ছোট গল্প- জিরাফের ভালোবাসা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২৯ অক্টোবর ২০২১ ০৬:২৯

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৯ অক্টোবর ২০২১ ০৬:২৯

ছবি সমসাময়িক

জিএম মুছা।।

জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন চিড়িয়াখানায় খাঁচায় বন্দী যতসব পশুপাখিদের দেখাশোনা ও বন্ধুত্ব করে। মারিও নামের মানুষটি চিড়িয়াখানা সকল পশুপাখিদের প্রাণের চেয়ে ভালবাসতেন, ওদেরকে অনেক আপন করে নিয়েছিলেন মারিও চিড়িয়াখানার সকল পশুপাখিদের সঙ্গে গড়ে তোলেন নিবিড় বন্ধুত্ব ভালোবাসার বন্ধন। ৫৪ বছর বয়স্ক মারিও হঠাৎ মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে পড়লেন, পশুপ্রেমী মারি ওর জীবনটা অনেকটাই যেন বদলে গেল, ওষুধ- ইনজেকশন আর হাসপাতালের বিছানায় বন্দিদশা, প্রতিনিয়ত ক্যান্সারের জীবাণু থাকে কুরে কুরে খাচ্ছিলো দুর্বিষহ সে যন্ত্রণা। হাসপাতালে হাসপাতালের ডাক্তারদের কাছে মারিও বহুবার আবদার করেছেন,জীবনের অন্তিম সময় একবার সে যেতে চায় তার পুরোনো ঠিকানা, চিড়িয়াখানায় তার প্রিয় পশু পাখিদের মাঝে তাদের খুব দেখতে ইচ্ছে করছে মারিও র, শেষ ইচ্ছার কথা মৃত্যুর আগে একবার ঘুরে আসতে চায় তার প্রিয় চিড়িয়াখানা,এ খবর পৌঁছে গেলো-"অ্যাম্বুলেন্স উইশ ফাউন্ডেশন"এর কাছে। মানুষের জীবনের শেষ ইচ্ছে পূরণ করাই এই সংগঠনের কাজ। মারি'ওর শেষ ইচ্ছার কথা শুনে তোড়জোড় শুরু করে দিলেন সংগঠনের কর্মীরা তাদের সেই এম্বুলেন্সে ছিলো বিশেষ ব্যবস্থা, বিশাল খোলা জানালা দিয়ে দুচোখ ভরে চারপাশে দেখা যায়। সেই আম্বুলান্স এ করে নিয়ে গেল চিড়িয়াখানায় সংগঠনের কর্মীরা মারি ওকে, নড়াচড়া করার মতো একদম ক্ষমতা নেই তার গায়ের চাদর দিয়ে বেল্ট চেপে বিছানার সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে দিয়েছে মারিওর অসুস্থ্য শরীর। সমস্ত চিড়িয়াখানার সকল পশুপাখিদের খাঁচার সামনে নিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে কর্মীরা মারিওকে দেখাচ্ছিলো, চিড়িয়াখানার পশু পাখিদের ঐ সময় অসুস্থ্য পশুপ্রেমী মারিওকে বেশ বিমর্ষ বিচিলিত এবং অশ্রুসজল দেখা যাচ্ছিল, দু-চোখ দিয়ে প্রিয় চিড়িয়াখানার চিরপরিচিত সব প্রিয় পশুপাখিদের ভালোবাসা আর বন্ধুত্বের কথা ভেবে তার দু'চোখ দিয়ে ভালোবাসার অশ্রু গড়িয়ে পড়ছিল। এরপর মারিওকে জিরাফের খাঁচার কাছে নিয়ে গেল তারা এগিয়ে এল একটি গ্রাফ তখন ঘটে গেল এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। জিরাফ টি ঠিকই চিনে ফেলল তাদের পুরনো সাথী বন্ধু মারি ওকে, জিরাফের যেন একদম কোনো ভুল হয়নি, সে ঠিক বুঝতে পারল তাদের পুরনো সাথী বন্ধু মারিও ভালো নেই, সে মারাত্মক অসুস্থ্য হয়তো আর সে বাঁচবে না বন্ধুকে অন্তিম শয্যায় শায়িত দেখে জিরাফের দু'চোখ দিয়ে তাদের বন্ধু, সাথী মারিও র জন্য ভালোবাসার অশ্রু গড়িয়ে পড়ছিল, একসময় জিরাফটি বন্ধু মারিওর সমস্ত গায়ে মুখ বুলিয়ে দিলো, শেষবারের মতো তার মুখে চুমু খেলো, মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত মারিও তার প্রিয় প্রানী, সাথী বন্ধুর আদরে অনেকটা উৎফুল্ল চোখে তার দিকে তাকিয়ে রইলো তখন মারি ওর মুখটা আনন্দে ঝলমল করে উঠল।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: