মাটি খেকোদের দখলে মণিরামপুর উপজেলা” প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করছে অভিযোগ এলাকাবাসীর 

মণিরামপুর প্রতিনিধি।। | প্রকাশিত: ১০ জুন ২০২৪ ২৩:১০

মণিরামপুর প্রতিনিধি।।
প্রকাশিত: ১০ জুন ২০২৪ ২৩:১০

ফাইল ফটো।

মণিরামপুর প্রতিনিধি।। যশোর মণিরামপুরে ২ শতাধিক মাটি খেকোদের দখলে মণিরামপুর উপজেলার ১৭ টি ইউনিয়নের ২০৬ টি গ্রাম।স্থানীয় নেতা কর্মী,ও সাংবাদিকদের ম্যানেজ করে চলছে মাটি সিন্ডিকেট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ১৯ শে জুন ২০২৩ তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রীসভার বৈঠকে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনায় ২০১০ সালের একটি আইনে উল্লেখ করে মাহবুব হোসেন বলেন ২০১১ সালে এ সংক্রান্ত একটি বিধিমালা করা হয়।

ওই আইনে কিছু সংশোধন করা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রীপরিষদ সচিব বলেন যে সব এলাকা থেকে মাটি বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ ছিল সেখানে ফসলি জমি ছিল না। এখন ফসলি জমির অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কোনো ভাবে ফসলি জমি থেকে বালু মাটি উত্তোলন করা যাবে না।কৃষি জমির মাটির উপরের অংশ কাটলে দুই বছর জেল খাটতে হবে। এমন বিধান রেখে মন্ত্রীসভা বালু মাটি ব্যবস্থাপনা সংশোধন আইন ২০২৩ এর খসড়ায় চুড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।কোনো ভাবে কৃষি ফসলি জমি থেকে বালু, মাটি, উত্তোলন করা যাবে না। বর্তমান আইন অনুযায়ী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা বালু মাটি উত্তোলন বন্ধ করতে যন্ত্রপাতি জব্দ করতে পারেন।বালু মাটি পরিবহনের কারণে সড়ক বা স্থাপনার ক্ষতি হলে সর্বোচ্চ দুই বছর জেল ও জরিমানা করতে পারবেন ম্যাজিস্ট্রেটরা। কিন্তু যশোর জেলার মণিরামপুর উপজেলার ২শতাধিক মাটি খেকোরা কৃষক কে বুঝিয়ে বড়ো বড়ো নেতাদের ইন্ধনে চলছে মাটি বালি উত্তোলন।

যে কারনে দিনে দিনে কোমতে শুরু করেছে ধান চাষ সহ খাদ্য শস্য ফসল গুলি। এই মণিরামপুর থেকে এক সময় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ধান, চাউল সহ ফসলি খাদ্য শস্য রপ্তানি করতেন কৃষকরা। কিন্তু বর্তমানে মণিরামপুরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ধান, চাউল সহ ফসলি খাদ্য শস্য আমদানি করে সাধারণ মানুষের চাহিদা পুরন করতে হচ্ছে। এছাড়াও বাংলাদেশ সরকারের উন্নয়নের নবনির্মিত সড়ক গুলি মাটি বহন কারি ট্রাক্টর চলাচলে ৬ মাসের মধ্যে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের কোনো নজরদারি না থাকায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে মাটি ব্যবসায়ীর তালিকা।
স্থানীয় সাংবাদিকদের ম্যানেজ করে চলছে মাটি সিন্ডিকেট।

ঝাঁপা গ্রামে মাটি কেটে ঘের করেছেন সাজু ও আশিকুর রহমান, আঃ রউফ সহ আরো অনেক অজ্ঞাত নামের ব্যক্তি। এরা রাজনৈতিক ভাবে প্রভাব খাঁটিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে মাটি উত্তোলন।খেদাপাড়া জালাপুর বাজার সংলগ্ন ইউসুফ আলী বছর কে বছর যাবত চালিয়ে যাচ্ছে মাটি সিন্ডিকেট। বর্তমানে জালাল পুর মাঠ থেকে, খেদাপাড়া প্রজেক্টেরের পাশে মাটি উত্তোলন করছেন তিনি।

এছাড়ও বর্তমান শ্যামকুড়ে যেসব জায়গা থেকে মাটি উত্তলন করছেন মাঝ-লাউড়ী পালপাড়া পাশের মাঠ থেকে, ঘিবা মাঠ,শ্যামকুড় বটতলা, বুজতলা, সুন্দর পুর, হালসা, এসব এলাকা থেকে যাহারা মাটি তুলছেন তাহারা মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোঃ সবুজ হোসেন, মহিদুল ইসলাম, মোঃ হাফিজুর রহমান, মোঃ তরিকুল ইসলাম, ফজলুর রহমান (মেম্বার) শরিফুল ইসলাম, উভয় গ্রাম শ্যামকুড়, মোঃ রফিক হোসেন(হাজী), জিকো, আসাদুজ্জামান সহ আরো ১০/১২ জন ব্যক্তি।

খেদাপাড়ার স্কুল শিক্ষক রানা, দেবিদাশপুর থেকে সাইফুল ইসলাম, আনিসুর রহমান, বাবু, বিএনপির নেতা মফিজুর রহমানের ছেলে রুবেল, মতিয়ার রমহান মতি, সেভেন স্টার ব্রিকসের মালিক মাহবুর রহমান, চন্ডিপুর মাঠ থেকে মুন ব্রিকস, প্রায় ৭ ফুট গভির করে কৃষি জমি থেকে মাটি উত্তোলন করছেন। গাজী ব্রিকস, নিউ বোল্ত ব্রিকস, গোল্ড ব্রিকস, বোল্ড ব্রিকস, ইট ভাটার নিতিমালা না মেনেই মহাদেবপুর, গাংড়া, ফতেয়াবাদ, বেগমপুর, হোগলাডাঙ্গা, মধুপুর, জয়পুর এলাকা থেকে ঘের কেটে মাটি উত্তোলন করছেন। এমএএসবি ব্রিকস ও পদ্মা ব্রিকস মালিক ইয়াকুব আলী, ফতেয়াবাদ, ইত্তা, কাশিমনগর, চালকিডাঙ্গা, সোহরাপমোড়, আশ পাশের ৭/৮ টি গ্রাম থেকে ইট ভাটার নিয়মনীতি না মেনেই কৃষি জমি থেকে উত্তোলন করছেন মাটি।

দুর্বডাঙ্গা, নেহালপুর, হরিদাস কাটী, মনোহরপুর, মশিহাটী, ঢাকুরিয়া, ভোজগাতী, রোহিতা, কাশিমনগর, মশ্বিমনগর, হরিহর নগর, রোহিতা, খেদাপাড়া সহ পৌর এলাকায় মাটি সিন্ডিকেট চলছে দুরান্ত গতিতে। এ যেনো এক হরিলুট এর প্রতিযোগিতা। দেখভাল করা বা বাধা দেওয়ার মত কেও নেই। অনেকে জানায় আমরা এলাকাবাসীরা গণ সাক্ষরিত পত্র সহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর দরখাস্ত দিয়েছি, তাতেও কোনো ফয়সালা হয়নি। বরং বেড়েই চলেছে অবৈধ ভাবে মাটি উত্তোলন।দেখভাল ও আইনি পদক্ষেপ না থাকায় দিনে দিনে হাজার হাজার বিঘা কৃষি জমি কেটে ঘের তৈরি করতে ব্যস্ত অবৈধ মাটি উত্তোলন সিন্ডিকেট। জানাযায় এসব মাটি সিন্ডিকেটের মোটা অংকের একটি অংশ চলে যায় বিভিন্ন নেতা কর্মীর পকেটে।

এভাবে চলতে থাকলে মণিরামপুরে কৃষি জমি ব্যাপক ক্ষতি সহ হালকা বৃষ্টি হলেই অহরহ এক্সিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। স্থানীয় সচেতন মহলের দাবী এক দুই জায়গায় উপজেলা প্রশাসন জরিমানা আদায় করে বর্তমানে ভান ধরে আছেন। এবিষয়ে গত ৮ই জুন স্মার্ট ভূমি সেবা প্রোগ্রাম শেষে সাংবাদিক দের এক প্রশ্নের জবাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন বলেন আমরা খুব শীঘ্রই ব্যবস্থানিব বলে দু'দিন পার হলেও নিবার প্রশাসন। এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার(ভূমি) নিয়াজ মাখদুম ফয়সাল এর অফিসিয়াল ফোন নাম্বারে ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করবেন'নি। কৃষক বাঁচাতে, কৃষি জমি বাঁচাতে, উপজেলা প্রশাসন সহ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধতন কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন: