গাজীপুর শহরের উত্তর ছায়াবিথী এলাকায় মনিরা সুলতানা ‘বাড়ির ছাদে বাগান সৃজন’ ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়ে পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কার। তিনি শ্রীপুরের প্রহলাদপুর ইউনিয়নের দমদমা গ্রামের ব্যবসায়ী আকরাম হোসেন বাদশার স্ত্রী।
পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা দীপঙ্কর বরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুরস্কারপ্রাপ্তির তথ্য জানা যায়। 
মনিরা সুলতানা গাজীপুর শহরের উত্তর ছায়াবিথী এলাকায় বাড়ির ছাদে গড়ে তুলেছেন দেশি বিদেশি উদ্ভিদের এক বিশাল সমারোহ। আর এ কাজে উৎসাহ ও সার্বিক সহযোগিতা করেছেন স্বামী আকরাম হোসেন। মনিরা শখের বশে ২০১৪ সালের দিকে অল্প কিছু গাছ এনে লাগিয়েছিলেন। এরপর এটিকে উৎপাদনমুখী ও বাণিজ্যিক করার উদ্দেশ্যে
বিশে^র বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন জাতের ঔষধি গাছ, সবজি ও নানা ধরনের ফলের গাছ আমদানি করেন। স্বামী আকরাম হোসেন যতবার বিভিন্ন দেশে গিয়েছেন, ততবার তার জন্য নিয়ে এসেছেন কোনো না কোনো উদ্ভিদের জাত। 
তার ছাদ বাগানে সব মিলিয়ে উদ্ভিদের সংখ্যা ১ হাজার ৪৩৯টি। এর মধ্যে ঔষধি গাছ আছে ৪০ প্রজাতির। শোভাবর্ধনকারী গাছ আছে ৫৬ প্রজাতির। বিশেষ প্রজাতির গাছের সংখ্যা ২৬টি। দেশীয় বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির গাছ আছে ৭ প্রজাতির। ফলজ গাছের সংখ্যা ৯৯টি। অন্যান্য অন্তত ১০০ প্রজাতির গাছ আছে তার ছাদে। 
তিনি বলেন, ছাদটি পরিপূর্ণভাবে সাজিয়ে সেখান থেকে কিছু চারা বিক্রি করেছেন। এর পরেই মাথায় এলো আরও বড় পরিসরে ছাদে বিভিন্ন ঔষধি গাছ ও ফলমূলের চারা উৎপাদন করবেন। একই সঙ্গে চারা উৎপাদন, ছাদ কৃষিতে উদ্ভিদের পরিচর্যা ও অল্প জায়গায় সর্বোত্তম ব্যবহার নিয়ে লোকজনকে প্রশিক্ষণ দেবেন। তিনি তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে 'প্লান্টস ফ্রম মুন' নামের একটি গ্রুপ খুলেন। সেখানে সদস্য হলেন অসংখ্য মানুষ। 
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে লোকজন তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে লাগলেন। তার ছাদে তিনি মাছও চাষ করছেন। মাছের হাউস থেকে বালতিতে করে পানি নিয়ে গাছের গোড়ায় দেন তিনি। এতে গাছ অনেক পুষ্টি পায়। এ ছাড়া বাড়িতে উৎপাদিত সবজির উচ্ছিষ্টাংশ বিশেষ পদ্ধতিতে জৈবসারে রূপান্তর করেন। এসব সার বাজারে পাওয়া যেকোনো সারের চেয়ে অনেক বেশি নিরাপদ। অরগানিক সবজি উৎপাদনের জন্য তিনি এগুলো গাছকে খাবার হিসেবে দেন। 
প্রথম পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে মনিরা সুলতানা বলেন, ছাদ কৃষিতে অনেক উদ্যোক্তা তৈরি করতে চাই। তাই প্রতিবছর প্রশিক্ষণ, চারা ও বীজ বিতরণসহ সেমিনার করি। আশা করি আগামীতে কৃষিতে আমরা আরও ভালো করব। স্বামী আকরাম হোসেনের অনুপ্রেরণায় তিনি ছাদ কৃষি শুরু করেন বলেও জানান। 
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কারের জন্য এ বছর ৭ ব্যক্তি ও ১৬টি প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত করেছে সরকার। ১৯৯৩ সাল থেকে চালু হওয়া প্রতিটি শ্রেণির পুরস্কার প্রাপ্তদের সনদপত্র এবং অর্থ প্রদান করা হয়।
                                
                        
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
                                                        
                                
                                            
                                            
                                            
                                            
                                            
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: