মণিরামপুর ইউপিতে কাল ভোট গ্রহণ, বিদ্রোহী আতঙ্কে নৌকা, নাশকতা আতঙ্কে ভোটাররা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর ২০২১ ০৭:০৮

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর ২০২১ ০৭:০৮

ছবি সমসাময়িক

ছবি সমসাময়িক

মণিরামপুর প্রতিনিধি।।

যশোরের মণিরামপুরে ১৬টি ইউনিয়নে আগামীকাল ২৮ নভেম্বর রোববার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এসব ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নৌকার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। সাধারণ ভোটারদের ধারণা, সুষ্ঠু ভোট হলে বেশিরভাগ ইউনিয়নে পাল্টে যেতে পারে নৌকার ভোটের হিসাব-নিকাশ। কেননা উপজেলার ১৩ ইউপিতে নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন ১৭ জন। ফলে ১৭ বিদ্রোহী প্রার্থীসহ শতাধিক নেতাকর্মীকে দল থেকে বহিস্কার করেও বিদ্রোহ দমন করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে বিদ্রোহী দমনে জেলা ছাত্রলীগ বহিষ্কার করেছেন মণিরামপুর উপজেলার একাধিক ছাত্রলীগের নেতা কর্মীকে তাতেই কোন লাভ হয়নি বরং বহিস্কারের পর বিদ্রোহ আরও প্রবল আকার ধারণ করেছে। ভোজগাতী ইউপিতে নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক আসমাতুন্নেছা বৃহস্পতিবার যশোর প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসন তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এবং গত শুক্রবার রাতে ঐ ইউপির ৮নং ওয়ার্ডের নৌকার অফিস পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তবে ভোজগাতী ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি আনিচুর রহমান টজু এ অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, নেতাকর্মীদের বুঝিয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে নৌকার পক্ষে কাজ করার জন্য। বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা (বহিস্কৃত) বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুর রাজ্জাক বলেন, সদস্যপদ থেকে বহিস্কার করেও তার বিজয় ঠেকানো যাবে না। একই কথা বলেন ঐ ইউনিয়নের অপর বিদ্রোহী প্রার্থী ইউপি আওয়ামী লীগের বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মোড়ল। উপজেলার শ্যামকুড় ইউনিয়নে নৌকা প্রতিকের বিরুদ্ধে কোন প্রর্থী না থাকায় ঐ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ভোট গ্রহণ ছাড়া ভোট হবে মেম্বার ও মহিলা মেম্বার প্রার্থীদের। অপরদিকে ভোটের আগেই নিশ্চিত নৌকা বিজয়ী প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আলমগীর হোসেন ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে তার মনোনীত মেম্বার প্রার্থীদের ভোট চাওয়ায় ইউনিয়নের অন্য মেম্বর প্রার্থীগন ও ভোটাররা হেজিটেশন ও নাশকতার আতঙ্কে ভুগছেন। যদিও প্রশাসনের তরফ থেকে বলা হচ্ছে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে কোন নাশকতাকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না। গত বৃহস্পতিবার মণিরামপুর সদর ইউনিয়নের ৩নং-(পাতন-দেবিদাসপুর আংশিক) ওয়ার্ডের স্লুইসগেট এলাকায় আওয়ামীলীগের প্রার্থী আলহাজ্জ্ব এয়াকুব আলী গাজীর নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী আঞ্চলিক অফিসে অগ্নি সংযোগ ও ভাঙচুর করেছে দূর্বৃত্তরা। এতে অফিসে বঙ্গবন্ধু, আওয়ামীলীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসহ নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর ছবি, ব্যানার ও পোষ্টার সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। মশ্বিমনগর ইউনিয়নের নৌকার মাঝি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন জানান আমার ইউপিতে একাধিক ভোট কেন্দ্র রয়েছে ঝুকিপূর্ণ। যদি ঝুঁকিমুক্ত অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় তাহলে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত হবে। নেহালপুর আওয়ামী লীগের বহিস্কৃত সভাপতি রুহুল আমিন ও সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামানের প্রশ্ন- গণবিচ্ছিন্ন ব্যক্তিকে নৌকার প্রার্থী করা হয়েছে। তাতে নৌকার বিজয় কীভাবে সুনিশ্চিত হবে? একই কথা বলছেন বাকি ইউনিয়নের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ফারুক হোসেন জানান, নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থীদের অনেক চেষ্টা করা হয়েছে বোঝানোর। কিন্তু তারা দলের সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছে। ফলে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ১৭ বিদ্রোহী ছাড়াও শতাধিক নেতাকর্মীকে বহিস্কার করা হয়েছে।


undefined

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: