লেবুগাতী-গোয়ালপাড়া গণপাঠাগারের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ বাড়ি বাড়ি বৃক্ষরোপন কর্মসূচি পালন

মণিরামপুর থেকে।। | প্রকাশিত: ১৩ জুন ২০২৫ ১৬:০০

মণিরামপুর থেকে।।
প্রকাশিত: ১৩ জুন ২০২৫ ১৬:০০

ছবি- লেবুগাতী-গোয়ালপাড়া গণপাঠাগারের সামনে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

মোঃ শাহ্ জালাল।। সোজা কথায় আমরা জানি বৃক্ষরোপন কর্মসূচি হলো গাছ লাগানোর কাজকর্ম। তবে বর্তমানে নির্দিষ্ট একটি দিন নির্ধারণ করে মানুষজন সেজেগুজে এসে সেইদিন কিছু গাছ লাগায় এবং গাছে পানি দেয়। কিছুদিন পর সেই গাছ ছাগল, গরুতে খেয়ে নেয় বা পানির অভাবে শুকিয়ে মারা যায়। এগুলোও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি নামে পরিচিত। কিন্তু যশোরের মণিরামপুর উপজেলার কাশিম নগর ইউনিয়নের একদল যুবক ও শিক্ষকরা মিলে তৈরি করেছেন ব্যাতিক্রম এক পাঠাগার যে পাঠাগারের নামকরণ করা হয়েছে "লেবুগাতী-গোয়ালপাড়া গণপাঠাগার"। ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই পাঠাগারে কোন বই না থাকলেও তাদের উদ্দেশ্য "আদর্শ এলাকা গঠন" ও পাঠকের ক্ষুধা নিবারণ। অর্থাৎ পাঠাগার থেকে কেউ কোন বই না পেলেও ভালো মানের বই কোথায় পাওয়া যায় সেই তথ্য প্রদান এবং এলাকার যেকোন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড এই পাঠাগরে বসেই নির্ধারণ করে কাজ করা হয়।

আজ শুক্রবার ১৩ই জুন ২০২৫ খ্রি: লেবুগাতী-গোয়ালপাড়া গণপাঠাগারের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ বাড়ি বাড়ি বৃক্ষরোপন কর্মসূচি-২০২৫ পালিত হয়েছে। সকাল নয় টার সময় পাঠাগারের সামনে স্থানীয় জনসাধারণ পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছাত্র এবং শিক্ষক উপস্থিত হয়ে একুশ শতকের শ্রেষ্ঠ বৃক্ষ নিম গাছের ২০০ চারা রোপণ কর্মসূচির ঘোষনা দিয়ে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে রাড়িতে মসজিদ, মন্দির, রাস্তার পাশে এই চারা রোপন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন "লেবুগাতী-গোয়ালপাড়া গণপাঠাগারের" প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য একাধিকবার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত শিক্ষক সায়ফুল আলম, সদস্য আহাদ আলী খান, ইব্রাহীম বাবু, আজাদুর রহমান, হীরা, রনি, সালাম, সাদ্দাম, দেব্রত, কামরুজ্জামান, হাসানুজ্জামান, সুমি, ইসমাইল'সহ এলাকাবাসী।

বৃক্ষরোপন কর্মসূচি শেষে বিশেষ এক সাক্ষাৎকারে শিক্ষক সায়ফুল আলম বলেন‘একটি পূর্ণবয়স্ক বৃক্ষ বছরে যে পরিমাণ অক্সিজেন সরবরাহ করে, তা কমপক্ষে ১০ জন পূর্ণবয়স্ক মানুষের বার্ষিক অক্সিজেনের চাহিদা মেটায়। তাই বৃক্ষরোপণ ও এর পরিচর্যা উভয়ই গুরুত্বপূর্ণ। বৃক্ষরোপণের উদ্দেশ্য ও প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে সবাইকে বৃক্ষরোপণ ও এর পরিচর্যা করতে হবে। এতে মানবজাতি ও অন্যান্য প্রাণির বৃহত্তর কল্যাণ সাধিত হবে। প্রাণখুলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারবে সবাই। আমরা আমাদের পাঠাগারের মাধ্যমে ২০০৭ সাল থেকে এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করে আসছি। শুধু কর্মসূচি পালন না আমরা বাড়ি বাড়ি যেয়ে পাঠাগারের সদস্য রা খোঁজ খরব নিয়ে থাকি আমাদ রোপন কৃত গাছটি বেঁচে আছে কি না এবং যে গাছগুলো রাস্তার ধারে রোপণ করা হয় সেই সব গাছের আগাছাও আমরা পরিষ্কার করে দিয়ে থাকি। এবার দিয়ে আমরা এই দু'বার নিম গাছের চারা রোপন করছি এবং ধারাবাহিকভাবে বহুল ফল ও বনজ উদ্ভিদ রোপন করেছি।' তিনি আরও জানান ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগটি এরই মধ্যে এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছে।'

পাঠাগারের আরেক সদস্য খুলনা মেডিক্যালের শিক্ষার্থী সুমি বলেন, ‘বৃক্ষরোপণে সবার আগে চাই আন্তরিকতা। 'গাছ লাগান, পরিবেশ বাঁচান' বললে বৃক্ষরোপণের দায়টা সুকৌশলে অন্যের কাঁধে ঠেলে দেওয়া হয়। সত্যি সত্যি পৃথিবীকে বাঁচাতে চাইলে আমাদের মনের কথা হোক: 'আসুন, গাছ লাগাই, পরিবেশ বাঁচাই'। পরিবেশ যার মাধ্যমে বাঁচবে, সে হলো বৃক্ষ। তাই বৃক্ষকে বাঁচানোর জন্যই 'আমাদের' এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ।'




আপনার মূল্যবান মতামত দিন: