
মণিরামপুর কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে গতকাল ৩ই আগষ্ট নিজের অনিবন্ধিত মোটরসাইকেল আটক করায় পুলিশের ওপর চড়াও হন কাউন্সিলর আইয়ুব আলী সহ ভুক্তভোগী জনসাধারণ।
যশোরের মণিরামপুর পৌর শহরের ওয়ার্ড কাউন্সিলরের অনিবন্ধিত মোটরসাইকেল ধরা নিয়ে ট্রাফিক পুলিশ ওরা জনতার মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। আজ দুপুরে পৌর শহরের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে এমন ঘটনা ঘটে। এরপর থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জেলা ট্রাফিক পুলিশের দাবি,গত বুধবার সকাল থেকে তাঁরা ১১ সদস্য ২-৩ দলে ভাগ হয়ে মণিরামপুর পৌর শহরের অবৈধ মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছিলেন। দুপুর ১টার দিকে জরুরি কাজে নম্বর বিহীন একটি মোটরসাইকেল চালিয়ে কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে আসে এক যুবক। ওই যুবকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও হেলমেট ছিল না। গাড়িটি আটক করে থানায় নিলে আইয়ুব পাটোয়ারি নামে মণিরামপুর পৌরসভার কাউন্সিলর তাঁদের সঙ্গে এসে বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান।
এ বিষয়ে কাউন্সিলর আইয়ুব পাটোয়ারি বলেন, ‘দুপুরে আমার ব্যবহৃত অ্যাপাচি মডেলের মোটরসাইকেল নিয়ে বিজয়রামপুরের বাড়ি থেকে বাজারে আসে আমার ভাইপো টগর। সে কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে আসলে পুলিশ মোটরসাইকেলটি আটক করে। এরপর টগর আমাকে মোবাইলে বিষয়টি জানায়। আমি মোবাইল পুলিশের কাছে দিতে বলি। তখন আমার পরিচয় পেয়ে পুলিশ সংযোগ কেটে দেন। পরে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশের কাছে কারণ জানতে চাই।’
কাউন্সিলর আরও বলেন, ‘আমার গাড়ির কাগজপত্র না থাকায় পুলিশ মামলা করতে পারে। কিন্তু আমার গাড়ি তাঁরা আটক করে থানায় নিল কেন সেটা আমি পুলিশের কাছে জানতে চেয়েছি।’
স্থানীয়রা বলছেন, প্রায়ই মণিরামপুরে মোটরসাইকেল ধরতে আসে ট্রাফিক পুলিশ অতিরিক্ত টাকা লোভে। গাড়ির কাগজপত্র চাওয়ার আগে তারা চাবি কেড়ে নেয়। কাগজপত্র দেখানোর সময় না দিয়ে অনেক সময় মামলা লিখে ফেলে। এমনকি অতিরিক্ত টাকা ঘুষ এবং বড় বাবাদের ফোন পেলে বাইক ছেড়ে দেয়। এতে অহেতুক মানুষ হয়রানির শিকার হন। এ ছাড়া ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে সাদা পোশাকের লোক থাকে তারা মাঝে মাঝে চালকদের মারপিট করে থাকে।
এদিকে বুধবার দুপুরে কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে ট্রাফিক পুলিশ ও জনতার উত্তেজনার পর ওই জায়গা ছেড়ে দেয় পুলিশ। পরে বিকেলে তাঁদের থানা মোড়ে অভিযান চালাতে দেখা যায়।
ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট উপপরিদর্শক (এসআই) ইমরান হোসেন বলেন, ‘বুধবার বিকেল পর্যন্ত আমরা মণিরামপুরে ৪২টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করেছি। ৪টি মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছি।’
এসআই বলেন, আইয়ুব পাটোয়ারির মোটরসাইকেলের কাগজপত্র ছিল না। যে ছেলেটি মোটরসাইকেল চালাচ্ছিল তাঁর ড্রাইভিং লাইসেন্স ও হেলমেট ছিল না। কাগজপত্র না থাকায় মোটরসাইকেলটি আটক করে মনিরামপুর থানায় রাখা হয়েছে।
এসআই ইমরান আরও বলেন, ‘আইয়ুব পাটোয়ারির বাগ্বিতণ্ডার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এরপর থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। তাঁর মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে কোনো মামলা দেওয়া হয়নি। মোটরসাইকেল ছাড়াতে হলে কাউন্সিলরকে আগে গাড়ির নিবন্ধন করতে হবে। সে কাগজপত্র আনার পর চালকের লাইসেন্স ও হেলমেট না থাকায় পৃথক আইনে মামলা দেওয়া হবে।’

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: