মণিরামপুরের হাকিমপুর মাঠে ফুলেফলে ভরা সীম ক্ষেত: চাষিরা বাম্পার ফলনের আশাবাদী

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ২৮ আগস্ট ২০২১ ০৮:৪৩

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৮ আগস্ট ২০২১ ০৮:৪৩

ছবি সমসাময়িক
আনিছুর রহমান: যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ এলাকার হাকিমপুর মাঠে ফুলেফলে সমারহ আগাম জাতের উপশি ফলনশীল সীমের ক্ষেত। ফলে এবারে সীমে বাম্পার ফলনের আশাবাদী চাষিরা। এ দিকে সীম চাষের পূর্বে অল্প খরচে বানের উপর ঝিঙ্গার চাষ করেছিলচাষিরা। অল্প সময়ে ঝিঙ্গা চাষ শেষ হতেই ওই বানেই সীম চাষের উদোগ নেয় চাষিরা। জমি তৈরী ছাড়াই গত জৈষ্ঠ মাসের শেষের দিকে ওই বানের নীচ দিয়ে সীম বীজ রোপন করেন চাষিরা। আর্লী জাতের এই সীমের বীজ রোপনের ৪০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে ফুলফল চলে আসে। সাংবাদিক মাষ্টার আনিছুর রহমান গত ২৪ আগস্ট (মঙ্গলবার) পড়ন্ত বিকেলে রাজগঞ্জ বাজার থেকে পিঁচের রাস্তা ধরে ত্রিমোহিনী যাওয়ার পথিমধ্যে চোখের দৃষ্হাটি আসে হাকিমপুর গ্রাম সংলগ্ন রাস্তার পূর্ব পাশের মাঠ তথা হাকিমপুর হরিশপুর মাঠে প্রায় শত বিঘা জমির বানের উপর ঝিলিক মেরে দোল খাচ্ছে লাল সাদা ও হাল্কা গোলাপী ফুল। কাছে যেতেই চোখে পড়ে প্রতিটি ছোড়ের ফুলের নীচে ঝুলছে থল থল সীম। মাঠের ভীতরে নেমে সীম ক্ষেতের আইল দিয়ে সামনে এগুতেই দেখা মেলে ক্ষেতের মালিকদের। মালিকরা কেউবা কীটনাশক প্রয়োগে ব্যস্ত কেউবা সীম ওঠাতে ব্যস্ত সময় পার করছে। পাশের একটা ক্ষেতে চোখ পড়তেই দেখা মেলে এক মহিলার। কাছে যেতেই দেখা যায় কাচি দিয়ে সীমের ডোগা কাটছে। ঐ মহিলার সাথে কথা বলে জানা যায় সীম গাছের ওই ডোগায় কোন ফুলফল হয়না। যার কারনে ওই সকল সীমের ডোকা কেটে গরু ছাগলের খাদ্যের ব্যবস্থা করছি। আর একটুকু সামনে যেতেই দেখা মেলে সীম চাষি হাকিমপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক ও বাশারের সাথে, দেখা গেছে তারা ক্ষেতের সীম গাছে কীটনাশক স্প্রে করছে। কথা বলতে তারা জানাই, আন সিজনে সীমের চাষ করছি, তাই পোকার উপদ্রপ কিছুটা বেশি। দুই একদিন পর পর বিষ স্প্রে করতে হচ্ছে। রাজ্জাক আরো বলেন, আমি ৬২ শতক জমিতে সীম চাষ করেছি। খরচ প্রায় ১ লাক টাকা। আমি ফুল দেখে আশা করছি প্রায় দেড় লাখ টাকার সীম বিক্রি করতে পারবো। তিনি আরো জানান, আমি ২০/২৫ দিন ধরে সীম বিক্রি করছি। অসময়ের সীম তাই প্রতি কেজি ১শ ২০ থেকে দেড়শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে পেরেছি। অপর একটি সীম ক্ষেতে দেখা মেলে ও কথা হয় হরিশপুর গ্রামের রেন্টুর সাথে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আমি সীম চাষের পুর্বে এই ১২ কাঠা জমিতে ঝিঙ্গার চাষ করেছিলাম। সেখানে বান বানানোসহ চাষে ২ হাজার টাকা মত খরচ হয়েছিল। ঝিঙ্গা বিক্রি করেছিলাম প্রায় ৬ হাজার টাকা। পরে ওই ১২ কাঠা জমির বানের উপরে আমি সীম চাষ করেছি। সীম গাছের চেহারা ভাল। ফুল এসেছে প্রচুর ফলও ধরেছে। কিন্তু গাছের ফুল ঝরা কোন প্রকার বন্ধ করতে পারছি না। হরিশপুর গ্রামের অভিজ্ঞ চাষি সবজী নাজমুল হুদা রনির সাথে তিনি প্রতিবেদককে জানান, আমার মত এই মাঠে দুই তিন গ্রামের প্রায় অর্ধশত চাষি ( আনসিজনে) প্রায় শত বিঘা জমিতে আগামজাত উপশি ফলনশীল সীম অর্থ্যাৎ আর্লী জাতের সীম চাষ করেছে। অসময়ে সীম চাষ করাতে রোগ ব্যধি অনেকটা বেশি দেখা দিচ্ছে। কীটনাশক দমনের জন্য আমরা বাইসালফান ও নীল জাতীয় ঔষুধ প্রয়োগ করছি। বর্ষার মৌসুম তাই ছত্রাক নাশক হিসাবে (গাছ পঁচা রোগ) ব্যায়ার কোম্পানীর নাটিবো ব্যবহার করছি। এ বিষয়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, অসময়ে সীম চাষ হলেও সীম গাছ ফুলফল সব দিকে ভালো। আমি সব সময় সীম ক্ষেত দেখাশুনা করি। চাষিদের সাথে কথা বলি এবং পরামর্শ দিয়েছি। আমি আশা করছি সীম চাষে চাষিরা ভাল লাভবান হবে।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: