
ইকরামুল হোসেন, মনিরামপুর (যশোর) থেকে।।
পথ কখনো মসৃণ কখনো নানা বাধা-বিপত্তিতে ভরা। রাজ্যের অনেক বাধা অতিক্রম করেই জীবনে সফল হতে হয়। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে লক্ষ্যের কাছাকাছি পৌঁছেও পিছলে যেতে পারে পা, এসব নিয়েই তো জীবন। একটা স্বপ্ন ভাঙে তো আরেকটা স্বপ্নের জাল বুনে নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করতে হয় । এমন মানুষও আছেন যাঁরা হোঁচট খেয়ে আর উঠে দাঁড়াতে পারেন না, আবার কেউ মৃত্যুর দোয়ার থেকে ফিরে গড়ছে নতুন জীবন তেমনি যশোরের মনিরামপুর উপজেলার বাকোশপোল গ্রামের ইব্রাহিম খলিল (২৪) মৃত্যুর দোয়ার থেকে ফিরে দেখছেন নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন মহান আল্লাহ্ পাকের কাছে ও মানুষের কাছে। তথ্য সূত্রে জানাযায়, উপজেলার বাকোশপোল গ্রামের ইসমাইল হোসেনের হতদরিদ্র পরিবারে ঘর আলো করে জন্মনেয় ইব্রাহিম খলিল আস্তে আস্তে বয়সের সাথে বাড়তে থাকে তার হার্টের রোগ গ্রাম্য ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসা নিয়েও ভালো হয়নি ইব্রাহিম খলিল একসময় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা আসেন তিনি আজমুল হাসপাতালে পরিক্ষা-নিরিক্ষা করে সেখানকার কর্তব্যরত ডাক্তার জানান তার কিডনি জনিত রোগ তাকে বাঁচাতে হলে ইন্ডিয়া নিয়ে যেতে হবে এবং অপারেশন করতে হবে খরচ পড়বে প্রায় ৫-৬ লাখ টাকা ডাক্তারের মুখে এমন কথা শুনে ইব্রাহিমের পরিবার ভীষণ ভাবে ভেঙে পড়ে এতো টাকা কিভাবে জোগাড় করবে তার পরিবার। ইব্রাহিমকে বাসায় নিয়ে আসেন এবং বাড়ির জমি-জমা বিক্রি করে মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন সাহায্য নিয়ে একমাত্র ছেলেকে বাঁচাতে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে থাকেন। একটু সুস্থ্যর দিকে ফিরলেও পারেন না কোনো চাপের কাজে নিজেকে ব্যবহার করতে। শেষ সম্বল হারিয়েও সুস্থ্য হয়নি তিনি ইন্ডিয়া নিয়ে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি তার পরিবারের। পরিবার ভীষণ ভাবে ভেঙে পড়েন একমাত্র ছেলেটিকে হারিয়ে কি ভাবে বেঁচে থাকবে তার এমন অনেক চিন্তা বিরাজ করেন তাদের মনে। পরিবারের এমন বেহাল দশা দেখে ইব্রাহিম খলিল ঢাকা আসেন সেখানে এক কোম্পানিতে কাজ করেন প্রতিমাসে বেতন দিয়ে নিজের ঔষধ চালাতে থাকেন আবার পাশাপাশি তার পরিবারকে কিছু সাহায্য করেন এমন ভাবে চলতে থাকে ইব্রাহিম খলিলের জীবন। জামাতের সাথে পার্চ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করাসহ জামাত চিল্লাতে গিয়ে তিনি মহান আল্লাহ্ কাছে নিজেরসহ সকলের রোগ মুক্তির কামনা করেন অবশেষে আল্লাহ্ পাক রব্বুল আলামিন তার ডাক শুনে তাকে সম্পন্ন সুস্থ্য করে দেন। এ সম্পর্কে ইব্রাহিম খলিল বলেন, বিষাদ আর পরাজয়ের গ্লানি চারপাশ থেকে ঘিরে ধরেছিলো। এ ক্ষেত্রে নিজের বেয়াড়া আবেগগুলোকে ঝেড়ে ফেলে নতুন জীবন গড়ার লক্ষ্যে আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি। যে অতীত পাল্টানোর ক্ষমতা নেই আমার সেটি ভেবে ভেবে কোনো ফলই পাবো না। বরং এসব চিন্তা আমার মনকে আরও অস্থির করে তুলবে। এর চেয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা অনেক বেশি কাজে আসতে পারে। আমার সাধ্যের মধ্যে আছে এমন কিছু ভাবতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের রোগ অনেক কারণেই জীবনে নেতিবাচক ভাবনা তৈরি করতে পারে। এসব ভাবনা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও হুমকি। অতি-আবেগপ্রবণ মন-মানসিকতা শারীরিক ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে। এটি পরীক্ষিত যে নিজের সমস্যা সমাধানের চেয়ে অন্যকে পরামর্শ দেওয়া অনেক সহজ। তাই কল্পনা করতে পারেন আপনার কাছের কোনো বন্ধু এমন কোনো সমস্যায় পড়ে আপনার কাছে এসেছে। এমন হলে আপনি তাঁকে যে সমাধান দিতেন সেটি নিজের ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করতে পারেন। আমি মহান আল্লাহ্ পাক রব্বুল আলামিনের কাছে কোটি কোটি শুকরিয়া সে আমাকে সুস্থ্য করে দিয়েছে এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি যারা আমার পাশে থেকে আমাকে সাহস দিয়েছে আমাকে বেঁচে থাকার নতুন স্বপ্ন দেখিয়েছে। ইব্রাহিমের পিতা মোঃ ইসমাইল হোসেন বলেন, একসময় ডাক্তারের কথা শুনে ভীষণ ভাবে ভেঙে পড়েছিলাম মনে হয়েছিলো ছেলেটি দ্রুতই আমাদেরকে ছেড়ে চলে যাবে প্রতি ওয়াক্ত নামাজে শেষে মোনাজাতে চোঁখের পানি ফেঁলেছি ও দোয়া করেছি যেনো আমার ছেলে সুস্থ্য হয়ে আমাদের মাঝে আবার ফিরে আসে আল্লাহ্ আমাদের ডাক শুনেছেন আমার ছেলে এখন সম্পন্ন সুস্থ্য। দোয়া করি আমার ছেলেসহ সকল মা-বাবার সন্তানেরা যেনো ভালো থাকে।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: