মণিরামপুরে প্রশংসা পত্র দেওয়ার নামে প্রধান শিক্ষক প্রভাষ চন্দ্রের বিরুদ্ধে অর্থ আদায়ের অভিযোগ

মনিরামপুর প্রতিনিধি।। | প্রকাশিত: ৭ জুন ২০২৪ ২২:০২

মনিরামপুর প্রতিনিধি।।
প্রকাশিত: ৭ জুন ২০২৪ ২২:০২

ছবি : টেংরামারী সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়।

মনিরামপুর প্রতিনিধি।। যশোরের মনিরামপুরে সদ্য এসএসসি পাস করা কলেজে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রশংসাপত্র দেওয়ার নামে ৩০০ টাকা করে আদায় করার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার টেংরামারী সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রভাষ চন্দ্রের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ। বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী শুকুর আলী ও গার্ড নাজমুল হাসান নয়নের মাধ্যমে তিনি এই টাকা আদায় করছেন। 

প্রতিষ্ঠানের চাহিদা মতো ৩০০ টাকা না দিলে শিক্ষার্থীদেরকে প্রশংসা পত্র দেওয়া হচ্ছে না, এমনটি অভিযোগ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের।  

প্রধান শিক্ষক প্রভাষ চন্দ্র ৩০০ টাকা করে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।

এদিকে অনেক শিক্ষার্থী এ নিয়ে নিজের ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস দিচ্ছে। সুদীপ্ত মণ্ডল নামে এক শিক্ষার্থী নিজের ফেসবুকে লিখেছে, "স্কুলে প্রশংসা পত্র আনতে গিয়ে জানতে পারি আমার চরিত্রের দাম ৩০০ টাকা।"

জয়নাল আবেদীন নামে এক শিক্ষার্থী অভিভাবক বলেন, আমার ছেলে টেংরামারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০২৪ সালে মানবিক বিভাগে এসএসসি পাস করেছে। ছেলেকে কলেজে ভর্তি করাব। এজন্য বিদ্যালয় থেকে প্রশংসাপাত্র ও ট্রান্সক্রিপ্ট লাগবে। শিক্ষকরা ৩০০ টাকা দাবি করেছেন। আমি সম্মানসূচক ১০০ টাকা দিতে চেয়েছি। কিন্তু আমার ছেলেকে ৩০০ টাকা দিয়েই প্রশংসাপত্র আনতে হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টেংরামারী সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে চলতি বছর ৪০ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৩৮ জন পাস করেছে। পাস করা শিক্ষার্থীরা অনেকে কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য বিদ্যালয় থেকে প্রশংসাপত্র ও ট্রান্সক্রিপ্ট আনতে গেছে। বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী শুকুর আলী তাদের কাছে ৩০০ টাকা দাবি করেন। শিক্ষার্থীদেরকে দাবি করা টাকা গার্ড নয়নের হাতে দিয়ে প্রশংসাপত্র আনতে হচ্ছে। 

নাজমুল হাসান নয়ন বলেন, অফিস সহকারী শুকুর আলী ব্যস্ত থাকায় টাকা তোলার দায়িত্ব আমাকে দিয়েছে। এ পর্যন্ত ২৪ জন শিক্ষার্থী প্রশংসাপত্র নিয়েছে। তারমধ্যে ২২ জন ৩০০ টাকা করে দিয়েছে। একজন দিয়েছে ১৫০ টাকা। একজন কোন টাকা দেয়নি।

নয়ন বলেন, যে টাকা উঠেছে সবটায় হিসেব করে শুকুর আলীর কাছে জমা দিয়েছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শুকুর আলী বলেন, আমি কিছু বলতে পারব না। প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলেন। আমাদের চাকরি করতে হয়। 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রভাষ চন্দ্র বলেন, আমরা ট্রান্সক্রিপ্ট বাবদ কোন টাকা নিচ্ছি না। প্রশংসা পত্রের জন্য ৩০০ করে টাকা নিচ্ছি। 

প্রশংসা পত্রের ৩০০ টাকা সরকার নির্ধারিত কিনা-জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বলেন, এটা সরকার নির্ধারণ করে দেয়নি। আমরা নিচ্ছি। 

টাকা নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক প্রভাষ চন্দ্র বলেন, বিদ্যালয়ে ফ্যান ও বিদ্যুৎ বিল আছে। এসব কারণে টাকা নেওয়া হচ্ছে। 

যেসব শিক্ষার্থী প্রশংসাপত্র নিচ্ছে তারা তো আর এই বিদ্যালয়ে পড়বে না। তারা বিদ্যুৎ খরচ বহন করবে কেন এমন প্রশ্নে প্রধান শিক্ষক বলেন, বিদ্যালয়ের উন্নয়নে ওদের দায়িত্ব আছে।

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ সরকারকে একাধিকবার মোবাইলে কলা করা হয়েছে। তিনি ফোন ধরেননি।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন: