
ছবি সমসাময়িক
জিএম মুছা।।
ছোট বন্ধুরা তোমরা নিশ্চয়ই জেলখানার কথা শুনেছ, সেখানে আটক রাখা হয় বড় বড় সব অপরাধীদের তাছাড়া ছোটখাটো অনেক অপরাধের আসামী সহ সবরকম অপরাধীদের জেলখানায় আবদ্ধ করে তাদের বিচার করা হয়, এবং বিচার শেষে যে সকল অপরাধীরা নির্দোষ প্রমাণিত হয় তাদেরকে ,তাদের অপরাধের দায় হতে মুক্তি দেয়া হয় অর্থাৎ খালাস প্রদান করে করা হয় এবং জেলখানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয়। অন্যদিকে আবার যেসকল অপরাধীদের অপরাধ প্রমাণিত হয় বিচারের শেষে তাদেরকে অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনা করে বিজ্ঞ বিচারক স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী কারাদণ্ড প্রদান করে থাকেন। যেমন চুরি ,ডাকাতি, ছিনতাই ও গুমের মত বিভিন্ন রককম অপরাধীকে জেলখানায় তারা তাদের নিজও নিজও অপরাধ অপকর্মের সাজা ভোগ করে কারাগারে অর্থাৎ জেলখানায় কারাবাস করে থাকে। সুতরাং এই গল্পটি পড়ে তোমরা ইউক্রেনের জেলখানার একটি খুনের আসামির মায়ের দুঃসাহসী কর্মের গল্প জানতে পারবে বেশ কিছুদিন আগের কথা ভারতের "আনন্দবাজার পত্রিকায়" 'ছেলেকে জেল থেকে বার করতে ৩৫ ফুট সুড়ঙ্গ খুড়লো মা' শিরোনামের একটি খবর ছাপা হলে, সঙ্গে সঙ্গে সে খবর ছড়িয়ে পড়লো এক দেশ থেকে অন্য দেশ, খবরটা জানো ভাইরাল হয়ে পড়লো, সে খবর ছাপা হলো আমাদের বাংলাদেশের স্থানীয় জাতীয় বিভিন্ন পত্র পত্রিকাতে এমনকি যশোরের "দৈনিক লোকসমাজ" ৬ আগস্ট ২০২০ সালে ছাপা হলো সে খবর। তোমরা হয়তো বড়দের মুখে শুনেছো, বই-পুস্তকে পড়েছো বা সিনেমাতেও দেখে থাকবে হয়তো, জেল ভেঙে বন্দি পালানো নিয়ে বিশ্বে অনেক সিনেমার গল্প তৈরি হয়েছে, কিন্তু বাস্তবে এক দুঃসাহসী মাতা তার জেলবন্দি খুনি আসামি ছেলের জন্য যা করেছে তা সত্যিই অবাক করা কান্ড, এবং তা যেন সিনেমার গল্পের চেয়েও কোন অংশে কম নয় । ইউক্রেনের এক যুবককে খুনের দায়ে বিচারক তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন, জ্যাপোরিঝিয়া এলাকার একটি জেলে তার সাজা খাটতে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু একান্ন বছর বয়স্ক ওই যুবকের মা, আইনি লড়াইয়ে হেরে গিয়ে বেআইনি ভাবে যেকোনো মূল্যে নিজের ছেলেকে জেলখানা থেকে বের করে আনার জন্য পণ করলেন, যে কাজ সেই কথা, জেল থেকে ছেলেকে বের করে আনার জন্য মনে মনে একটি ফন্দিও আটলেন এবং একটি পরিকল্পনা করলেন, আটঘাট বেঁধেই তিনি কাজে নেমে পড়লেন। পরিকল্পনা মোতাবেক ওই যুবকের মা জেলখানার পাশে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকা শুরু করলেন, সেইসঙ্গে মাটি খোঁড়ার জন্য বেলচা, কোদাল ,শাবল অন্যান্য যন্ত্রপাতি জোগাড় করলেন এবং জেলখানার পাশে একটি মাঠ থেকে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার পরিকল্পনা করলেন, রোজ রাতে তিনি ভাড়া বাড়ি থেকে বেরিয়ে ওই মাঠের কাছে যেতেন, আশেপাশে কেউ যাতে কোন কিছু বুঝতে না পারেন সেজন্য তিনি শব্দবিহীন একটি স্কুটার জোগাড় করলেন, সেই স্কুটার চালিয়ে প্রতিদিন রাতে পৌঁছে যেতেন মাঠে, শুরু করতেন সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ, প্রতিদিন একটু একটু করে কঠোর পরিশ্রম করে প্রায় ৩৫ ফুট সুড়ঙ্গ খুঁড়ে ফেলেছিলেন, যা প্রায়ই জেলের ভিতরে পৌঁছে গিয়েছিলেন, কিন্তু বিধি বাম, তার ছেলেকে বের করে আনার আগেই সব পরিকল্পনা ভেস্তে গেল সব কিছু ফাঁস হয়ে গেল জেনে গেল জেল কর্তৃপক্ষ ধরা পড়ে গেলেন তিনি ( মা), যা হওয়ার তাই হল প্রথমে থানা পুলিশ, তারপর আদালত পর্যন্ত গড়ায়, বিজ্ঞ আদালত ওই মহিলাকে অবশেষে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দিলেন।

undefined
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: