পটিয়ায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বক্তব্যে এলাকায় তোলপাড়

সেলিম চৌধুরী নিজস্ব সংবাদদাতা।। | প্রকাশিত: ৩০ মে ২০২২ ০৫:৩৭

সেলিম চৌধুরী নিজস্ব সংবাদদাতা।।
প্রকাশিত: ৩০ মে ২০২২ ০৫:৩৭

ফাইল ফটো

আগামী ১৫ জুন চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ছনহরা ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচনের আগে চেয়ারম্যান প্রার্থী মামুনুর রশিদ রাসেলের একটি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী আবদুর রশিদ দৌলতী এই বক্তব্যের পর আতংকিত হয়ে এলাকায় যেতে ভয় পাচ্ছেন।শুক্রবার (২৭ মে) বিকেলে ছনহরা ইউনিয়নের আলমদার পাড়া বায়তুশ শরফ মসজিদ প্রাঙ্গণে তার পিতা প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলমের স্মরণসভায় প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুর রশিদ দৌলতিকে নিয়ে তিনি আক্রমানাত্মক বক্তব্য দেন। এসময় তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে সাবধান হতে বলেন।সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক মিনিট ৫৩ সেকেন্ডের ভিডিওতে নৌকার প্রার্থী মামুনুর রশিদ রাসেল চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, ‘রশিদ সাবরে আই বুড়া আঙুল দেহাইত পাইরগুম। রশিদ সাব, ” তুঁই আইযু রাসেলরে নঁ চিনঅ”। “রাসেলরে আইযু নঁ চিনঅ রশিদ সাব”। ” আঁই রাসেল কিন্তু চাইরতাম নঁ”।তিরি আরও বলেন, ‘রাসেল কী জিনিস এবার আপনি হাড়ে হাড়ে বুঝবেন। আমি কী জিনিস, আমার এমপি সাব জানেন ( সামশুল হক চৌধুরী) । আমি কী জিনিস মোতাহের নানা (উপজেলা চেয়ারম্যান মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী) জানেন। আমি কী জিনিস আমার মফিজ সাব (দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক) জানে, আমি কী জিনিস, বিপ্লব বড়ুয়া (দপ্তর সম্পাদক) জানেন।এ বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রশিদ দৌলতি আমার পটিয়াকে বলেন, মামুনুর রশিদ রাসেল আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী। তার পিতার স্মরণসভা থেকে তিনি আমাকে হুমকি দিয়েছেন। আমি বিষয়টি মৌখিকভাবে নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি। লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পদক্ষেপ নিচ্ছি।এ বিষয়ে নৌকার প্রার্থী মামুনুর রশিদ রাসেল বলেন, আমি বিভিন্ন সময়ে দেয়া তার বক্তব্যের জবাব দিয়েছি।উল্লেখ, গত ১৯ মে মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ে ক্রেডিট কার্ডের ঋণখেলাপির অভিযোগে মনোনয়ন বাতিল হয় মামুনুর রশিদ রাসেলের। পরে উচ্চ আদালত রায়ে মনোনয়ন ফিরে পান তিনি। ২৬ মে প্রতীক বরাদ্দ দেয় নির্বাচন কমিশন। মামুনুর রশিদ রাসেল, আবদুর রশিদ দৌলতি বাদেও নির্বাচনে মো. সাহাবুদ্দিন, মো. জাহিদুল হক নামের আরও দুজন স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আবদুর রশিদ দৌলতী এর আগে ২০১৬ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ছনহরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৬ ডিসেম্বর পটিয়া উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ছনহরা ইউনিয়নে কেন্দ্র দখল করে ভোট নেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২টি কেন্দ্রের ভোট বাতিল করা হয়। পরে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুর রশিদ দৌলতি আরও ৩টি কেন্দ্রে ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এরপর আবদুর রশিদ দৌলতি উচ্চ আদালতে একটি রিট মামলা করেন।পরে গত ৭ ফেব্রুয়ারি স্থগিত ২টি কেন্দ্রের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম বিজয়ী হলেও আবদুর রশিদ দৌলতি তা প্রত্যাখান করে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হন। ওই মামলায় উচ্চ আদালত গেজেট স্থগিত করেন। গত ২৫ মার্চ এই ইউনিয়নে বিজয়ী চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম মারা যান। যে কারণে সেখানে উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আগামী ১৫ জুন সেখানে ভেটাগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন: