অলিয়ার রহমান, কেশবপুর প্রতিনিধিঃ
যশোরের কেশবপুরে মালিকানা জমির উপর দিয়ে ইটের সলিং রাস্তা নির্মাণ কাজে বাধা দেওয়ায় নুরুজ্জামান (৩৫) নামের এক যুবক গুরুত্বর আহত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (২৬ জুন) সকালে উপজেলার মির্জাপুর গ্রামে। ঘটনাটি উল্লেখ করে আহতের চাচা আঃ রহিম মোড়ল (৫০) বাদী হয়ে ওই রাস্তা নির্মাণ প্রজেক্টের সভাপতি উপজেলার সরফাবাদ গ্রামের রুহুল কুদ্দুসের ছেলে গোলাম রসুল আলিফ (২৩) ও তার ভাই আব্দুস সালাম মোড়ল (৪২) এবং মির্জাপুর গ্রামের মৃত আঃ খালেক মোড়লের ছেলে হাবিবুর রহমান (৪২) এর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
থানা অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুর উপজেলার গোলাঘাটা হাই স্কুল থেকে মির্জাপুর খাঁনজাহান আলী দিঘীর পাড়ে যাওয়ার পথে আঃ করিমের বাড়ি পর্যন্ত অনুমান ৩৫০ ফুট ইটের সলিং রাস্তা নির্মাণের জন্য সরফাবাদ গ্রামের রুহুল কুদ্দুস বরাদ্দ পান এবং অত্র প্রজেক্টের তিনিই সভাপতি। ২৬ জুন সকালে ইটের সলিং রাস্তা নির্মাণ করার সময় প্রজেক্টের সভাপতির মেঝভাই আব্দুস সালাম মোড়ল (৪২) মির্জাপুর গ্রামের আঃ রহিম মোড়লের কাছে নগদ দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করেন। দুই লক্ষ টাকা প্রদান করলে রাস্তাটি একপাশ দিয়ে করে দিবেন বলে জানান।
রহিম মোড়ল চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করাই সালাম মোড়লের সাথে তার কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সালাম মোড়ল তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করেন। ওইসময় গালিগালাজের কারণ জিজ্ঞাসা ও প্রতিবাদ করলে সালাম মোড়ল ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে প্রজেক্টের সভাপতির ছেলে গোলাম রসুল আলিফ কে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে ঘটনাস্থলে ডেকে নিয়ে আসেন। সালাম মোড়লের কথামতো গোলাম রসুল রহিম মোড়লের ভাইপো নুরুজ্জামান (৩৫) কে বেধড়ক মারপিট ও মাথায় স্বজোরে দায়ের কোপ মারলে সে গুরুতর রক্তাক্ত জখম অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। ওইসময় তার ডাক-চিৎকারে এলাকাবাসি ঘটনাস্থলে ছুটে এসে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় নুরুজ্জামান কে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন। সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছে।
মারপিট ও দায়ের কোপে আহত হওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত গোলাম রসুল আলিফের সাথে ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, মারপিট করার সময় সে হয়তো দায়ের উপরে পড়ে গেছে।
চাঁদা দাবি ও মারপিটের বিষয়ে আব্দুস সালাম মোড়লের সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি বলেন, রাস্তা নির্মাণের সময় নুরুজ্জামান অহেতুক বাধা দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। আমি বাধা দেওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে সে আমাকে প্রথমে মারপিট করেন। খবর পেয়ে ভাইপো আলিফ সেখানে এসে রাগের মাথায় নুরুজ্জামানকে মারপিট এবং রাস্তা নির্মাণ শ্রমিকদের মাটিতে পড়ে থাকা দা দিয়ে কোপ মেরেছে। রাস্তা নির্মাণের সময় তাদের কাছে কোন চাঁদা দাবি করা হয়নি, তারা মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ করছেন।
এ বিষয়ে রাস্তা নির্মাণ কাজের সভাপতি রুহুল কুদ্দুসের মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, সরকারি রাস্তার রেকর্ডের সম্পত্তির উপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে, নির্মাণাধীন রাস্তার উভয় পাশে তাদের জমি রয়েছে। মারিপিটের সময় আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম না। পরে শুনেছি আমার ছেলে নাকি মারপিট করেছে।
এ ব্যাপারে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ জহিরুল আলম বলেন, রাস্তা নির্মাণ নিয়ে এক যুবক আহত হওয়ার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।#
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: