নৃশংস-কুপিয়ে হত্যাচেষ্টায় আসামী র‌্যাবের হাতে আটক

মোহাম্মদ মাসুদ,চট্টগ্রাম প্রতিনিধি।। | প্রকাশিত: ১৪ মে ২০২২ ১০:০৪

মোহাম্মদ মাসুদ,চট্টগ্রাম প্রতিনিধি।।
প্রকাশিত: ১৪ মে ২০২২ ১০:০৪

ফাইল ফটো

সীতাকুণ্ডে দাদনের সুদের টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ার জেরে নির্মম ও নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টায় দায়েরকৃত মামলার এজাহারনামীয় প্রথম ও দ্বিতীয় আসামী র‌্যাব-৭ এর হাতে আটক।

র‍্যাব সুত্রে জানা যায়,শুক্রবার (১৩ মে) ২২ খ্রি. আনুমানিক বিকাল ০৬ঃ৫০ টায় আভিযানিক দল
মহানগরীর হালিশহর থানাধীন ছোটপুল এবং মীরসরাই থানাধীন নিজামপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রথম আসামী মোঃ সৌরভ হোসেন (২২),এবং দ্বিতীয় আসামী মোঃ মীর হোসেন (৫০) উভয়ের সাং-পুর্ব সৈয়দপুর,থানা- সীতাকুন্ড,জেলা-চট্টগ্রাম’দের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

ভুক্তভোগী ভিকটিম আবুল মুনছুরের স্ত্রী মোছাঃ ঝরনা বেগম জমি থেকে ফসল উঠনোর জন্য গত ৭/৮ মাস পূর্বে জনৈক ব্যক্তি মোঃ মীর হোসেন এর নিকট হতে লাভের উপর ১০,০০০/- টাকা ধার করে। এরই মধ্যে মোছাঃ ঝরনা বেগম ধার নেওয়া ১০,০০০/- টাকা পাওনাদারকে পরিশোধ করে। উল্লেখিত টাকা পরিশোধ করার পর গত ১৩ এপ্রিল ২০২২ খ্রি. তারিখ পাওনাদার মোঃ মীর হোসেন ভুক্তভোগী ভিকটিম আবুল মুনছুরের বাড়ি এসে ভিকটিম ও তার স্ত্রীকে লাভের টাকা পরিশোধ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। এ কথার প্রেক্ষিতে ভিকটিম ও তার স্ত্রী বলে এখন তারা আর্থিকভাবে খুবই সমস্যার ভিতর আছে ঈদের পরে লাভের টাকা পরিশোধ করে দিবে। তখন মোঃ মীর হোসেন ভিকটিম ও তার স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে বাড়ি থেকে চলে আসে। পরবর্তীতে ঐদিন ইফতারের পর মোঃ মীর হোসেন তার অপরাপর সঙ্গীদের নিয়ে ভিকটিমের বাড়িতে আবার এসে লাভের টাকা পরিশোধ করার জন্য পুনরায় চাপ প্রয়োগ করলে ভিকটিম ও তার স্ত্রী আবারো ঈদের পরে লাভের টাকা পরিশোধ করবে বলে জানায়। ভিকটিম একথা কথা বলার পর মোঃ মীর হোসেন এবং তার সহযোগীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ভিকটিমকে গালাগালি এবং হত্যা করার হুমকি দিয়ে আবার বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। ঘটনার দিন রাতে ভিকটিম আবুল মুনছুর তারাবির নামাজ পরে মসজিদ থেকে বাড়িতে আসার সময় পথিমধ্যে ঘাতক পাওনাদার মোঃ মীর হোসেন এবং তার সহযোগীরা মিলে ভিকটিমকে ঘেরাও করে পূর্ব শত্রæতার জের ধরে পরিকল্পিতভাবে তাদের হাতে থাকা ধাড়ালো ছুরি, কিরিচ ও চাপাতি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ভিকটিমের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় নির্মম ও নৃশংসভাবে কুপিয়ে মারাত্বক জখম করলে ভিকটিম মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তখন দুস্কুতিকারীরা ভিকটিমকে ঐ অবস্থায় বিভিন্ন প্রকার হুমকি প্রদান করে পালিয়ে যায়।

ভিকটিমকে গুরুতর আহত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে থাকা দেখে রাস্তার লোকজন তার বাড়িতে খবর দেয় এবং তৎক্ষনাত ভিকটিমের ছেলে এসে আসপাশের লোকজনের সহযোগীতায় তার বাবাকে গুরুতর আহত ও রক্তাক্ত অবস্থায় সীতাকুন্ড স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করায়। সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তার শরীরের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে এবং বর্তমানে গুরুতর আহত ভিকটিম মুনছুর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিউরোসার্জারী বিভাগে চিকিৎসাধীন আছে। উক্ত ঘটনায় আহত ভিকটিমের ছেলে বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানায় ০৪ জন নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৪/৫ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করে।
ঘটনার পর হতে আসামীরা আইন-শৃংঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপন চলে যায়। এই লোহমর্ষক ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের জন্য র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম অত্যান্ত মানবিকতার সহিত বিষয়টি চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহন করে। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী অব্যহত রাখে। নজরদারীর এক পর্যায়ে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে যে, উক্ত মামলার মূলপরিকল্পনাকারী ও এজাহারনামীয় ১ ও ২নং আসামী আইন-শৃংঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে গ্রেফতার এড়াতে চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহর থানাধীন ছোটপুল এবং মীরসরাই থানাধীন নিজামপুর এলাকায় আত্মগোপন করে রয়েছে।

উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে আসামীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামীরা উপস্থিত স্বাক্ষীদের সামনে উল্লেখিত নির্মম ও নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার লোহমর্ষক ঘটনার মামলার এজাহার নামীয় ১ ও ২নং পলাতক আসামী মর্মে স্বীকার করে।

গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন: