03/17/2025 মণিরামপুরে পন্য-সামগ্রীর অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি
মণিরামপুরে পন্য-সামগ্রীর অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৮ জুন ২০২১ ১৮:২৩
মোঃ আব্বাস উদ্দীন,মণিরামপুর(যশোর)সংবাদদাতা।। মণিরামপুরের হাট-বাজারে তরিতরকারির অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোক্তা সাধারন দোকানে কমই ভিড়ছে। বেচা-বিক্রি কম হওয়ায় দোকানীরা তাই অলসভাবে সময় কাটাচ্ছে। অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে চাহিদা মোতাবেক পণ্য কিনতে না পেরে অনেক নি¤œ আয়ের মানুষ খালি প্যাকেট নিয়ে বাড়ী ফিরছে। গত রবিবার দুপুরে সরেজমিন মণিরামপুর কাঁচা বাজারে যেয়ে দেখা যায়, তরিতরকারির মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, প্রতি কেজি বেগুন ৬০টাকা, করল্লা ৮০ টাকা, কচুরমুখি ৫০ টাকা, কাঁচাকলা ৪০ টাকা, পটল ৩৫ টাকা, ঝিঙে ৫০ টাকা, চিচিঙা ৪০টাকা,বরবটি ৪০ টাকা, কচুরলতি ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, গোলআলু ২০টাকা,পেঁয়াজ ৫০ টাকা, রসুন ৭০টাকা,কাঁচা ঝাল ৬০টাকা,ডাটা২০টাকা, পুঁইশাক ২০টাকা, লালশাক ৩০টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সাম্প্রতিককালে অতিবৃষ্টিজনিত কারণে সব্জির উৎপাদন কম হওয়ায় বাজারে সব্জির আমদানি কম হওয়ায় প্রতিটি তরিতরকারির পাইকারী দর বেশী হওয়ায় খুঁচরা বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় সব্জির দাম বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে পাইকারী সব্জি ব্যবসায়ী মনতাজ আলী জানান। মণিরামপুর পৌর শহরের কাঁচা বাজারের খুচরা দোকানী মুনছুর আলী জানান, পাইকারদের কাছ থেকে এখন চড়া দামে সব্জি হচ্ছে। তাই সব্জির খুঁচরা মূল্য বেশ বেড়ে গেছে। তরিতরকারির দাম হঠাৎ করে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় বাজারে ক্রেতা ও কমে গেছে। বেচা-বিক্রি কমে যাওয়ায় বাজারে তেমন ভিড় নেই। এ সময় মণিরামপুর কাঁচা বাজার ঘুরে দেখার সময় দেখা যায়, কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সেক্রেটারী সিরাজুল ইসলাম ও তার দোকানের সহয়োগী বসে বসে অলস সময় কাটাচ্ছে। অপরদিকে কাঁচা তরিতরকারির পাশাপাশি তেলসহ প্রতিটি নিত্যসামগ্রীর দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। মুদি ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান জানান, তেল,মসলা,ডাল,আটা,চিনিসহ সকল পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। প্রতি প্যাকেট বিস্কুট ১০টাকা বেশী দামে বিক্রি হচ্ছে। যে বিস্কুটের দাম ৫০ টাকা তা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা দরে। খোলা বাজারে সয়াবিন তেল প্রতি কেজি ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি ভোগ্যপণ্যের দাম বেশি চড়া বলে তিনি জানান। দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাইকারদের কাছ থেকে বেশি দামে প্রতিটি পন্য কিনতে হচ্ছে। যেমন দামে আমরা কিনছি সেই অনুযায়ী আমাদের বিক্রি করতে হচ্ছে। একটি ১০০ গ্রাম ওজনের লাক্স সাবান ৩৬ টাকার স্থলে এখন ৩৮ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে। প্রত্যেক পন্যের মূল্য গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তিনি জানান। উপজেলার রাজগঞ্জ বাজারেও প্রতিটি নিত্য পণ্য গত কয়েকদিনের ব্যবধানে বেশ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বলে খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে। এই বাজারের ব্যবসায়ী নাসিম জানান, পণ্য সামগ্রীর দাম গত কয়েক দিনের ব্যবধানে বেশ বেড়ে গেছে। যে হারে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ছে তাতে খরিদদারের কাছে বিশ^স্থ্যতা বজায় রাখা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। ওই ব্যবসায়ী বলেন, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ভোজ্য তেল, চাল, ডাল, আটা, চিনি, বিস্কুট, ডিম, মসলাসহ সকল পণ্যের দাম কয়েক দফা বেড়ে গেছে । নাম প্রকাশ না করার শর্তে মণিরামপুরের পাড়দিয়া গ্রামের জনৈক ব্যক্তি জানান, তিনি একটি প্রতিষ্ঠানে মাসে ৭ হাজার টাকার বেতনে অস্থায়ী চাকরি করেন। এই অল্প আয়ে তিনি বর্তমান উর্ধ্বগতির বাজারে সওদা করে সংসার চালাতে যেয়ে বেশ হিমসিম খেতে হচ্ছে। সংসারের চাহিদা অনুযায়ী পণ্যসামগ্রী তিনি কিনতে পারছেন না। এই রকম বহু অল্প আয়ের মানুষ রয়েছে যারা বর্তমান দ্রব্যমূল্যের বাজারে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। অন্যদিকে বর্তমানে মাছ ও মাংসের দামও বেড়ে গেছে। উপজেলার ঘুঘুরাইল গ্রামের সিদ্দিক (৫৫), সাদেক (৫০), হালসা গ্রামের হানেপ আলী (৬৫), লাউড়ী গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক(৫৫)সহ কয়েকজন হতদরিদ্র মানুষ জানান, বাজারে জিনিসপত্রের যা দাম বেড়েছে তাতে চাহিদা মাফিক জিনিসপত্র কিনতে পারছি না। দাম অনেক বেশি। কি করে সংসার চালাবো, এই ভেবেই তারা সবাই এখন হতাশাগ্রস্ত । অবশ্য সরেজমিন খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, মণিরামপুর,রাজগঞ্জ,চিনাটোলা,নেহালপুর, ঢাকুরিয়া, খেদাপাড়াসহ বিভিন্ন হাট-বাজারের বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পণ্যসমাগ্রীর বিক্রয় মূল্য তালিকা নেই। ইচ্ছা খুশি মোতাবেক ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম হাকিয়ে বিক্রয় করছে। এ বিষয়ে সচেতন নাগরিকদের পক্ষ থেকে বাজার মনিটরিং করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করা হয়েছে।