কলা বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফল যা সারা বছর পাওয়া যায়। কলাগাছ,কলাপাতা,কলাগাছের শেকড় ও কলা সবই উপকারী। কলাগাছ ও কলাপাতা পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। প্রচুর পুষ্টিগুণ থাকা কলা, এখন নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলায় বানিজ্যিকভাবে চাষাবাদ শুরু হয়েছে। অল্প খরচে লাভ বেশী হওয়ায় বাড়ছে কলার চাষ। কলা চাষে উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখছেন চাষীরা ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানাযায়,বানিজ্যিক ভিত্তিতে যেসব জাতের কলা আবাদের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য জাতগুলো হচ্ছে হিম সাগর,সবরী ও চম্পা অন্যতম। পর্যাপ্ত রোদযুক্ত ও পানি নিষ্কাশনের সুবিধাযুক্ত উচুঁ জমি কলা চাষের জন্য উপযুক্ত। উর্বব দো-আঁশ মাটি কলা চাষের জন্য উত্তম। উপজেলার বেশিরভাগ জমি দো-আঁশ মাটি হওয়ায়, কলা ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। কলার চারা বছরে তিন সময়ে রোপন করা যায়। প্রথম রোপণকাল বাংলা সনের আশি^ণ ও কার্তিক সবচেয়ে ভালো সময়। দ্বিতীয় কাল, মাঘ-ফাল্গুন ও চৈত্র- বৈশাখ মাস চারা রোপণের ভালো সময়।
কলার চারা রোপনের মাস খানেক আগে গর্ত করে রাখতে হয়। গর্তের আকার হবে ৬০ সেমি চওড়া ও ৬০সেমি. গভীর। গর্ত তৈরি হয়ে গেলে গোবর ও টিএসপি সার মাটির সাথে মিশিয়ে গর্ত ভরে রাখতে হবে। তারপর চারা রোপণের জন্য সারিবদ্ধ ভাবে গড় ২মিটার দুরতে রোপণ করতে হবে। কলাগাছের প্রধানতম রোগগুলো হচ্ছে পানামা, বানচিটপ ভাইরাস,সিগাটোকা ও কলার দাগ রোগ। কলার চারা রোপণের ১১-১৫ মাসের মধ্যেই সাধারনত সব জাতের কলাগাছ থেকে কলা সংগ্রহ করা যায়।
উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের পশ্চিম বোড়াগাড়ী এলাকার কৃষক ইব্রাহীম আলী জানান, দির্ঘদিন ধরে কলার ব্যবসা করছি। বগুড়া, সিরাজগঞ্জ জেলা থেকে কলা ক্রয় করে নিজ এলাকায় বিক্রি করি। সেখানে কলার চাষ দেখে নিজেও কলা চাষে আগ্রহী হই। নিজের চাষাবাদের জমি না থাকায়, তিন বছরের জন্য এক একর জমি বন্ধক নিয়েছি। সেখানে কলার চারা রোপণ করেছি। গাছগুলো সুস্থ্য সবল হয়ে বেড়ে উঠছে। প্রাকৃতিক কোন দূর্যোগে ক্ষতি না হলে ভালো ফলনের আশা করছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ আনিছুজ্জামান জানান, বানিজ্যিক ভাবে উপজেলায় ২৫ হেক্টর জমিতে কলা চাষ করা হচ্ছে। বোড়াগাড়ী, ভোগডাবুড়ি ও সোনারায় ইউনিয়ন কৃষকরা বানিজ্যিকভাবে বিক্রয়ের জন্য কলা চাষ করেছে। প্রতি একরে ১২শত হতে ১৪শত চারা রোপণ করা যায়। ভালো ফলনে একরে ৩লক্ষ হতে ৪লক্ষ টাকার কলা উৎপাদন করা সম্ভব। তাছাড়াও কলা বাগান হতে চারা উৎপাদন করে ভালো টাকা উপার্জন করা যায়। চাষীদের সরকারি ভাবে কোন প্রনোদনা দেওয়া না হলেও কলা চাষে ও রোগ বালাই দূরিকরণে পরামর্শ দেওয়া হয়। আগামীতে বেশী কলা চাষে কৃষকদের উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।