03/18/2025 পটিয়ায় সাহিত্য বিশারদের মৃত্যু বার্ষিকী, পুষ্প মাল্য অর্পণ ফুটন্ত ফুল সংগঠনর
পটিয়ায় সাহিত্য বিশারদের মৃত্যু বার্ষিকী, পুষ্প মাল্য অর্পণ ফুটন্ত ফুল সংগঠনর
নিজস্ব প্রতিবেদক
১ অক্টোবর ২০২১ ০৯:৫৭
সেলিম চৌধুরী নিজস্ব সংবাদদাতা।।
পটিয়া পৌরসভা জাতীয় শ্রমিকলীগ সভাপতি শফিকুল ইসলাম শফি'র নেতৃত্বে ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে
আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ ৬৮তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে সুচক্রদন্ডী ২নং ওয়ার্ড ফুটন্ত ফুল ক্রীড়া সংঘের উদ্যোগে পুস্প মাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এসময় ফুটন্ত ফুল সংগঠন ২ নং ওয়ার্ড সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও সংগঠনের সকল সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পটিয়া পৌরসভা জাতীয় শ্রমিকলীগ সভাপতি শফিকুল ইসলাম শফি বলেন,১৮৭১-১৯৫৩) সাহিত্যিক, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস রচয়িতা এবং প্রাচীন বাংলা পুঁথির সংগ্রাহক ও ব্যাখ্যাকার। বৃহত্তর চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার সুচক্রদন্ডী গ্রামে তাঁর জন্ম। আবদুল করিম ১৮৯৩ সালে পটিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। কয়েকটি স্কুলে শিক্ষকতা করার পর তিনি চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারের অফিসে চাকরি গ্রহণ করেন এবং শেষ পর্যন্ত বিভাগীয় স্কুল পরিদর্শক পদে উন্নীত হন। ১৯৩৪ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন।প্রথম জীবনেই তিনি সাহিত্যবিষয়ক নিবন্ধ রচনা শুরু করেন। তাঁর সাহিত্যকর্ম তৎকালীন বিদগ্ধ সমাজের মনোযোগ আকর্ষণ করে। মধ্যযুগে বাংলা সাহিত্যে মুসলমানদের অবদান ছিল তাঁর বিশেষ আগ্রহের বিষয়। সারাজীবন তিনি প্রাচীন বাংলা পান্ডুলিপি (পুঁথি) সংগ্রহ করেন। ১৯২০-২১ সালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ তাঁর রচিত বাংলা পুঁথির তালিকা বাঙালা প্রাচীন পুথির বিবরণ শিরোনামে দুখন্ডে প্রকাশ করে। তাঁর সংগৃহীত পুঁথির বেশির ভাগ মুসলমান কবিদের লেখা এবং ঐগুলি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত আছে। হিন্দু কবিদের লেখা অবশিষ্ট পুঁথিগুলি রাজশাহীর বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরকে দেওয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত পান্ডুলিপিগুলির একটি সুবিন্যস্ত তালিকা পুঁথি পরিচিতি শিরোনামে প্রকাশ করেছে।আবদুল করিম এগারোটি প্রাচীন বাংলা গ্রন্থ সম্পাদনা ও প্রকাশ করেন। ইসলামাবাদ শিরোনামে তিনি চট্টগ্রামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে একটি গ্রন্থও রচনা করেন। ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক এর সঙ্গে যৌথভাবে তিনি আরাকান রাজসভায় বাঙ্গালা সাহিত্য শীর্ষক আরেকটি গ্রন্থ রচনা করেন। এ সবই পান্ডিত্যপূর্ণ রচনা। তাঁর সংগৃহীত মুসলমান কবিদের রচিত পান্ডুলিপিগুলি থেকে জানা যায় যে, সেকালের মুসলিম মনীষীরা বাংলা সাহিত্যের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন। দৌলত কাজী, আলাওল, সৈয়দ সুলতান, মুহম্মদ খান প্রমুখ শ্রেষ্ঠ বাঙালি কবিদের অন্যতম বলে গণ্য। যাঁদের নাম ও রচনা সম্পর্কে আগে কিছুই জানা যায়নি এমন প্রায় একশ জন মুসলমান কবিকে তিনি সাধারণ্যে পরিচিত করেন। এ থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে, বাংলা মুসলমানদেরও ভাষা ছিল। নদীয়া সাহিত্য সভা তাঁকে ‘সাহিত্যসাগর’ উপাধি দিয়ে সম্মানিত করে এবং চট্টল ধর্মমন্ডলী তাঁকে ‘সাহিত্য বিশারদ’ উপাধিতে ভূষিত করে। তিনি বরাবরই শেষোক্ত খেতাবটি পছন্দ করতেন এবং নিজ নামের সঙ্গে তা ব্যবহার করতেন। তিনি আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদের জন্ম ও মৃত্যু বার্ষিকী জাতীয়ভাবে পালন করা দাবি জানান।