পটিয়া আবদুছ সাক্তার জামে মসজিদে মাহফিলে আবুল কাসেম নুরী

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ৩০ অক্টোবর ২০২১ ১৫:৩২

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৩০ অক্টোবর ২০২১ ১৫:৩২

ছবি সমসাময়িক

সেলিম চৌধুরী।।

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসিরে কোরআন সোনার মদিনা নাতে রাসূল রচয়িতা ও সূরকার আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুফতি আবুল কাশেম নুরী সংখ্যালঘুদের জানমাল,ইজ্জত এবং ধর্মীয় নিরাপত্তার বিধান নিশ্চিত করা প্রত্যেক রাষ্ট্রের অন্যতম দায়িত্ব। কারো উপর জোর খাটানো কিংবা কারো ধর্মে বাধা দেয়া ইসলামের আদর্শ নয়। ইসলামে যে দোষী তাকে শাস্তি দেয়ার বিধান রেখেছে। এদেশে অলি আল্লাহরা পদার্পন না করলে ঠিক ঈমান ইসলামমের রাস্তা পাওয়া যেত না। অলি আল্লাহগণ নিজের জীবনকে আল্লাহর রাস্তায় উৎসর্গ করে এই দেশে সুন্নিয়ত তথা ঈমান ইসলামকে প্রতিষ্ঠা করে গেছেন।তিনি আরো বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলামে জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসের কোনো স্থান নেই। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক মুসলমানদের মধ্যপন্থী সম্প্রদায় হিসেবে সৃষ্টি করার শাশ্বত ঘোষণা দিয়েছেন। তাই সন্ত্রাস ও উগ্রপন্থা পরিহার করে ভারসাম্যপূর্ণ মধ্যপন্থা অবলম্বন করাই ইসলামের নির্দেশনা। জঙ্গিবাদের কবলে পড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ কোনো রাষ্ট্র, জাতি ও সমাজের কল্যাণ বয়ে আনতে পারেনি, পারবেও না। মাদক, সন্ত্রাস ও ইভটিজিং জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি ২৯ অক্টোবর শুক্রবার রাতে পটিয়া পৌর সদরে আলম শাহ রোড়ে আবদুছ সাক্তার জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটি ও মসজিদের মোতায়াল্লী প্রবাসী আবুল বশরে ব্যাবস্হা প্রনায় আশোজিত ঈদের মিলাদুন্নবী ( সা) প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। এ মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম সওঃ সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক সেলিম উল্লাহ সন্চলনায় এতে উদ্বোধক ছিলেন, পটিয়া ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন এর সভাপতি ও আবদুছ সাত্তার জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি আলহাজ্ব আমির হোসেন।প্রধান আলোচক ছিলেন,ম হজরত শাহচান্দ আউলিয়ার কামিল মাদ্রাসা মুহাদ্দিস হয়রতুল আল্লামা মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন খালেদ (জোহাদী)। প্রধান বক্তৃতা ছিলেন, হাজী আবদুছ সাক্তার জামে মসজিদের খতিব মাঃ সাইফুল্লাহ খালেদ আল কাদেরী,বিশেষ বক্তৃতা হজরত সুলতান শাহ আউলিয়া জামে মসজিদের খতিব মাঃ নেজাম উদ্দিন নিজামী। উপস্থিত ছিলেন সাবেক মেয়র অধ্যাপক হারুনুর রশিদ সিদ্দিকী, প্রফেসার আবু তৈয়ব, জহির আহমদ চৌধুরী, ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফিউল আলম, ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোফরান রানা, সাবেক কমিশনার হাসান মুরাদ, পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি আলমগীর আলম, পটিয়া পৌরসভার যুবদলের সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, মসজিদের মোতায়াল্লী হাজী আবুল কালাম, আবু সৈয়দ, আবু ফরিদ, স্থানীয়দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আবছার উদদীন, নুরুল ইসলাম, নুরুচ্ছফা, নুরুল ইসলাম, খায়ের আহমদ, মোসলেম উদ্দিন, খোরশেদ আলম প্রমুখ। মিলাদ মাহফিল শেষে ১০ হাজার মানুষের মাঝে তবররুক বিতরণ করা হয়। মাহফিলে বক্তারা বলেন, মানবজীবনে শান্তি ও মুক্তির জন্য প্রয়োজন প্রকৃতির অনুকূল আল্লাহর বিধান অনুসরণ করা। ইমান মানে বিশ্বাস ও নিরাপত্তা এবং সমাজের কল্যাণে নিবেদিত হওয়া। ইসলামি শরিয়তের সব বিধান এই আলোকেই সুবিন্যস্ত। ইসলামে মাদক সেবন নিষিদ্ধ। ইসলামে অন্য যেসব নিষিদ্ধ বা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত বিষয় রয়েছে, সেগুলো থেকে ব্যক্তি চাইলেই সহজে বিরত থাকতে পারে। অর্থাৎ, ইচ্ছা করলে এসব অপরাধ থেকে সরে থাকা যায়। কিন্তু মাদক গ্রহণ এমন এক অপরাধ, যা নিজের নিয়ন্ত্রণে থাকে না; বরং মাদকসেবী নিজেই মাদক বা নেশার নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। চাইলেই সেখান থেকে বেরিয়ে আসা যায় না। অর্থাৎ, সে নেশাকে ছাড়তে চাইলেও নেশা তাকে সহজে ছাড়ে না বা ছাড়তে চায় না। মূল পঞ্চ নিষেধের চারটি অপরাধ পরিত্যাগ করে তওবা করে পবিত্র জীবন যাপন করা সম্ভব, কিন্তু নেশা বা মাদকাসক্ত ব্যক্তি তওবা করারও সুযোগ পায় না এবং মাদক না ছেড়ে তওবা করলেও তা কবুল হয় না। মাদক হলো অপরাধের আকর। কোরআন কারিমে বর্ণিত হারুত ও মারুত এই মাদকের নেশায় মাতাল হয়েই জোহরার ইশারায় হত্যা, ব্যভিচারসহ নানান অপরাধে লিপ্ত হয়েছিল (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১০২; তাফসিরে আজিজি ও তাফসিরে মাআরিফুল কোরআন)। মাদক হলো নেশা উদ্রেককারী সব বস্তু, যা মানুষের মস্তিষ্কের স্বাভাবিকতাকে নষ্ট করে দেয়, যার প্রভাবে মস্তিষ্ক ঠিকভাবে কাজ করে না। মাদক সন্ত্রাসবাদ ও অপরাধকে উত্সাহিত করে। শরিয়তের বিধানের দর্শনকে ‘মাকসিদে শরিয়া’ নামে অভিহিত করা হয়। শরিয়তের উদ্দেশ্য হলো পাঁচটি। জীবন রক্ষা, সম্পদ রক্ষা, জ্ঞান রক্ষা, বংশ রক্ষা, বিশ্বাস বা ধর্ম রক্ষা। হত্যার পরিবর্তে হত্যার বিধান রাখা হয়েছে জীবন সুরক্ষার জন্য। সেখানেও রয়েছে দিয়াত বা রক্তপণ দিয়ে নিহতের অভিভাবকের কাছ থেকে ক্ষমার সুযোগ। চুরির দায়ে হাত কাটার বিধান আছে সম্পদ সুরক্ষার জন্য। এখানেও রয়েছে অপেশাদার অভাবীদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা ও ক্ষমার সুযোগ। সব ধরনের মাদক বা নেশাদ্রব্য হারাম করা হয়েছে জ্ঞান বা বুদ্ধি–বিবেক সুরক্ষার জন্য। মাদক গ্রহণের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রাখা রয়েছে।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: