
তাজাম্মূল হুসাইন, মণিরামপুর: ভ্যান চালিয়ে হোটেল ও চায়ের দোকানে পানি দিয়েই জীবিকা নির্বাহ করে চলেছেন সীতা বিশ্বাস (৫২) নামের এক নারী। তিনি ২৫ বছর এভাবেই পানি টেনে দিনাতিপাত করছেন। আজও জোটেনি ভিজিডি-ভিজিএফ কিংবা সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা।
খোঁজ খবর নিয়ে জানাযায়, সীতা বিশ্বাস যশোরের মণিরামপুর পৌরশহরের ভগবান পাড়ায় বসবাস করেন। সীতার সাথে পার্শ্ববর্তী কেশবপুর উপজেলার গড়ডাঙ্গা গ্রামের সুনীল বিশ্বাসের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করায় ২৫ বছর আগে তিন সন্তানকে নিয়ে স্বামীর সংসার ছেড়ে পিতৃলয়ে চলে আসেন সীতা।
সীতা বিশ্বাস বলেন, বিয়ের পর দুই মেয়ে এবং এক কন্যা সন্তান জন্মের পর স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করায় বাবার সংসারে চলে আসেন তিনি। কিন্তু বাবাও ছিলেন হতদরিদ্র। তাই তিন সন্তানের দূখে দু’বেলা দু’মুঠো অন্ন (ভাত) জোগাতে জীবিকার তাগিদে জীবন সংগ্রামে নেমে পড়েন। প্রথম অবস্থায় গৃহস্থলি পরিবারের ঝিঁয়ের কাজ করলেও সন্তানদের মূখে খাবার তুলে দেওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।
এক পর্যায় বাজারে হোটেল এবং চায়ের দোকানে কায়ে (কোলে) করে পানি দেওয়ার কাজ শুরু করেন। বিনিময়ে প্রতি কলস পানি দেওয়া বাবদ ২ টাকা পারিশ্রমিক পান তিনি। সেই থেকে আজও রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে এই কাজ করে চলেছেন সীতা বিশ্বাস।
এ প্রতিবেদকে তিনি আরও বলেন, বছর দু’য়েক আগে পা পিছলে পড়ে গিয়ে পায়ে আঘাত পেয়ে পানি দেওয়ার কাজে ছেদ (বিচ্ছিন্ন) ঘটে। পরে প্রতিবেশির কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে দুই হাজার টাকায় একটি ভ্যান এবং তিন হাজার টাকায় ৮টি ঘড়া (কলস) কিনে ভ্যান চালিয়ে আবারও পানি সরবরাহ শুরু করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে সীতা বিশ্বাস দুঃখ করে বলেন, স্বামী থেকেও নেই, তাই বিধবাভাতা পান না। শ্বশুর বাড়ি কেশবপুর হওয়ায় তিনি ভিজিডি-ভিজিএফ সহায়তা থেকেও বঞ্চিত। তবে, এবার তাদের ওয়ার্ড কাউন্সিলর ৫০০ টাকা এবং কিছু চাউল দিয়েছেন।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: