
মণিরামপুর প্রতিনিধি।।
মণিরামপুর-কপালিয়া সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হয়েছিল দুই বছর আগে। ২১ কি.মি. সড়কটির সব অংশে কার্পেটিং ও ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন হলেও ফেলে রাখা হয়েছে নেহালপুর বাজারের প্রায় ২৩৭ মিটার রাস্তা। ওই অংশের খোয়া ও পিচের কাজ না হওয়ায় বর্ষায় কাদা পানি জমে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কাদায় তলিয়ে যাচ্ছে পণ্যবাহী পিকআপ। উল্টে পড়ছে ভ্যান ইজিবাইক। রোববার (২৫ জুলাই) সকালে এক দুধ বিক্রেতার কন্টিনারে দুধ ভর্তি ভ্যান উল্টে অনেক দুধ পড়ে কাদায় মিশে গেছে। গেল দুই বছর ধরে সড়কটিতে চলাচলকারীরা এভাবে চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন। ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতারা। সংস্কারের অভাবে ৫-৭ বছর বেহাল হয়ে পড়ে ছিলো মণিরামপুর-কপালিয়া ভায়া কালিবাড়ি সড়কটি। এলাকাবাসীর দাবির মুখে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ নেন। প্রায় ৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তাটি প্রশস্তকরণের কাজ শুরু হয় দুই বছর আগে। রাস্তার দুইধারে মাটি ফেলে উচুঁ করে পাঁচ মিটার চওড়া রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে ছয়মাস আগে। কিন্তু নেহালপুর বাজারের মুল অংশে কাজ না করে ফেলে রাখা হয়েছে। মণিরামপুর সদরের সাথে পূর্ব এলাকার লক্ষাধিক মানুষের যোগাযোগের একমাত্র সড়ক এটি। খুলনা ও অভয়নগর হয়ে মণিরামপুরে আসা পথচারীরা সংক্ষিপ্ত পথ হিসেবে এই সড়কটি ব্যবহার করেন। সড়কটির মাত্র ২৩৭ মিটার কাজ পড়ে থাকায় অন্য এলাকা বাদেও নেহালপুর ও মনোহরপুর ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ ভোগান্তিতে রয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন দোকানিরা রাস্তার দুইধার দখল করে দোকান বসানোয় হেঁটে পার হতেও মানুষকে কষ্টে পড়তে হচ্ছে। মণিরামপুরের পূর্বাঞ্চলের সর্ববৃহৎ বাজার নেহালপুর। সপ্তাহে সোম ও বৃহস্পতিবার এখানে হাট বসে। হাটের দিনে বিভিন্ন ব্যবসায়ী, ক্রেতা-বিক্রেতাসহ হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়। রাস্তায় কাদা হওয়ায় ভোগান্তি পড়তে হয় হাটে আগতদের। রাস্তার এই অংশটির সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি ভুক্তভোগীদের। নেহালপুর বাজার এলাকার সোহরাব হোসেন বলেন, বাজারের ভাঙা ব্রিজ হতে কলেজ মোড় পর্যন্ত ৬০০-৭০০ ফুট সড়কে কোন রকম খোয়া দিয়ে ফেলে রাখা হয়েছে। দুই পাশে মাটি দিয়ে উঁচু করায় মূল রাস্তা নিচু হয়ে গেছে। বৃষ্টির সময় রাস্তায় পানি জমে হাঁটু কাদা হচ্ছে। চলাচলে খুব অসুবিধা। ইঞ্জিনিয়ার অফিসসহ বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করেও কাজ হচ্ছে না। রাস্তা সংস্কারের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্ট ম্যানেজার ইঞ্জিনিয়ার মতিয়ার রহমান বলেন, নেহালপুর বাজারের ১৫০ মিটার রাস্তার ঢালাই না পিচের কাজ হবে তা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতা ছিল। অবশেষে ঢালাইয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঈদের ছুটির কারণে কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। সোমবার থেকে কাজ শুরু হবে। মতিয়ার রহমান বলেন, এই অংশের কাজ হলেও ওই অঞ্চলের মানুষের ভোগান্তি শেষ হচ্ছে না। নেহালপুর বাজারের অংশে একটি ভাঙা ব্রিজ রয়েছে। ব্রিজসহ ওই সড়কের ৮৭ মিটারের ঢালাইয়ের কাজ অন্য ঠিকাদারের। সেই অংশের কাজের এখনো অনুমোদন হয়নি। সড়কটির সংস্কার কাজ দেখভালের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলী গাউসুল আজম বলেন, নেহালপুর বাজারে শ্রী নদীর উপর একটি ব্রিজ রয়েছে। ব্রিজসহ ৮৭ মিটার রাস্তার কাজের এখনো অনুমোদন মেলেনি। বর্ষার মৌসুমে ব্রিজের কাজ শুরু হচ্ছে না। এছাড়া বাজারের ১৫০ মিটার ঢালাইয়ের কাজের বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা হয়েছে। তাঁরা দ্রুত কাজ শুরু করবেন। মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী সানাউল হক বলেন, নেহালপুর বাজারের অংশের রাস্তায় কার্পেটিং না হয়ে ঢালাই হবে। কাজের অনুমোদনের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে কাজ শুরু হবে।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: