।
মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই লিটন মিয়া জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে অবিস্ফোরিত ৩টি লালটেপ জড়ানো বোমা সাদৃশ্য বস্তু উদ্ধার করেন।
সূত্রে- সমাজের কথা

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: