
জনভোগান্তির কথা ভেবে ভ্যানগাড়ি,বাইসাইকেল ও মোটরবাইকের চাকায় সহজেই হাওয়া দিতে নিজস্ব প্রযুক্তিতে হ্যান্ড পাম্পার তৈরি করেছেন মণিরামপুরের সৃষ্টিশীল গুণিজন তপন বিশ্বাস পবন। প্রবীন রাজনীতিক ও উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ নেতা তপন বিশ্বাস পবন মণিরামপুর পৌর এলাকার তাহেরপুর গ্রামে নিজ বাড়ীতে গড়ে তুলেছেন মমতা হস্তশিল্প নামের একটি প্রতিষ্ঠান। করোনাকালীন সময়ে নিজ প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব প্রযুক্তিতে তিনি বেশ সাধনা করেই ুদ্র যানবহন বিশেষ করে ভ্যানগাড়ী,বাইসাইকেল ও মোটরবাইকের চাকায় পাম্প (হাওয়া) দেবার কাজে ব্যবহারের জন্য তৈরি করতে সম হয়েছেন হ্যান্ড পাম্পার। এটি দামে সস্তা, সাইজে ছোট ও সহজে বহনযোগ্য। গত শুক্রবার (০৯ সেপ্টেম্বর) সকালে ঘরোয়া পরিবেশে এই যন্ত্রটি মার্কেটিংয়ের জন্য শুভ উদ্বোধন করা হয়। স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান আসাদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ফিতা কেটে এটির শুভ উদ্বোধন করেন। এ সময় হ্যান্ড পাম্পার যন্ত্রটির উদ্ভাবক তপন বিশ্বাস পবন, সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) মণিরামপুর উপজেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোঃ আব্বাস উদ্দীন, আওয়ামী লীগ নেতা আকরাম হোসেন, মণিরামপুর বাজারের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান, বাবুল আকতার,ফারুক হোসেন,মাওঃ আব্দুল গফ্ফার,পরেশ বিশ^াস প্রমুখ ব্যক্তিগণ উপস্থিত ছিলেন। মমতা হস্তশিল্প প্রতিষ্ঠানের পরিচালক তপন বিশ্বাস পবন জানান, তার ভাই পরেশ বিশ্বাস মালায়েশিয়ায় প্রবাসকালীন সময়ে বছর দশেক আগে সেদেশ থেকে বাইসাইকেলের চাকায় হাওয়া দেবার কাজে একটি ছোট হ্যান্ড পাম্পার কিনে বাড়ীতে পাঠান। ওই যন্ত্রটি বছর দুই ব্যবহারের পর অকেজো হয়ে পড়লে এটি মেরামতের চেষ্টা করে যন্ত্রাংশ পাওয়া না যাওয়ায় সেটি মেরামত করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। যার ফলে ওই যন্ত্রটি কীভাবে তৈরি করা যায় সেই ভাবনা থেকে দীর্ঘ গবেষণা চালিয়ে এটি তৈরির উদ্যোগ নেন তিনি। তিনি প্রথমে কাঠ দিয়ে এটি নির্মাণ করেন। কিন্তু সেটি টেকসই না হওয়ায় রাবার দিয়ে এটি তৈরি করে ব্যবহারে ভাল সফলতা পাননি। এরপর তিনি নিবিড় গবেষণা করে প্লাস্টিকের পাইপসহ ১১টি যন্ত্রাংশ নিজের কারখানায় তৈরি করে সম্পুর্ণ নিজস্ব প্রযুক্তিতে প্রায় দুই বছর পর তিনি এটি তৈরিতে সফল হয়েছেন। এ েেত্র তিনি শিশুদের বাঁশের পটকা ও অনুষ্ঠানে রং ছিটানোর পিচকরি মেসিনের কারু কাজকে অনুসরন করেছেন। হ্যাক্সবেøট, হ্যান্ডড্রিল ও হাত করাতের সাহায্যে বাজার থেকে কেনা প্লাস্টিকের পাইপ-নল, পাম্পার পিন,ভ্যানগাড়ির স্পোক,নজেল প্রভৃতি মালামাল দিয়ে নিজের প্রতিষ্ঠানে দক্ষ কারিগর দিয়ে হ্যান্ডার পাম্পার তৈরি করা হচ্ছে জানালেন হ্যান্ড পম্পারের উদ্ভাবক পবন বিশ^াস। তিনি আরও জানান, একটি হ্যান্ড পাম্পারের বিক্রয়মূল্য নির্ধারন করা হয়েছে ২৬০টাকা। যা খুবই সুলভ মূল্য বলে দাবি করেন তিনি। তা ছাড়া আকারে ছোট এই যন্ত্রটি যানবহনের সাথে সহজে বহন করা যায়। স্কুল পড়–য়া ছাত্ররা এটি বাইসাইকেল ও ফুটবলে সহজে হাওয়া দিতে পারবে। তা ছাড়া সহজে বহনযোগ্য বিবেচনায় এটি ভ্যানগাড়ি, বাইকেল ও মোটরসাইকেল চালকগণ সাথে রাখলে যে কোন সময় হাওয়া দিতে পারবে। এতে করে জনভোগান্তি লাঘব হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। মণিরামপুর বাজারের ডলি সাইকেল স্টোরের মালিক মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের দেশে এ ধরনের হ্যান্ড পাম্পার ইতিপূর্বে আর কেউ তৈরি করেনি। এটি টেকসই হলে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি বলে এর ব্যবহার বাড়বে। এটি হতে পারে সবার কাছে পপুলার। স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, সৃষ্টিশীল মানুষ পবন বিশ^াস সম্পূর্ণ নিজস্ব উদ্যোগে জনভোগান্তি লাঘবে সুন্দর হ্যান্ড পাম্পার সৃষ্টি করাই তাকে সাধুবাদ জানাই। তিনি এটির মার্কেটিংয়ের আগে কতৃপক্ষের অনুমোদন নেওয়ার কথা বলেন। পাশাপাশি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই যন্ত্রটির নির্মাণের প্রসার ঘটবে এবং একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলে বহু বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: