অধ্যাপক অরুণ বর্মন এর কচিঁ কাঁচার সন্দেশ ছড়া গ্রন্থের আলোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৪:৪০

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৪:৪০

ছবি সমসাময়িক

জিএম মুছা।।

কচিকাঁচা সোনামণি/সন্দেশ সামনে পেলে/হাপুস-হুপুস -গাপুস -গুপুস/শব্দ শুধু গেলে (কচিঁকাচার সন্দেশ) অরুণ বর্মন যখন কচিকাঁচা সোনামণিদের কাছে টানবার একটি চমৎকার উপলব্ধি দিয়ে ছড়া /কবিতা টির চরণ সৃষ্টি করেন তখন লেখকের মনের অভিব্যক্তি অত্যন্ত স্পষ্টভাবে এই চরণ গুলোর মধ্যে ফুটে ওঠে, অরুন বর্মণ পেশায় একজন শিক্ষক মানুষ গড়ার কারিগর, কচিকাচাদের সেই আদলে কাছে টেনে তাদের রসনা তৃপ্তি ঘটানোর লক্ষ্যে তার যে প্রয়াস সত্যিকার অর্থে আমাদেরকে অনেকটা ভাবিয়ে তোলে, অরুন বর্মণ মনে হয়েছে একজন সাদা মনের মানুষ সাহিত্য চর্চা করতে এসে সোজাসাপ্টা সাদামাটা কথা বলতে অভ্যস্ত তার কবিতার মধ্যে তিনি কোথাও ভনিতা না রেখে সাদামাটা শব্দের গাঁথুনি ছন্দ ও অলংকার উপমা উৎপ্রেক্ষার তোয়াক্কা না করে নিজের মত পথ বেছে নিয়েছেন, অরুণ বর্মন এর কচিকাঁচার সন্দেশ বইটির নামকরণ করা হয়েছে "কচিঁকাঁচার সন্দেশ"বইয়ের প্রথম ছড়া/কবিতাটির শিরোনাম দিয়েই । আর এই ছড়া-কবিতা গ্রন্থটি সর্বমোট ৫৮ টি ছড়া-কবিতা দিয়ে সাজানো হয়েছে, যার প্রত্যেকটি ছড়া/কবিতার পরোতে পরোতে প্রতি ছত্রে- ছত্রে একদিকে যেমন কবির দেশ প্রেম, মাতৃভক্তি অন্যদিকে তেমনি ছোট সোনামণিদের তার এই ছড়া/ কবিতার প্রতি আকর্ষণ করার একটি কঠিন ব্রত নিয়েই কাজ করে গেছেন, যদিও প্রকাশক সব ছড়া -কবিতা কে কবিতা বলেছেন, তবে আমি বলব এই গ্রন্থটি কে সবগুলা কবিতা নয় কিছু কিছু কবিতা কিছু কিছু ছড়ায় সন্নিবেশিত করা হয়েছে, এখানে লেখক তাঁর পরিপক্কতার বেশ খানিকটা মননশীলতা পরিচয় দিয়েছেন।লেখক নিজেই বইটির ভূমিকায় লিখেছেন কাব্যগ্রন্থ প্রকাশক সেটি কে সমর্থন করেছেন, কিন্তু আমি তাদের সঙ্গে একমত না হয়ে একটু অন্য পথে যেয়ে গ্রন্থটি কে কব্যগ্রন্থ না বলব ছড়া কবিতা বলবো, সেটি আমার সঙ্গে একমত নাও হতে পারেন অনেকে তবে এটি আমার নিজস্ব ধ্যান-ধারণা, আরেকটি বিষয় না বললে নয় অরুন বর্মণ কে আমি এই মুহূর্তে কবি হিসেবে আখ্যায়িত করতে পারবোনা কারণ সে ক্ষমতা আমার নেই , আমি একজন লেখককে কবি বলার কে? তবে হ্যাঁ এটি অত্যন্ত বলিষ্ঠভাবে বলা যায় অরুণ বর্মন লেখক হিসেবে গ্রন্থের মধ্যে ছড়া কবিতা গুলি লিপিবদ্ধ করেছেন সেগুলো যদি কাল বিচারে টিকে থাকে তবে কাল তাকে কবি হিসেবে আখ্যায়িত করবে, এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো কবি জীবনানন্দ দাশ বলেছেন, "সকলে কবি নয় কেউ কেউ কবি' অরুণ বর্মন যখন লেখেন: আমরা শিশু ভবিষ্যতের সম্ভাবনাময়/ তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেবো/ সকল বাধা ভয় । (আমরা করব জয়) লেখক অরুন বর্মণ শিশুদেরকে আগামী দিনের মেসেজ দিয়ে তাদেরকে নিজস্ব শক্তি বলে বলিয়ান করে উদ্বুদ্ধ করার একটি চেষ্টা চালিয়েছে, এটি তার ছড়া কবিতার মধ্যে দারুন একটি মেসেজ বহন করে। পরিশেষে শুধু এটুকুই বলবো লেখক অরুন বর্মণ এগিয়ে যাবেন লিখে যাবেন তার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন, অনেক সম্ভাবনা তার ভিতরে উঁকি দিয়ে যাচ্ছে এটি আমরা লক্ষ্য করেছি, তার জন্য অনেক শুভকামনা রইল, অরুণ বর্মন এর সৃষ্টি এই গ্রন্থের প্রত্যেকটি কবিতার মধ্যে বর্তমান সময়ের একটি প্রেক্ষাপট দেশ প্রেম যুগ যন্ত্রণা অত্যন্ত প্রবল ভাবে ফুটে উঠেছে, প্রত্যেকটি কবিতার মধ্যে শিশু-কিশোরদে আগামী দিনের ভবিষ্যৎ হিসেবে দাঁড় করানোর জন্য, তিনি তার প্রত্যেকটি ছড়া কবিতার মধ্যে নতুন নতুন মেসেজ নতুন নতুন ছবি অংকন করার চেষ্টা করেছেন ,যা আমার সহ পাঠকমনে সত্যিকার অর্থে নাড়া দেবে বলে আমার মনে হয়েছে, তেমনি ভাবে শিশু-কিশোরদের অনেকটা আকর্ষণ করবে কাছে টানবে এ বিশ্বাস আমার, সেক্ষেত্রে লেখক অরুন বর্মন, তার বইয়ের নামকরণে ,ছড়া কবিতা লিখে অনেকটা সার্থক বলে মনে হয়েছে। ৪ ফর্মার ৬৪ পৃষ্ঠার চার রঙা রঙ্গিন বোর্ড বাইন্ডিং সাদা ৯০ গোলোজি পেজে চমৎকার বোর্ড বাইন্ডিং সুন্দর মননশীল প্রচ্ছদ, সবদিক দিয়েই লেখক অরুণ কুমার সার্থক, বইটি সংগ্রহে রাখার জন্য পাঠকদের প্রতি অনুরোধ রইল। বইটির প্রথম প্রকাশ একুশে গ্রন্থমেলা ২০২১, প্রকাশক পলক রায় আনন্য প্রকাশন,ঢাকা- ১১০০। যার একমাত্র পরিবেশক নবযুগ প্রকাশনী, অনলাইন পরিবেশক, রকমারি ডট কম বই বাজার ডট কম । বইটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে দুই শত টাকা মাত্র।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: