যশোরে মালিকানা দ্বন্দ্বে সড়কের মধ্যে বড় বড় গাছ রেখে চলছে রাস্তা প্রশস্তকরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২৫ ডিসেম্বর ২০২১ ০৫:৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৫ ডিসেম্বর ২০২১ ০৫:৩২

ছবি সমসাময়িক

মণিরামপুর প্রতিনিধি।। 

যশোরের রাজারহাট-মণিরামপুর ভায়া চুকনগর পর্যন্ত প্রায় ৩৮ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণ কাজের ৬০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বে সড়কের মধ্যে বড় বড় গাছ রেখে চলছে প্রশস্তকরণ। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।
যশোরের রাজারহাট থেকে মণিরামপুর হয়ে চুকনগর পর্যন্ত প্রায় ৩৮ কিলোমিটার সড়কটি প্রশস্তকরণের জন্য ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের রাস্তাটির কাজ আগামী ৩১ ডিসেম্বর সম্পন্ন করার কথা থাকলেও সময় বাড়ানো হয়েছে এক বছর। সড়কটি প্রশস্তকরণের কাজ পায় চার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
এ সড়কের দু'পাশে বিভিন্ন জাতের ছোট-বড় কয়েক হাজার গাছ রয়েছে। সড়ক প্রশস্ত করতে পাশের সব গাছ কেটে ফেলার কথা। কিন্তু বিপত্তি ঘটে গাছের মালিকানা নিয়ে। এসব গাছের দাবিদার বন বিভাগ, জেলা পরিষদ এবং সওজ কর্তৃপক্ষ। তিন বিভাগের রশি টানাটানিতে গাছ কাটার জন্য কোনো বিভাগই দরপত্র আহ্বান করতে পারেনি। ঠিকাদার কাজ করতে এসে পড়েছেন বিপাকে। ফলে বাধ্য হয়েই তারা (ঠিকাদার) সড়কের অধিকাংশ গাছ এক্সক্যাভেটর দিয়ে উপড়ে যত্রতত্র ফেলে রেখেছেন। এ সুযোগে অধিকাংশ গাছ লুটপাট হয়ে যায়। বর্তমানে সড়কের পাশে যেসব গাছ রয়েছে তার কোনো ডালপালা নেই। দীর্ঘদন ধরে পড়ে থাকায় রোদ-বৃষ্টিতে পচন ধরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
মণিরামপুরের বাঁধাঘাটা এলাকার ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম জানান, বিজয়রামপুর মোড়ে সড়কের মধ্যে রয়েছে বেশক'টি বড় বড় মেহগনি গাছ। অথচ গাছ না কেটেই দুই পাশ প্রশস্ত করা হয়েছে। ফলে প্রায়ই সেখানে ঘটছে দুর্ঘটনা।
মাদ্রাসা শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ জানান, সম্প্রতি রাতে মোটরসাইকেলে যাওয়ার সময় ওই গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে তারা তিন বন্ধু গুরুতর আহত হন।
স্কুল শিক্ষক শরিফুল ইসলাম, ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম, ট্রাকচালক ইসমাইল হোসেনসহ কয়েকজন জানান, সড়কের মধ্যে বড় বড় গাছ রেখে প্রশস্তকরণের কারণে বিজয়রামপুর, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর সদর দপ্তর, হাসপাতাল, সুন্দলপুর বাজারের উত্তর পাশেসহ বিভিন্ন স্থানে রাতের বেলা গাছ এখন পথচারীসহ যানবাহনের জন্য বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা। অথচ এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে সংশ্নিষ্টরা নির্বিকার রয়েছে। ভুক্তভোগীসহ এলাকাবাসীর দাবি, সড়ক থেকে দ্রুত এসব গাছ অপসারণ করা হোক।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স কপোতাক্ষ এন্টারপ্রাইজের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মাসুদ রানা জানান, সড়কের গাছ কর্তনে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় তাদের কাজ করতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সওজের যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, সড়ক থেকে গাছ সরানোর জন্য বারবার জেলা পরিষদকে বলা হলেও তারা কার্যত কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান জানান, গাছ বিক্রির দরপত্র আহ্বানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে কাগজপত্র ইতোমধ্যে জমা দেওয়া হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, অচিরেই দরপত্র আহ্বানসহ সব সমস্যার সমাধান হবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: