অনলাইন নিউজ ডেস্ক।।
বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেল থেকেই বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়। অনেকে উল্লেখ করেন, বানানের ভুল শুধরে দেওয়ার দায়িত্ব কি প্রধানমন্ত্রীর? এমন ভুল চোখে পড়ায় আয়োজনের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বজ্ঞান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।

সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘মুজিববর্ষের এরকম ভুল বানানই প্রমাণ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গুরুত্বপূর্ণ কাজের দায়িত্ব যাদের হাতে দিয়েছেন তারা অনেকটাই অযোগ্য।’
বাংলাদেশ জার্নালিজম স্টুডেন্টস কাউন্সিলের (বিজেএসসি) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আরিফুল ইসলাম আরিফ তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, ‘বানান ভুলের তদারকিও কি প্রধানমন্ত্রীকেই করতে হবে! এত লোকজন তাহলে করেটা কী? এরকম গুরুত্বপূর্ণ জায়গাতেও বানান ভুল!’
ফেসবুকে একজন লিখেছেন, এতো বড় আয়োজনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সামনে ডায়াসের এই একমাত্র ছোট্ট লেখাটাও দেখার কি কেউ ছিল না?
আরেকজন লেখেন, ‘মুজিবর্ষ’ নাকি মুজিব বর্ষ?!! এতগুলো মানুষের কারও চোখেই পড়ল না?? রাষ্ট্রের এমন গুরুত্বপূর্ণ আয়োজনের দায়িত্বে যারা থাকেন, তারা কি উগান্ডা থেকে পড়ালেখা করে আসছেন নাকি। তাদের নিকট থেকে এমন ভুল আশা করা যায় না।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘মুজিব বর্ষকে মুজিবর্ষ লিখলে সেটি ভুল হবে। এভাবে লেখা যায় না।’
এদিকে বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তিতে সারা দেশের মানুষকে শপথ বাক্য পাঠ করিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা থেকে এ শপথ পাঠ করান প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় দেশের বিভাগীয় জেলা, জেলা ও উপজেলা স্টেডিয়াম ও বিজয় দিবসের নির্ধারিত ভেন্যু থেকে সাধারণ মানুষ জাতীয় পতাকা হাতে শপথ বাক্য পাঠ করেন।
এর আগে বিকাল সাড়ে ৪টায় প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠানস্থলে আসেন। এরপরই জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। কিছুক্ষণ পরেই জাতীকে শপথ করাতে প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে উঠেন।এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন তার ছোট বোন শেখ রেহানা।
বিকাল পৌনে ৫টায় প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি সারা দেশের সঙ্গে যুক্ত থেকে শপথ বাক্য পাঠ করান। দেশের সব বিভাগ/জেলা/উপজেলা স্টেডিয়াম/মহান বিজয় দিবসের নির্ধারিত ভেন্যু থেকে শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) চিঠি পাঠিয়ে এই শপথের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বিজয় দিবসের দিনে দেশবাসীকে সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের যে শপথ পাঠ করান প্রধানমন্ত্রী তা হলো-
“জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। বিশ্বের বুকে বাঙালি জাতি প্রতিষ্ঠা করেছে তার স্বতন্ত্র জাতিসত্তা।
আজ বিজয় দিবসে দৃপ্তকণ্ঠে শপথ করছি যে, শহিদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না- দেশকে ভালোবাসব, দেশের মানুষের সার্বিক কল্যাণে সর্বশক্তি নিয়োগ করব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আদর্শে উন্নত, সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার সোনার বাংলা গড়ে তুলব।
মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদের সহায় হোন।”