যশোর প্রতিনিধি।। নাশকতার মামলায় যশোরে আওয়ামী লীগের ১৬৭ নেতা–কর্মী আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। রোববার পৃথক তিন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাঁরা আত্মসমর্পণ করলে বিচারক ৪২ জনের জামিন আবেদন মঞ্জুর করে বাকিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কারাগারে পাঠানো ব্যক্তিরা হলেন যশোর সদর উপজেলার ২০ জন ও অভয়নগরের ১০৫ জন। আর জামিন মঞ্জুর হয়েছে কেশবপুর উপজেলার ৪২ জনের। এঁদের মধ্যে ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার, উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা রয়েছেন।
আদালতের পরিদর্শক রোকসানা খাতুন তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন,‘আদালতের নির্দেশে আত্মসমর্পণকারী আসামিদের যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।’
এদিকে আসামিদের কারাগারে নেওয়ার জন্য প্রিজন ভ্যানে ওঠানোর সময় আদালত চত্বরে ‘জয় বাংলা, ‘শেখ হাসিনা ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘জাতির পিতা শেখ মুজিব, লও লও লও সালাম’ স্লোগান দিতে দেখা যায় আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীদের।
এই সময় আদালত এলাকায় একধরনের উত্তপ্ত পরিবেশের সৃষ্টি হয়। তবে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। মুহূর্তের মধ্যে এর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
জানতে চাইলে আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর সাবেরুল হক সাবু বলেন, ‘আদালত চত্বরে স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল হওয়া ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।তিনি আরও বলেন, ‘আমরাও অনেক হাজার হাজার মামলার আসামি হয়েছিলাম, আত্মসমর্পণ করেছি। কিন্তু আদালত চত্বরে এ ধরনের ঔদ্ধত্য আচরণ ও আদালতের শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয় এমন কোনো কর্মকাণ্ড করেনি। বিষয়টি নিয়ে আমরা আদালত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলব।’
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর যশোর সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে বোমাবাজির ঘটনায় গত ১৯ নভেম্বর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন অ্যাডভোকেট মুন্সী মঞ্জুরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেনসহ ৯৬ জন।
আজ চেয়ারম্যানসহ ২০ জন এজাহারভুক্ত আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানালে বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
অপর দিকে অভয়নগরের পৃথক দুটি মামলায় একই দিন ১০৫ জন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার দালালের আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাঁদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, কোষাধ্যক্ষ আনিছুর রহমান মিন্টু, সাবেক হুইপ আব্দুল ওহাবের ছেলে শেখ কাফি সম্রাট, কমিশনার বিপুল শেখ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফি কামাল, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মামুনসহ প্রমুখ।
এ ছাড়া কেশবপুরের আরেকটি নাশকতার মামলার এজাহারভুক্ত ৪২ আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাশেদুর রহমান তাঁদের জামিন মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালতে আসামি পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ কবীর হোসেন জনি বলেন, মামলার ঘটনার সঙ্গে বাস্তবের কোনো মিল নেই। মনগড়া অভিযোগ দিয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের পক্ষে তাঁরা জেলা জজ আদালতে জামিন চাইবেন। যা প্রক্রিয়াধীন।
                                
                        
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
                                
                                            
                                            
                                            
                                            
                                            
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: