লিখিত অভিযোগ দিয়েও ফল পাননি ভুক্তভোগী এলাকাবাসী; বন্ধ হয়নি জনবসতির সেই কয়লার চুল্লি

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৪:৩০

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৪:৩০

ছবি সমসাময়িক

আনোয়ার হোসেন,মনিরামপুর ।।

মনিরামপুরের কুলিপাশায় জনবসতিতে চুল্লিতে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি হচ্ছে। গত পাঁচমাস ধরে প্রকাশ্যে ৬টা চুল্লিতে এভাবে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। চুল্লির সৃষ্ট ধোঁয়ায় নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। গন্ধে অতিষ্ঠ জনজীবন। চুলায় কাঠ পোড়ানো বন্ধ করতে পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনকে লিখিত দিয়েছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। অভিযোগ পেয়েও দুই দপ্তরের কেউ জনদুর্ভোগ কমাতে এগিয়ে আসেননি। বরং কাজটি নিজেদের নয় বলে একে অপরকে দেখিয়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। এদিকে গত ৭ জুলাই আজকের পত্রিকায় 'জনবসতিতে কয়লার চুল্লি' শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। তখন মনিরামপুরের ইউএনও এবং পরিবেশ অধিদপ্তর যশোর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদের সাথে কথা বলে রিপোর্টে তাঁদের বক্তব্য ছাপা হয়। তাঁরা বিষয়টি দেখবেন বলে আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছিলেন। রিপোর্ট প্রকাশের দুইমাস পার হয়েছে। রিপোর্টের পর স্থানীয়রা দুই দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তারপরও বন্ধ হয়নি কাঠ পোড়ানো কাজ। বরং গত দুই মাসে দুটি চুলা বৃদ্ধি করা হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে আসা আমিনুর রহমান বাদশা নামে একব্যক্তি ৭-৮ জন শ্রমিক খাটিয়ে বড় ৬টি চুলায় কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির কাজ করছেন। ইত্যা গ্রামের শাহিন হোসেন ও স্থানীয় একটি চক্রকে ম্যানেজ করে উপজেলার কুলিপাশা এলাকায় ১৭ শতক জমি ভাড়া নিয়ে এ কাজ করছেন তিনি। কোন অনুমতি ছাড়াই প্রকাশ্যে কাজটি চালিয়ে যাচ্ছেন বাদশা। কুলিপাশা গ্রামের দুলাল দাস বলেন, রাতের বেলায় ওরা ধোঁয়া ছাড়ে বেশি। ফ্যান ছাড়লে ঘর ধোঁয়ায় ভরে যায়। তখন আর নিশ্বাস নেওয়া যায় না। ধোঁয়ার গন্ধে আমাদের প্রায় যায় যায় অবস্থা। জামাকাপড় থেকেও ধোঁয়ার গন্ধ বের হয়। আব্দুর রহমান নামে এক যুবক বলেন, চুলা থেকে আমাদের বাড়ি বেশ দূরে। দিনের বেলায় গন্ধ লাগে না। কিন্তু রাত হলে আমরাও গন্ধ পাই। দুলাল দাস বলেন, ইউএনও অফিস এবং পরিবেশ অধিদপ্তরে লিখিত দিছি। কোন কাজ হয়নি। পরিবেশ অধিদপ্তরে যোগাযোগ করিছি। তাঁরা বলেছে, একাজ আমাদের না। এটা ইউএনও দেখবেন। দুলাল আক্ষেপ করেন, এতদিন হলো কেউতো আমাদের দুঃখ বুঝল না। গ্রামবাসী আর কি করলে এই কাঠ পোড়ানো বন্ধ হবে। অভিযুক্ত আমিনুর রহমান বাদশা বলেন, বাজারে আমার ৩-৪ লাখ টাকা ছড়ানো আছে। এগুলো তুলতে পারলে কাজ বন্ধ করে দেব। মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হাসান বলেন, অভিযোগ পাইছি। কাজটি আমার দপ্তরের না হওয়ায় ব্যবস্থা নিতে পারছি না। এটা পরিবেশ অধিদপ্তরের কাজ। অভযোগের কপি আমি পরিবেশ অধিদপ্তরকে মেইল করেছি। সহকারী পরিচালকের সাথে মোবাইলে কথা বলেছি। ইউএনও আরও বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে আবারও কথা বলছি। তারা কাজ না করলে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে বিষয়টি জানাব। পরিবেশ অধিদপ্তর যশোর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদ বলেন, মনিরামপুরে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা বানানোর বিষয়টি জানা নেই। কোন অভিযোগও পাইনি। মনিরামপুরের ইউএনও আমাকে এই ব্যাপারে কিছু বলেছেন কিনা মনে আসছে না। বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: