মণিরামপুরে অর্থ লুটের আয়োজন শ্বশুর-জামাই

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ৭ এপ্রিল ২০২১ ০৩:৫১

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৭ এপ্রিল ২০২১ ০৩:৫১

ছবি সমসাময়িক
  বিশেষ প্রতিনিধি।। মনিরামপুরে দুটি প্রকল্পে পুকুর পুনঃখননের নামে মৎস্য অধিদপ্তর থেকে বরাদ্দ প্রায় সাড়ে ১৭ লাখ টাকা শ্বশুর-জামাই মিলে হরিলুটের পাঁয়তারা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় পুকুর দুটি পুকুর খননের নামে শুধু পাড় ছেঁটে বরাদ্দের পুরো অর্থ উত্তোলনের চেষ্টা করছেন তারা। অভিযুক্তরা হলেন- শ্বশুর যশোরের মনিরামপুর উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল ইসলাম এবং জামাই আইনুল ইসলাম। সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্র জানায়, মৎস্য অধিদপ্তরের জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্পের আওতায় মনিরামপুরের চালুয়াহাটি ইউনিয়নের বাগবাড়িয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের পুকুর পুনঃখননে ১২ লাখ ৪৪ হাজার এবং একই ইউনিয়নের হায়াতপুর পুকুর পুনঃখননে পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। হায়াতপুর পুকুর পুনঃখনন কাজের ঠিকাদার উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল ইসলাম এবং বাগমারা পুকুর পুনঃখননের এলসিএস দলনেতা (চুক্তিবদ্ধ ভূমিহীন সমিতি) জামাই আইনুল ইসলাম। দুটি প্রকল্পের কাজই চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি শুরু হয় এবং ৩১ মার্চ সমাপ্তির সম্ভাব্য তারিখ ধার্য্য হয়। এরই মধ্যে কাজ শেষ হয়েছে বলে প্রকল্পের ঠিকাদার ও দলনেতা নিশ্চিত করেন। অভিযোগ উঠেছে, পুকুর খনন না করে শুধু ঢাল ছেটে পাড় বাঁধা হয়েছে। এতে খরচ হয়েছে মাত্র চার লাখ টাকা। জানা গেছে, এস্কেভেটর মেশিন দিয়ে বাগমারা পুকুর খননে মাত্র একশ ঘণ্টা এবং হায়াতপুর পুকুর খননে মাত্র ৩৫ ঘণ্টা মাটি কাটা হয়েছে। এই দুটি পুকুরের তলায় কোনো মাটি কাটা হয়নি। এস্কেভেটর চালক জসীম উদ্দীন ও উজ্জ্বল জানান, প্রতিঘণ্টা দুই হাজার টাকা চুক্তিতে বাগমারা পুকুর এবং প্রতি ঘণ্টা ২৫শ টাকা চুক্তিতে হায়াতপুর পুকুরে মাটি কাটার কাজ করা হয়েছে। এছাড়া, পুকুর পাড়ের মাটি সমান করতে বাগামারা পুকুরে দৈনিক পাঁচজন শ্রমিক ১৬ দিন এবং হায়াতপুর পুকুরে সমান সংখ্যক শ্রমিক পাঁচ দিন কাজ করেছেন। সিডিউল অনুযায়ী, পুকুর পাড় থেকে পাঁচ ফুট ঢালুর পর আরও পাঁচ ফুট ঢালুর কাজ করে আট ফুট চওড়ার পাড় বাঁধানোসহ পুকুরের তলায় দুই-ছয় ফুট গভীর করার কথা। অথচ, সেই নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা হয়নি। এমনকি, পুকুরের পাড় বাঁধানোর কাজেও শুভংকরের ফাঁকি দেওয়া হয়েছে। পুকুর পাড়ের ব্যক্তি মালিকানা জমিতে মাটি ছিটিয়ে পাড় বাঁধানো দেখানো হয়েছে। এজন্য শাহাজানহান নামের এক জমি মালিক সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগও করেছেন। শাহাজাহান জানান, তার নিজ জমির ওপর মাটি ফেলে পুকুর পাড়ের বাঁধা দেখানো হয়েছে। যা একটু বৃষ্টি হলেই বোঝা যাবে। তদারকির দায়িত্বে থাকা উপজেলা জেষ্ঠ্য মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কুমার ঘোষ বলেন, মৎস্য অধিদপ্তরের প্রকৌশলীর এস্টিমেড অনুযায়ী কাজ হয়েছে। এই প্রকল্পের প্রকৌশলী গৌতম সাহা জানান, পুকুর পুনঃখনন কাজের চূড়ান্ত বিল প্রদান করা হয়নি। সামান্য ত্রুটি আছে, যা ঠিকাদারকে বলা হয়েছে। হায়াতপুর পুকুর পুনঃখনন প্রকল্পের ঠিকাদার আবুল ইসলাম জানান, সিডিউল অনুযায়ী কাজ শেষ করা হয়েছে। এখন বিল উত্তোলনের প্রক্রিয়া চলছে। বাগমারা পুকুর পুনঃখনন প্রকল্পের এলসিএস দলনেতা আইনুল ইসলাম জানান, সংশ্লিষ্ট অফিসের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করা হয়েছে।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: