
যশোর মণিরামপুর উপজেলার হরিহরনগর ইউনিয়নের এনায়েতপুর গ্রামের মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা আঃ মালেকের ছেলে আ আলিম যখন হঠাৎ সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যায় তখন আল আমিন খুব ছোট।বাবা আ আলিমের মৃত্যুতে আল আমিন ও পরিবারের মাঝে নেমে আসে দারিদ্র্যতা নামক আমাবস্যা রাত।আয়ের উপযোগী কেউ না থাকায় বিপকে পড়ে আল আমিনের মা।বাড়ীতে সেলাইয়ের কাজ করে আল আমিন ও ছোট ভাই কে নিয়ে কোনরকম খেয়ে না খেয়ে দিন পার করতে হয়েছে।শত কষ্ট যেন আল আমিন কে থামানো যায়নি লেখাপড়া থেকে। আজ আল আমিন লেখাপড়ার পাশাপাশি পল্লী চিকিৎসক হয়ে নিজ এলাকায় মানুষের সেবা করে চলেছে।দারিদ্র্যতা পিছু না ছাড়লেও আল আমিন বেশ সুখী পরিবারকে নিয়ে। আল আমিন এক বুক কষ্ট নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছিলো একটু থাকার উপযোগী ঘর নির্মাণের আশায় বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা,সমাজের বিত্তবান শ্রেনীর মানুষের নিকট। এমনকি দাদা আ মালেক বীর মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার সুবাদে সরকার ঘোষিত ঘর পেতেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ বিভিন্ন দপ্তরে। সেখানেও আল আমিন ব্যার্থ হয়ে চোখের পানি ফেলে আপসোস করে বলেছিলো কি লাভ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান পরিচয়ে পরিচিত হওয়ার। যেখানে একবেলা খেতে পায় না, একটু থাকার জন্য কারো সহায়তা পায় না।বাবা মারা যাওয়ার পূর্বে ২ শতক জমি ক্রয় করে রেখে যায়। সেখানে টিনের বেড়া দিয়ে এক রুম ঘর নির্মাণ করে কোন রকম রাত পার করে চলেছে পরিবার নিয়ে। আকাশে মেঘ জমতে শুরু করা মাত্র যেন সেই মেঘের গর্জন আল আমিনের পরিবারের সবার বুক থেকে শুরু হয় এই বুঝি ঘর খানা এবার যাবে নষ্ট হয়ে।শেষ আশ্রয় ঘর খানা আকড়ে বসে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কেউ খোজ রাখেনি। অবশেষে খোজ নিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ধর্ম বিষয়ক উপকমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য মণিরামপুর উপজেলার দানবীর নামে পরিচিত এস এম ইয়াকুব আলী ও দেশ ব্যাপী মানবীক ডাক্তার নামে সবার প্রিয় মানুষ ডাঃ মেহেদী হাসান।এস এম ইয়াকুব আলী বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান আল আমিনের বিষয় তথ্য সংগ্রহ করে তার কষ্টের কথা গুলো শুনলেন।আল আমিন মানবতার ফেরিওয়ালা এসএম ইয়াকুব আলী নিকট ঘর নির্মাণের জন্য তিন হাজার ইট ক্রয়ের কথা বললে সার্বিক বিষয় উপলব্ধি করে তাত্ক্ষণিক ভাবে চার হাজার ইট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।গতকাল শুক্রবার সকালে আল আমিনের নিকট দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চার হাজার ইট পৌঁছে দিয়েছেন এবং ঘর নির্মাণে আরো সহায়তা প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন মানবিক এসএম ইয়াকুব আলী।
ঘর নির্মাণের ইট পেয়ে আল আমিন আবেগ আপ্লূত কন্ঠে বলেন,"মানুষের শুধু টাকা থাকলে হয়না একটা সুন্দর মন থাকতে হয় তাহলে দেশ ও জাতির জন্য মঙ্গল হয়"আর বলেন আমার দাদা আব্দুল মালেক ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেকের পুত্র আমার বাবা আব্দুল আলিম গত ৫ বছর ৬ মাস আগে তিনি হঠাৎ মারা যান। ছোট একটা টিন দিয়ে ঘেরা মাটির ঘরে ৫ জনের বসবাস আমাদের। ২টা রুমের জন্য আমি স্থানীয় এমপি প্রতিমন্ত্রী স্বপন বাবু ও অন্য আরো রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কাছে দারস্থ হয়েছিলাম এমনকি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (UNO) বরাবর ও আবদেন করেছিলাম।কিন্তু কেউ কোন সাহায্য করেনি সেটা সরকারিভাবে হোক বা ব্যক্তিগতভাবে হোক।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর দেওয়ার কথা ছিলো ঐ তালিকায় আমাদের নাম নেই। কিছুদিন আগে সরকার গরীব মানুষদের ঘর দিলো সেটা থেকেও আমরা বঞ্চিত।
এমন একটা কষ্টের কথা ইয়াকুব আলীকে জানালে ইয়াকুব আলীর কাছ থেকে কি হেল্প লাগবে ইয়াকুব আলী ভাই জানতে চান। তখন আমি তিন হাজার ইট চাইলে তিনি জানতে চাইলেন তিন হাজার ইট দিয়ে কি হবে।আমি বলেছিলাম দুই রুম ঘর নির্মাণ করবো। আর ইট পেলেই বাকিটা নিজে করে নিতে পারবো কষ্ট করে। এটা শোনার পর গত শুক্রবার ইয়াকুব আলী আমার বাড়ীতে চার হাজার ইট পাঠিয়ে দিয়েছেন।আমি চিরকৃতজ্ঞ এস এম ইয়াকুব আলী ও ডা মেহেদী হাসানের নিকট। তারা জন প্রতিনিধি না হয়েও উপজেলাব্যাপী অসহায় মানুষের সেবা করে চলেছেন ২০০৯ সাল থেকে।এসএম ইয়াকুব আলী'র মতো মানবিক মানুষ জনপ্রতিনিধি বা মণিরামপুরের এমপি নির্বাচিত হলে অসহায় মানুষের খুব উপকার হবে।
রাশেদ আলী, মণিরামপুর।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: