মণিরামপুর প্রতিনিধি।।
সুপার সাইক্লোন আম্পানের আঘাতে যশোরের মনিরামপুরে ক্ষতিগ্রস্থ মানসিক প্রতিবন্ধী ভ্যানচালক মোস্তাক মোড়লের ভাগ্যে জোটেনি সরকারি কোন সহায়তা পেলে না উপজেলা পরিষদে যেয়েও। মাথাগোজার শেষ আশ্রয়স্থলটাও ভেঙ্গেচুরে চুরমার হয়েগেছে। ফলে কোন উপায়ন্ত না পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে প্রতিবেশীর একটি পরিত্যক্ত ঘরে আশ্রয় নিয়ে দূর্বিসহ জিবনযাপন করে আসছে। মোস্তাকের আক্ষেপ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বরদের কাছে বারবার ধর্ণা দিয়েও তার কুঁড়েঘর মেরামতের জন্য পাননি কোন সহায়তা।

সরেজমিন জানাযায়, মনিরামপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের মাছনা গ্রামের মৃত তারাচাঁদ মোড়লের ছেলে মোস্তাক মোড়ল(৬০) একজন মানষিক প্রতিবন্ধী। পৈত্রিক ৩/৪ শতক জমির উপর একটি কুঁড়েঘর তৈরী করে পরিবার পারিজন নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। একজন মানসিক প্রতিবন্ধী হলেও মোস্তাক মোড়ল ভ্যান চালিয়ে কোনপ্রকার সংসার চালিয়ে আসছিলেন।কিন্তু গতবছর ঘূর্ণিঝড় আম্পানের থাবায় তার সব স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। মাথা গোজার শেষ ঠিকানা একমাত্র কুঁড়েঘরটি ভেঙ্গে চুরমার হয়ে পড়ে। ফলে মাটির গাথুনি দিয়ে এলাকা থেকে কয়েকটি ভাঙ্গাচুরা টিন যোগাড় করে কোনপ্রকার খুপড়িঘরের ছাউনি দেয়। তবে বর্তমান বৃষ্টিতে সেখানে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে বাধ্য হয়েই-পরিবার-পরিজন নিয়ে পাশেই এক প্রতিবেশীর পরিত্যক্ত ঘরে বসবাস করছেন।
মোস্তাক মোড়ল জানান, আম্পানের তান্ডবে তার খুপড়িঘরটি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। তার ওপর বর্তমান করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে আয় রোজগার প্রায় শুন্যের কোঠায়। ফলে প্রতিদিন দু’মুঠো খাবারও জোটেনা। অন্যদিকে সমিতি থেকে ঋন নিয়ে কেনা একমাত্র ভ্যানগাড়ীটারও ব্যাটারী নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে অনেক কষ্ট করে ব্যাটারী বিহীন ভ্যানগাড়ীটি পায়ে চালিয়ে সামান্য কিছু আয়-রোজগার করার চেষ্টা করছেন তিনি। তিনি জানান, অর্থাভাবে একবেলা-দুইবেলা না খেয়েও থাকতে হয় পরিবারবর্গকে। এ অবস্থায় ঘর মেরামত করা তার পক্ষে একেবারেই দুরুহ হয়ে পড়েছে। মোস্তাক মোড়লের আক্ষেপ খুপড়ি ঘরটি মেরামতের জন্য তিনি বার বার ইউপি চেয়ারম্যান-এবং মেম্বরদের কাছে সহায়তার আবেদন করেও কোন ফল পাননি তিনি। মোস্তাকের ছেলে শফিকুল ইসলাম জানান, কেজিপ্রতি ১০ টাকা চালের কার্ড করার জন্য আবেদন জানিয়ে কোন লাভ হয়নি। হত দরিদ্র হলেও তাদের কপালে জোটেনি একটি কার্ডও। স্থানীয় ইউপি সদস্য ইদ্রিস আলী ও সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য হাজিরা খাতুন জানান. মোস্তাকের নাম ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
আশা করা হচ্ছে তারা কার্ডটি দ্রুত পেয়ে যাবেন। খানপুর ইউপি চেয়ারম্যান গাজী মোহাম্মদ আলী জানান, পরিষদ থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করা হয়েছিল। কিন্তু সে তালিকায় মোস্তাক মোড়লের নাম তালিকাভূক্ত হয়েছিল কি-না সেটা তার জানা নেই। তবে এখন বিষয়টি তিনি গুরুত্বের সাথে বিবেচনার আশ্বাস দেন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হাসান জানান, বিষয়টি তিনি জানা ছিলনা। তবে মোস্তাক মোড়লের ঘর মেরামতসহ সার্বিক সহযোগীতার ব্যপারে তিনি দ্রুত পদক্ষেপ নিবেন বলে আশ্বস্থ করেন তার পর বিষয়টির উপর একটু নজর দিয়ে মেম্বারের মাধ্যমে উপজেলা পরিষদে আসেন কিন্তু সেখান থেকে ফিরে যেতে হয় তাকে কারণ উপজেলা চেয়ারম্যান অফিসে ছিলেন না এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার করোনা আক্রান্ত। বিধায় দেখা হয়নি কারো সাথে। এখন তিনি খুব আক্ষেপ করে বলেন আমার পায়ের জুতা ক্ষয় হতে বাকি নেই আমি আর কোথাও যাবো না যেখানে যাই সেখান থেকেই খালি হাতে ফিরতে হয় যদি এই ভাঙ্গা ঘরে শুয়ে আমার মরণ হয় হোক।