
মোঃ শাহ্ জালাল।।
বৃহত্তর যশোর সমিতি, ঢাকা অত্যন্ত বেদনার সাথে জানাচ্ছে যে, বৃহত্তর যশোর সমিতি, ঢাকা'র সাবেক সভাপতি প্রফেসর ডা. চৌধুরী হাবিবুর রহমান গতরাতে ঢাকাস্থ বনানীর বাসায় ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন। তাঁর মৃত্যুতে বৃহত্তর যশোর সমিতি, ঢাকা মরহুমের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছে।সংক্ষিপ্ত জীবনী:
প্রফেসর ডা. চৌধুরী হাবিবুর রহমান: যশোরের কৃতি সন্তান, একজন স্বনামধন্য ও মহৎপ্রাণ চিকিৎসক ডাঃ চৌধুরী হাবিবুর রহমান ১৯৩৮ সালের ১৫ জানুয়ারী পিতার কর্মস্থল কোলকাতা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। পৈত্রিক বাড়ী যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলায়। পিতা মরহুম হেদায়েত আলী বেঙ্গল নাথপুর রেলওয়েতে চাকরি করতেন। ১৯৪৮ সালে তিনি চাকরি থেকে অবসরগ্রহণের পর পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ঝিকরগাছাতে চলে আসেন। পিতা ১৯৮২ সালে ইন্তেকাল করেছেন। মা মরহুমা মেহেরুন্নেসা একজন গৃহিণী ছিলেন। জনাব চৌধুরী হাবিবুর রহমান পিতা-মাতার ৪ সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয়। বড় বোন ও ছোট বোন যশোর থাকেন। ছোট ভাই হাফিজুর রহমান চৌধুরী বাঘারপাড়া কলেজের ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক। ডা. চৌধুরী হাবিবুর রহমানের স্ত্রী ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় গ.অ পাশ করেন। তাদের দুই সন্তান। বড় মেয়ে রিভা ইংল্যান্ড থেকে Architecture এ Graduation ও Masters করার পর বর্তমানে সেখানে কর্মরত। ছেলে আশিক চৌধুরী খড়হফড়হ ঝপযড়ড়ষ ড়ভ চযধৎসধপু থেকে অনার্স পাশ করে ইংল্যান্ডে চাকরি করছেন।শিক্ষাজীবন:
জনাব হাবিবুর রহমান ১৯৫৩ সালে ঝিকরগাছা এম. এল. হাই স্কুল থেকে গনিতে লেটার মার্কস নিয়ে ম্যাট্রিক প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ১৯৬৫ সালে তিনি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ M.B.B.S পাশ করে Assistant Sergeant হিসাবে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে চার বছর কাজ করেন। ১৯৬৯ সালে তিনি F.R.C.S পড়তে Scholarship নিয়ে ইংল্যান্ডে যান।পেশাগত জীবন:
F.R.C.S পাশ করার পর ১৯৭২ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডের বিভিন্ন হাসপাতালে Register, Senior Register Consultant হিসাবে কাজ করেন। এরপর দেশে ফিরে ১৯৭৮ সালে ৩১ আগস্ট হলিফ্যামিলি হাসপাতালে শৈল্য বিভাগের প্রধান হিসাবে যোগদান করেন। ২৫ বছর চাকরি করার পর ২০০৩ সালের ১৩ মার্চ অবসরগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকার বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে কর্মরত। General Surgery, Orthopedic এবং Urology তে ইংল্যান্ডের বিভিন্ন স্থানে কাজ করেন এবং দেশে এগুলির নিয়ে এখনও তিনি প্রাক্টিস করেন। জনাব হাবিবুর রহমান চিকিৎসা পেশা ছাড়াও Surgical Society, BMA, BPMPA এর সাথে জড়িত আছেন। বৃহত্তর যশোর সমিতির সাথে বহুদিন যাবৎ তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে তিনি এ সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।স্বদেশপ্রীতি:
যশোরের মানুষের প্রতি তাঁর ভালবাসা প্রবল। যশোরের মানুষ হিসাবে তিনি গর্ব অনুভব করেন। যশোরের যে কোন মানুষ তার কাছে সাহায্যের জন্য আসলে তিনি সকলকে সাধ্যমত সাহায্য ও সহযোগিতা করতে চেষ্টা করেন। এটা তিনি পেশার মাধ্যমে করেন আবার পেশার বাইরে থেকেও করেন। তিনি যখন যশোরের ঝিকরগাছার পৈত্রিক বাড়ীতে যান সেখানে হাজার হাজার মানুষকে ফ্রি চিকিৎসা করেন। যাদেরকে যশোরে থেকে চিকিৎসা করা সম্ভব নয় তাদেরকে তিনি ঢাকায় নিয়ে এসে ফ্রি চিকিৎসা করেন। যারা আর্থিকভাবে একটু দুর্বল তাদেরকে ফ্রি চিকিৎসা ছাড়াও অনেক সময় নিজের টাকা খরচ করে ঔষধ পত্রসহ অন্যান্য খরচও বহন করেন। জনাব রহমান যশোরে বিভিন্ন স্থানে স্কুল, কলেজ প্রতিষ্ঠাসহ বহু জনকল্যাণমূলক কাজের সাথে অংশগ্রহণ করেন। যশোর ওয়েবসাইট উন্নয়নেও তার অবদান রয়েছে। ডা. চৌধুরী হাবিবুর রহমান সব সময় মনে করতেন বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় যশোর যথেষ্ট পিছিয়ে আছে। যশোরকে এগিয়ে নিতে যদি সবাই একসাথে চেষ্টা করে তবে যশোর বাংলাদেশের একটি শ্রেষ্ঠ জেলা হিসাবে পরিচিতি পাবে।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: