ধারাবাহিক একটি গল্প, নাম- গল্পের ফাঁদ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ৩ ডিসেম্বর ২০২১ ২০:১৩

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৩ ডিসেম্বর ২০২১ ২০:১৩

ছবি সমসাময়িক

গল্পের ফাঁদ

খন্ড-১

প্রতিদিন রাতে রিনি অদ্ভুত শব্দ করে। শব্দগুলো ব্যথা পেয়ে করে আবার আনন্দে করে ওর শব্দগুলো শুনলেই বুঝতে পারা যায় । আবার কাকে যেন বলে খুব লাগছে। উফ!!!!ছাড়াও না প্লিজ।।। আসলে অদ্ভুত শব্দটি আর কথা গুলো রিনি বিবাহিত হলে চিন্তার বিষয় ছিলো না তার মা বাবার জন্য। রিনি অবিবাহিত মেয়ে।কলেজ পড়ে। মা বাবার রুমের থেকে একটু দূরত্বে রিনির রুম।তবে একটু জোরে কথা বললে বা শব্দ করলে রিনির মা বাবার রুমে শুনতে পাওয়া যায়। রিনির মা খুব চিন্তিত। কারণ রিনি কি তাদের চোখের আড়ালে বাসায় ছেলে নিয়ে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হচ্ছে। তা ও বাসায়? রিনির মা আজ রাতে না ঘুমিয়ে রিনির রুমের সামনে পাহারা দিচ্ছে। কিন্তু রাত গভীর হতেই কোন এক অজানা খেলায় মেতে উঠলো রিনি।রিনির মা রাবেয়া খুব চিন্তায় পড়ে যায়। রিনি কে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়া নিয়ে জিজ্ঞেস করে কোন লাভ হয়নি।রাবেয়া বলেছিল ঃ রিনি তুই কি আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বাসায় তুর বয়ফ্রেন্ড নিয়ে আসিস? আর নষ্টামি খেলাতে মেতে থাকিস প্রতি রাতে? রিনি বলে ঃ মা তুমি এসব কি বলছো?আমি কারোর সাথে প্রেম অবধি করিনি। আর শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়া তো দূরের কথা। আর যদি এমন কিছু হতো তাহলে সহস্র হোটেল আছে ওইখানে যেতাম। তোমাদের সাথে এক ঘরে থেকে এমন কিছু কল্পনাই করতে পারিনা। রাবেয়া মেয়ে কে অবিশ্বাস করেনি।কারণ সে যা বলছে সব ঠিক কথাই।মেয়ে তো এমন কিছু চাইলে ঘরের বাইরে অনায়াসে করতে পারতো। তাহলে কি হয় প্রতি রাতে রিনির ঘরে।মেয়ের উপর বিশ্বাস থাকলেও সন্দেহ যেন একটু রয়েই যায়।।। তাই রাবেয়া আজ রাতে মেয়ের রুমে লুকিয়ে থাকবে।সন্তানের ভালো মন্দ দেখা মা বাবার কর্তব্য।আর খারাপ কিছু করে থাকলে শাস্তি দিতে হয়। না হয় জীবনে এমন ভুল বারবার করার সম্ভাবনা থাকে। তাই রাবেয়া আজ কে ঠিক রাতে চুরি করে রিমির খাটের নিচে লুকিয়ে পরে । আজ রাতে দেখবে কি হয় এই রুমে তার মেয়ের সাথে।তাদের চোখের আড়ালে। এগুলো ভাবতে থাকে আর অপেক্ষা করতে থাকে। এইভাবে অনেক সময় চলে গেল। আর রাত গভীর হতে থাকে।

খন্ড- ২

তখন রাবেয়া দেখলো, উজ্জ্বল একটা লালচে বৃত্তা কার কি যেন রিনির রুমে প্রবেশ করেছে জানালার ছিদ্র দিয়ে । এই লালচে বৃত্তটির উজ্জ্বলতা আসতে আসতে বেশি হতে লাগলো। আর বৃত্তের আকার ও বড়ো হতে লাগলো। আর এটা যেন লালচে রংয়ের কোন বৃত্ত নয়। এই যেন আগুনের তৈরি একটা বৃত্ত। রাবেয়া স্পষ্ট দেখতে পেল না। তবু মেয়ের জন্য তার কষ্ট হলেও দেখার চেষ্টা করছে। আসলে সন্তান এর জন্য মা বাবা সব কিছু করতে পারে। অবশেষে অস্পষ্ট ভাবে দেখলো লালচে বৃত্তাকার জিনিসটা একটা সুদর্শন যুবকে রুপান্তর হয়ে যাই। রাবেয়ার চোখ জ্বলে উঠে। আর সম্ভব হচ্ছে না তাকিয়ে থাকা। আর চোখ বন্ধ হয়ে আসে। আর সাথে সাথে ঘুম চলে আসে। রাবেয়া গভীর ঘুমে মগ্ন। বেশ কিছু সময় পর রাবেয়ার ঘুম ভেঙ্গে গেলো। আর দেখে ঘুমন্ত অবস্থায় রিনি বাথরুমে গিয়ে গোসল করে। তবে পানি কখন বালতিতে পুরাই ? শব্দ হয়নি কেন পানি পড়ার? আর ও অবাক হয়ে যাই, যখন দেখে ঘুমন্ত অবস্থায় রিনি বাথরুম থেকে বেরিয়ে পড়ে। আর সেইম কাপড় পড়ে বেরিয়ে আসে। যে কাপড় পড়ে ঘুমিয়ে ছিল এই কাপড় পড়ে আবার বাথরুম থেকে বেরিয়ে পড়ে তাহলে ভেজা কাপড় গুলো কই? আর চুল ও শুকণো কেন? রাবেয়ার মাথা আর কাজ করছে না। একসময় সেন্স লেস হয়ে পড়ে। সকাল এ সূর্যের প্রথম কিরণে তার ঘুম ভেঙ্গে গেলো। আর দেখে রিনি ঘুমাচ্ছে। খুব সাবধানে লুকিয়ে রিনি র রুম থেকে বেরিয়ে আসে। রিনি র বাবা কামাল কে ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলে। আর বলে অফিসে যাবে না? রেডি হয়ে নাও। কিন্তু রাবেয়া কাল রাতে কি হলো কিছু ত বলো? রাবেয়া বলে বলবো আগে অফিস থেকে আসো। রাবেয়া রিনি কে ডেকে দেয়। রিনিঃ মা উঠ? রিনিঃ মা আরেক টু ঘুমায়। কেন জানি সমস্ত শরীর ব্যথা করছে! রাবেয়া কিছু না বলে রুম থেকে বেরিয়ে আসে। রান্না করে। আর নাস্তা করতে রিনি আর কামাল কে ডাকে। কামাল নাস্তা করে অফিসে চলে গেল। আর রিনি নাস্তা করে কলেজ যাবে বলে রেডি হতে লাগলো। রাবেয়া বলে কলেজে আজ যেতে হবে না। রিনি বলে: কেন? তখন হঠাৎ রাবেয়া,, ,,,,,

তৃতীয় খন্ড-

হঠাৎ রাবেয়া তার মেয়ে রিনিকে দুইটা ওষুধ খেতে দিল। রিনি বলে মা এগুলো কিসের ওষুধ, রাবেয়া বলে,একটা pain Killer, আর অন্য টা জ্বর না হয় মতো। রিনি বলেঃ আমার তো শুধু শরীর ব্যথা। এগুলো কি অবশ্যই খেতে হবে। রাবেয়া বলেঃ must be খেতে হবে!!! রাবেয়া মনে মনে বলছে সরি মা। তোকে মিথ্যা বললাম। একটা pain killer কিন্তু অন্য টা প্রেগন্যান্ট না হওয়ার। আর মা তুই জানিসই না,কিন্তু আমি তো জানি তোর সাথে প্রতিদিন কেউ শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হচ্ছে। কিন্তু কে সে? আর তাই চাইনা কোন অঘটন ঘটুক। আর অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে তুই প্রেগন্যান্ট হয়ে যাস, বাচ্চার বাবা কে হবে? কি পরিচয়ে বড় হবে বাচ্চা টা।অবশ্য নিজের মেয়ে মা হওয়ার ছেয়ে খুশির খবর আর কোন কিছু হয়তো পৃথিবীতে হয়না। কিন্তু মা তুই নিজে ও জানিস না তুর সাথে কি হয়। আর আমি ও বুঝতে পারছি না এগুলো কেমনে সম্ভব? তাই মিথ্যা বললাম। রাবেয়া এগুলো ভাবতে ভাবতে রিনির রুম থেকে বেরিয়ে আসে। আর রিনি ঔষুধ খেয়ে গাঁ টা এলিয়ে দেয়। আর রাজ্যের ঘুম তার চোখে চলে আসে। বিকালে কামাল সাহেব বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে যাই। আর কফি খেতে বসে বেলকনিতে। আর রাবেয়া সব বলছে কাল রাতে তাদের মেয়ের সাথে কি হয়ে ছিল। কামাল বেশ কিছুক্ষণ চিন্তা করে। বলে চলো। তোমাদের নিয়ে একটু দেশের বাড়ি যাবো। রাবেয়া বলে: রিনির কলেজ? কামাল বলে: মেয়ে থাকলেই তো কলেজ যাবে। মেয়ের ভালো চাও তো ওকে রাজি করিয়ে রেডি হয়ে যাও as soon as. রাবেয়া অনেক কষ্টে রিনিকে রাজি করিয়ে নিল। বিনিময়ে রিনি ৩০০০ টাকা বকশিস নেই। রিনি অনেক খুশি টাকা পেল আর ঘুরতে যাবে। রাত ৮ টায় গ্রামে পৌঁছে যায়। তবে কামাল এক মূহুর্ত দেরি না করে রিনি আর তার মাকে নিয়ে গেল অর্ক এর কাছে। অর্ক কামালের কলেজ ফ্রেন্ড। প্যারানরমাল ব্যাপারে কাজ করে। গ্রামে থাকে বলে তার কাছে গ্রামে আসা। আর তার সহকারী হচ্ছে রাহাত হুজুর। খুব নাম করা একজন হুজুর। কামালের সাথে রাহাত হুজুরের পরিচয় অর্ক এর মাধ্যমে।কামাল রাবেয়ার কাছ থেকে যা শুনলো তা থেকে বুঝে গেছে অর্ক আর রাহাত হুজুর ছাড়া কেউ এই সমস্যার সমাধান করতে পারবেনা। কামাল, রাবেয়া, রিনি বসে আছে অর্কের সামনে। অর্ক বলে: মা,রিনি কেমন আছো? তুমি বাসার ভিতরে যাও।আমি তোমার আম্মু আব্বুর সাথে কিছু জরুরি কথা আছে ওগুলো নিয়ে আলোচনা করবো। আর হা,বাসার ভিতরে তোমার লাবু আন্টি আছে। কি যেনো রান্না করছে! যাও গিয়ে তোমার লাবু আন্টির সাথে গল্প কর। অর্ক তাদের পাশের ফ্ল্যাট থেকে রাহাত হুজুরকে ডেকে আনে। অবশ্য কামাল অর্ক কে আগে বলে রেখেছে। তার পুরো পরিবার অর্ক এর বাসায় রাতে আসছে। অর্ক জানে কোন জরুরি ব্যাপারে কামাল আসছে। কারণ এখন অফিসে কামাল এর কোন ছুটি নেই। বেড়াতে আসলে ছুটি পেলে আসতো। আর গ্রামে এসে তড়িঘড়ি করে তার বাসায় চলে আসে। তাই অর্কের মনে হচ্ছে ব্যাপারটা মারাত্মক কিছু হবে। তাই অর্ক সময় নষ্ট না করে মূল কথার প্রসঙ্গে ছলে আসে। অবশেষে রাবেয়া, কামাল,অর্ক আর রাহাত হুজুর মিলে বসে আছে। আর রাবেয়া সব বলছে। অর্ক আর হুজুর সব মনোযোগ দিয়ে শুনেছে সবকিছু । হঠাৎ করে, বেশ কিছুক্ষণ পর!! লাবু এসে বলে: বাহ রে! রাবেয়া ভাবি আমার সাথে একটু দেখা ও করেননি অভিমানী কন্ঠে। হুহ্ চলেন। চলেন। ডিনার করে নি। অর্ক বলে: লাবু তুমি রেডি কর খাবার আমরা আসছি। আর রিনি মাকে নিয়ে আসো। একসাথে সবাই বসে ডিনার টা করে ফেলি। সবাই ডিনার শেষে। অর্ক বলে,নরাবেয়া ভাবি আপনি আর লাবু ঘুমিয়ে পড়েন। লাবু বলে: একদম না। আমি ও দেখতে চাই। রিনি মা কে কোন বান্দর এইভাবে ডিস্টার্ব করে!!! অর্ক বলে: যাও। বেশি কথা বলিও না। ভাবিকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়। রাবেয়া কিছু বলছে না। কিন্তু তার ও ইচ্ছে মেয়ের কাছাকাছি থাকার। কামাল আগেই বলে দিয়ে ছিল অর্ক যেমন বলবে তেমন ই করবে। তাই রাবেয়া চুপচাপ থেকে লাবুর সাথে ঘুমাতে যাই। কিন্তু লাবু বা রাবেয়া কারোর চোখে ঘুম ছিল না। রিনির চিন্তায় মন অস্থির হয়ে আছে। অর্ক,কামাল,রাহাত হুজুর আর রিনি একটা রুমে গেলো। রিনি বলে: বাবা আমি ঘুমাবাে। কামাল বলে: অর্ক রাবেয়া আর লাবু ভাবিকে ও ডাক। তুই বকা দিয়ে ভুল করেছিস। আর ওদের দোয়া পড়ে রাহাত হুজুর ফুঁ দিয়ে দিলে কিছু হবেনা। অর্ক লাবু কে বলে: সরি। রাগ করিও না। তোমাদের কিছু হবে এই ভয়ে আসতে নিষেধ করেছিলাম। লাবু আর রাবেয়া আসলো। রাহাত হুজুর ফুঁ দিয়ে দিলেন দোয়া পড়ে। অন্য দিকে রিনি ঘুমিয়ে পড়লো। রাত তখন আস্তে আস্তে গভীর হতে থাকে। সবাই বসে আছে। রিনি কে একটা বৃত্তের ভেতরে আবধ্য করে রাখে ঘুমন্ত অবস্থায়। অবশ্য রিনি ঘুমিয়ে পড়াতে অর্কের কাজ আরও কমে যায়।সব ভাল কিন্তু ভালো নই। কিছু করতে গেলে বাধা আসবেনা এমনকি হয় নাকি!!! ঠিকতখনই..................
গল্পের বাকি অংশ চলমান তবে পজিটিভ দিক ভাববেন কেউ নেগেটিভ ধারণা করবেন না



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: