
কেশবপুর প্রতিনিধি।। কেশবপুর উপজেলার পাঁজিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য খলিলুর রহমানের বিরুদ্ধে মুজিব শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাইয়ে দেয়ার কথা বলে ৬০ হাজার টাকা উৎকোচ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন বেলকাটি গ্রামের হেলাল বিশ্বাসের স্ত্রী জয়নব বেগম।
জয়নব বেগম বলেন, পরিবার নিয়ে বসবাস করার মতো আমার নিজস্ব কোনো জমি ও ঘর নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গৃহহীন ও ভূমিহীনদের ঘর দেয়ার বিষয়টি জানতে পেরে আমি স্থানীয় ইউপি সদস্য খলিলুর রহমানের শরনাপন্ন হন। তার পরামর্শে আমার ও আমার মা রিজিয়া বেগমের (৬০) নামে দুটি ঘরের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তার কাছে জমা দিই। এর কিছুদিন পর মেম্বর খলিলুর রহমান আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে জানায় চারশ’ জন ঘর পাওয়ার আবেদন করলেও তিনি ভূমি অফিসের কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে আমিসহ ১৩ জনের ঘর পাওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করেছেন।
জয়নাব অভিযোগ করে বলেন, ঘরের রেজিস্ট্রি প্রক্রিয়া চলছে তাই টাকা না দিলে ঘর পাওয়া যাবে না বলে ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন। আমি তাকে টাকা দিতে পারবো না বলে অপারগতা প্রকাশ করলে তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হন। পরে আবারও আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকা না দিলে ঘর অন্যদের নামে বরাদ্দ করা হবে জানালে বাধ্য হয়ে তার প্রস্তাবে রাজি হই। পরে স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে সুদে নিয়ে তাকে ৬০ হাজার টাকা দিই। টাকা নেয়ার সময় তিনি বিষয়টি কাউকে জানালে ঘরের বরাদ্দ বাতিল করা হবে বলে হুমকি দিলে আমি ভয়ে কাউকে জানাইনি। গত ১৪ আগস্ট পাঁজিয়া ইউনিয়নে ৪৪ টি পরিবারকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর ও জমি হস্তান্তর করা হয়। এসময় ওই তালিকায় নাম না থাকায় খলিলুর রহমানের কাছে টাকা ফেরৎ চাই। টাকা ফেরৎ চাওয়ায় খলিলুর রহমান তাদেরকে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। নিরুপায় হয়ে তারা প্রতিকারের আশায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ অস্বীকার পাঁজিয়া ইউপি মেম্বর খলিলুর রহমান বলেন, দলীয় কোন্দলের জেরে প্রতিপক্ষ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। ঘর দেয়ার কথা বলে টাকা নেয়া বা হুমকির ঘটনার সাথে আমার সম্পৃক্ততা নেই।
পাঁজিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মুকুল বলেন, অর্থনৈতিক লেনদেনের বিষয়টি জানা নেই।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইরুফা সুলতানা বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসের জন্য ১৪ আগস্ট ৪৪ জনের কাছে ঘরের চাবি ও কাগজপত্র বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বারের তালিকা বিবেচনা করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাদ্দ দেন। ঘর পেতে চাঁদাবাজির বিষয়টি অবগত নই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এম এম আরাফাত হোসেন জানান, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রায়ণ প্রকল্পটি আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। এখানে কেউ অনিয়ম-দুর্নীতি করলে ছাড় দেয়া হবে না। ঘর পেতে ঘুষ আদায়ের অভিযোগটি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে প্রমাণিত হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: