
♦নিউজ ডেস্ক।।
যশোরের মণিরামপুর উপজেলায় মনোনীত সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এম নজরুল ইসলাম উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্যাডে এমনই স্বীকৃতি দিয়েছেন। উল্লেখ্য যে, সেই কুখ্যাত রাজাকারের নাম দ্বীন মোহাম্মদ সরদার, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা তাকে দীনু রাজাকার বলে ডাকতেন।৷ মণিরামপুরের রাজগঞ্জ যুদ্ধে ০৭ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে ৩১ জন রাজাকার ধরা পড়ে এবং কয়েকজন রাজাকার সেই যুদ্ধে নিহত হয়৷ এই ৩১ রাজাকারের মধ্যে দিনু রাজাকার অন্যতম। এই দিনু রাজাকার খান সেনাদের পাক ঘরে রান্না করতো, মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি ঘর খান সেনাদেরকে চিনিয়ে দিতো, মণিরামপুরের মোহনপুর গ্রামের নওয়াব আলী নামে একজন বীরমুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেছে এই দীনু রাজাকার। স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা জামাল খাঁ চাচা এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে। ৩১ জন রাজাকারের ভেতরে উল্লেখযোগ্য তিনজন রাজাকার আজিজ রাজাকার, ওহাব রাজাকার এবং দীনু রাজাকার মুক্তিযোদ্ধাদের হাত থেকে সুকৌশলে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এবং তৎকালীন সময়ে ভারতে তারা আত্নগোপন করে ছিলো। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরে আজিজ রাজাকার দেশে ফেরত আসলে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা চাচারা নিশ্চিত হন যে দিনু রাজাকার ভারতে অবস্থান করছে। তখন সময় ছিলো বিরুদ্ধে। মুক্তিযোদ্ধা চাচাদের আর কিছুই করার ছিলো না। সেই থেকে দিনু রাজাকার স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পালাতক রাজাকার হিসাবে বিবেচিত।
সম্প্রতি, সেই দিনু রাজাকারের পুত্র আবুল ইসলাম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছে। তার পিতার কুকর্মকে সহি করতে সহায়তা নেন সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ নজরুল ইসলামের। যিনি কোন একসময় জামায়াত ইসলামী দলের সক্রিয় সদস্য এবং জামাতের পক্ষে বিভিন্ন নির্বাচনে নিজেকে সক্রিয় রেখেছিলেন। এমতবস্থায়, তিনি সেই দীনু রাজাকারকে সহযোগী মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিলেন। এই বীর মুক্তিযোদ্ধার নৈতিক স্খলনের জন্য বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ যশোর জেলা কমাণ্ড কাউন্সিল তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
আমরা বিশ্বাস করি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা তার নৈতিক স্খলনের কারনে বিভ্রান্ত হতে পারেন, কিন্তু একজন স্বীকৃত রাজাকার কখনো মুক্তিযোদ্ধা বা সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা হতে পারে না। এমন ধৃষ্টতাকে আমরা ঘৃণা জানাচ্ছি এবং মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মের সন্তান হিসাবে সেই স্বীকৃতিকে আমরা প্রত্যাখ্যান করছি।
লেখক- শাফি সমুদ্র (সদস্য সচিব) বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ, যশোর জেলা কমাণ্ড কাউন্সিল।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: