
মণিরামপুর (যশোর)প্রতিনিধি।।
সীমাহীন দুর্নীতি,অনিয়ম ও দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ এনে যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ শহীদ স্মৃতি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষককে বাদ দিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সহকারী শিক্ষক আক্তারুজ্জামান শিবলীকে অভিযোগ স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দের। গত ৫ জুলাই-২০২১ তারিখে বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি সোহেল রানা স্বাক্ষরিত বরখাস্তাদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বিদ্যালয়ের জমিতে ৯টি দোকান ঘরের অগ্রিম ভাড়া বাবদ ৯লাখ টাকা, ওই দোকান ঘরের ভাড়া আদায় বাবদ ৫লাখ ও শিক্ষার্থীদের টিউশন ফিসের ১ লাখ ৪৬ হাজার টাকা স্কুলের জেনারেল ফান্ডে জমা না দিয়ে আতœসাৎ করেছেন। এ ছাড়াও বিদ্যালয়ের গৃহ রং না করে ৪৯ হাজার টাকা, মাঠে বালি ভরাটের ২ লাখ টাকা এবং অবসরপ্রাপ্ত বিদায়ী প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাকিমের দানকৃত বিদ্যালয়ের নামে রাখা স্থায়ী সঞ্চয়পত্র (এফডিআর) এর ৪ লাখ টাকা ও তার লভ্যাংশ ২ লাখ টাকা উত্তোলন করে সমুদয় টাকা আতœসাৎ করেছেন। এদিকে রাজগঞ্জ শহীদ স্মৃতি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমকে অর্থ আতœসাৎ, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে চাকুরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করাকে কেন্দ্র করে বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য, শিক্ষক প্রতিনিধি, সাধারন শিক্ষক-কর্মচারী এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির পরষ্পর বিরোধী নানা মন্তব্য পাওয়া গেছে। বিদ্যালয়ের সভাপতি সোহেল রানা এ প্রতিনিধিকে জানান, প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বিদ্যালয়ের বিভিন্ন খাত থেকে বিগত কমিটির সভাপতির সহায়তায় প্রায় ২৪ লাখ টাকা বিদ্যালয়ের সাধারন ব্যাংক একাউন্টে জমা না দিয়ে আতœসাৎ করেছেন। এ বিষয়ে চাকুরি বিধি অনুযায়ী কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করার পর সন্তোষজনক জবাব পাওয়া না যাওয়ায় এবং আতœসাৎকৃত টাকা প্রতিষ্ঠানের তহবিলে জমা না দেওয়ায় তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক আক্তারুজ্জামান শিবলীকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পক্ষান্তরে বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক দাবী করেন, স্কুলের এডহক কমিটির সভাপতি সোহেল রানা গত ৬/৫/২০২১ তারিখে প্রথম, ২০/৫/২০২১ তারিখে দ্বিতীয় এবং ১/৬/২০২১ তারিখে তৃতীয় দফা কারণ দার্শাও নোটিশ প্রদান করেন। আমি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে যথাযথভাবে তিনটি কারণ দর্শাও নোটিশের জবাব দিয়েছি। এরপর দেশে করোনা পরিস্থিতি গুরুত্বর হওয়ার পর সরকারি ভাবে লকডাউন জোরদার করার পর প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের সভাপতি সোহেল রানা প্রতিষ্ঠান বন্ধের এই প্রিয়ডে সম্পূর্ণ ব্যক্তি আক্রোশে অন্যায়ভাবে আমাকে গত ৫/৭/২০২১ তারিখে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছেন। বিষয়টি অত্যান্ত অমানবিক । এদিকে এডহক কমিটির অভিভাবক সদস্য মিজানুর রহমান ও শিক্ষক প্রতিনিধি ফজলুরর রহমান এহেন পরিস্থিতিতে তাদের সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলেন, প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বিগত কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে স্কুলের মাঠ ভরাট করা, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, স্কুলের জমিতে দোকান নির্মাণ করে বরাদ্দ দিয়ে, স্কুলের নতুন ভবন নির্মাণসহ ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি গোলাম রসুল চন্টা বলেন, আমি সভাপতি থাকাকালিন ম্যানেজিং কমটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম সকল উন্নয়ন কার্যক্রম ও ব্যয় করেছেন। বর্তমান সভাপতি যেটা করছেন এ নিয়ে আমার কিছুই বলার নেই।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: