
বিশেষ প্রতিনিধি।।
বঙ্গবন্ধুর বিচার হয়েছে তাঁর জন্য। অথচ তাঁকে আমরা মনে রাখেনি। যশোরের কৃতি সন্তান এএফএম মহিতুল ইসলামের আজ মৃত্যু বার্ষিকী। ২০১৬ সালের ২৫ আগস্ট তিনি মারা যান। বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিগত সহকারী ছিলেন। তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার সাক্ষী হয়েছিলেন এবং এ ব্যাপারে থানায় পুলিশ কেস করেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ড মামলার বাদীও ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। ছিলেন মুজিব বাহিনীর সদস্য। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরে অস্ত্র সমর্পণ করেছিলেন এবং বাংলাদেশ সরকার অফিস শাখার সহকারী হিসাবে যোগদান করেন। মুখ্যসচিবের কার্যালয় থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে ফাইল বহন করার সময় রাষ্ট্রপতি তাকে পছন্দ করেছিলেন। তাকে রাষ্ট্রপতিদের ব্যক্তিগত সহকারী হিসাবে বদলি করা হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে একদল বাংলাদেশ সেনা কর্মকর্তা হত্যা করেছিলেন। তিনি তখন তাঁর বাসভবনে রাষ্ট্রপতির সহকারী ছিলেন। ১৯৭৬ সালের অক্টোবরে তিনি লালবাগ থানায় মামলা দায়েরের চেষ্টা করেন। খুনিরা তখনও ক্ষমতায় থাকায় দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে লাঞ্ছিত করেছিলেন। শেখ মুজিবের দল আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় থাকাকালীন ২ অক্টোবর তিনি মামলা করতে সক্ষম হন। এই মামলায় রায়টি ২০০৯ সালের নভেম্বরে প্রকাশ হয়। আওয়ামী লীগ সরকার ইনডেমনিটি আইনটি বাতিল করে দেয়। কারণ এ আইনটি ঘাতকদের বিচারের হাত থেকে রক্ষা করেছিল। দণ্ডিত দোষীদের মধ্যে পাঁচজনকে ২০১০ সালের জানুয়ারিতে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়েছিল। ১৯৭৫ সালে হত্যার চেষ্টায় মুহিতুল ইসলাম আহত হয়েছিল, তিনি হাসপাতাল থেকে তার গ্রামের বাড়ি যশোরের মণিরামপুরে পালিয়ে আসেন। তবে সেনাবাহিনী তাকে ধরে নিয়ে যায়। তাকে সেনা হেফাজতে নির্যাতন করা হয়েছিল। শেখ মুজিবের এপিএস শাহরিয়ার জেডআর ইকবাল ইসলামকে হেফাজত থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করেছিলেন। তিনি সরকারী চাকরি অব্যাহত রেখেছিলেন, ত্রাণ অধিদপ্তরের পরিচালক হয়েছিলেন। ২০০২ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল - জামায়াত-ই-ইসলামী জোট ক্ষমতায় আসার পর তাকে তার অফিস থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। মুহিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৫ আগস্ট ২০১৬ সালে মারা যান। যশোরের মণিরামপুরের কাশিমপুরে তাকে সমাহিত করা হয়।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: