মণিরামপুর আলু চাষে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন কৃষক- জিয়ার

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ৫ মার্চ ২০২১ ১৩:৫২

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৫ মার্চ ২০২১ ১৩:৫২

ছবি সমসাময়িক
  উত্তম চক্রবর্তী,মণিরামপুর(যশোর)অফিস॥  রাজগঞ্জে চলতি বছরে গোলআলুর চাষ করে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে জিয়ার নামের এক চাষি। আলুর দাম কম হওয়ায় বীজ আলুসহ সব আলুই কোল্ড স্টোর জাত করেছেন। সরেজমিনে জানা যায়, যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ এলাকার হরিহরনগর ইউনিয়নের ডুমুরখালী গ্রামের মোসলেম আলী সরদারের ছেলে যুবক চাষি জিয়াউর রহমান এ বছর ডুমুরখালী ও দশআনি গ্রামের পিঁচের রাস্তা সংলগ্ন মাঠে ২৯ বিঘা জমিতে গোলআলুর চাষ করেছে। সম্প্রতি ঐ ২৯ বিঘা জমির আলু তুলতে ও বস্তাবন্ধি করতে স্থানীয় পুরুষ ও মহিলা শ্রমিকদের কাজে লাগিছে। দেখা গেছে মহিলা শ্রমিকরা ক্ষেত থেকে আলু কুড়িয়ে ঝুড়িতে করে এনে কয়েক স্থানে গাঁদা করে রাখছে। আর কেউ কেউ সেখান থেকে বাছাই করে ৬০ কেজি ওজনের বস্তাবন্ধি করে রাস্তার উপর সারিবদ্ধ করে রাখছে। সেখান থেকে পাঠানো হচ্ছে কোল্ড স্টোরে। আলু চাষি জিয়াউর জানায় ২৯ বিঘা জমিতে প্রায় ২শ মন বীজ আলু বপন করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজশাহী কৃষি বিশ্ববিদ্যালযের কৃষি গবেষক ড: মঞ্জুরুল ইসলামের মাধ্যমে বাংলাদেশ টিস্যু কালচারালের উন্নত মানের বীজ সংগ্রহ করা হয়েছিল। ঐ বীজ আলাদা ভাবে বপন করে প্রায় ৩শ মন ভিত্তি আলুর বীজ উৎপাদন করা হয়েছে। ভিত্তি বীজ গুলো সম্পূর্ণ  আলাদা করে বস্তাবন্ধি করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, এবারে আলুই রোগব্যধি খুবিই কম দেখা দিয়েছে। দুই একটা আলুই দাগ দেখা দিয়েছে। আলুর চেহারাই যেন ঝলক মারছে। বাছাইতে খুব কম আলই বাদ যাচ্ছে। প্রতি কাঠা জমিতে ৫ থেকে সাড়ে ৫ মন পর্যন্ত আলু ফলন হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে ১শ মন এর উর্দ্ধে আলু পাওয়া গেছে। সর্বর্মোট ২৯ বিঘা জমিতে উৎপাদন হয়েছে প্রায় সাড়ে ২৭শ মন আলু। সব আলুই ৬০ কেজি করে বস্তাবন্ধি করা হয়েছে। আলু উঠানোর মুখে দাম কম থাকায় বিক্রি না করে বীজ আলুসহ সকল (১২শ বস্তা) গোলআলুই ঝিকরগাছার মালঞ্চি ও টাউয়ার কোল্ড স্টোরে গুদাম জাত করা হয়েছে। আলু চাষের প্রথম থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত সর্বমোট খরচ হয়েছে প্রায় পৌনে ৯ লাখ টাকা। উল্লেখ্য আলু চাষি জিয়াউর গত বছর ১৬ বিঘা জমিতে গোলআলুর চাষ করেছিল। আলু উঠানোর সময় দাম কম থাকায় বিক্রি না করে সেদিনও ৭শ বস্তা আলু কোল্ড স্টোরে রাখেছিল। স্টোর থেকে বের করে বীজ আলু হিসাবে প্রতি বস্তা ২৫শ টাকা দরে ২শ বস্তা বিক্রি করা করেছিল। বাদ বাকী ৫শ বস্তা বাজারে বিক্রি করেছিল। যা প্রতি বস্তা ১১শ টাকা দরে বলে তিনি প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন।

আলু চাষি জিয়াউর রহমান প্রতিনিধিকে জানান, আমি বিগত কয়েক বছর ধরে গোলআলৃুর চাষ করে আসছি। প্রচুর পরিমান আলুুর ফলন পেয়ে আসছি। কিন্তু আলু উঠানোর মহুত্বে দাম খুবিই কম থাকে। তাই আমি কম দামে আলু বিক্রি না করে কোল্ড স্টোরে গুদামজাত করে থাকি। দাম বৃদ্ধি পেলে স্টোর থেকে বের করে বিক্রি করি। একই উদ্দেশ্যে এ বছরও আমি বীজ আলুসহ প্রায় সাড়ে সাতাশ শত মন আলু কোল্ড স্টোরে গুদামজাত করেছি। আসা করছি প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বীজ আলু ও বাজারজাত আলু অধিক মূল্যে বিক্রি করতে পারবো। আর সেটাই যদি করতে পারি তাহলে প্রচুর পরিমান লাভবান হবো। ফলে আগামী বছর আরো বেশি পরিমান জমিতে গোলআলুর চাষ করবো বলে আমি আশা করছি। তিনি আরো বলেন, আমার আলু চাষে সব সময় দেখবাল করেছেন উপসহকারী কৃষি অফিসার প্রদীপ কুমার। এ বিষয়ে কথা হয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হীরক কুুমার বিশ্বাসের সাথে তিনি প্রতিনিধিকে বলেন, এ বছর আলু চাষে রোগব্যাধি কম ছিল। আমি ঐ চাষির আলু চাষের কথা শুনেছি। আমার মাঠ কর্মিরা তার চাষের দিকে সব সময় খেয়াল দিয়েছে। আমাদের উপদেশে খুব ভাল ফলন পেয়েছে। আসা করছি আগামীতে ঐ চাষি অরো বেশি পরিমান জমিতে আলু চাষ করবে।




আপনার মূল্যবান মতামত দিন: