03/17/2025 মনিরামপুরের শ্যামকুড় চা’য়ের দোকানে চলে সারারাত জুয়ার আড্ডা
মনিরামপুরের শ্যামকুড় চা’য়ের দোকানে চলে সারারাত জুয়ার আড্ডা
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৩ জুন ২০২১ ০৯:৫১
মোঃ আব্বাস উদ্দীন,মণিরামপুর(যশোর)প্রতিনিধি।।আলোর কাছেই অন্ধকার! এই প্রবাদটি মণিরামপুর উপজেলার শ্যামকূড় গ্রামের উত্তরপাড়া বটতলা জামে মসজিদের সামনে অবস্থিত সোহাগের চা’য়ের দোকানে রাতভর জোয়ার আসর বসানোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বলে স্থানীয় সুধীজনের মন্তব্য। জানা যায়, মণিরামপুর উপজেলার শ্যামকূড় উত্তর পাড়ার বটতলা মোড় নামক স্থানে স্থানীয় ধর্মপ্রান মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজন গত কয়েকবছর আগে একটি ছোট আটপৌরে গোছের মসজিদ নির্মান করে নামাজ আদায় করে আসছিলেন। যেটির আধুনিকায়ন করার উদ্যোগ নিয়ে মসজিদ সংশ্লিষ্ট মুসল্লীরা বেশ বড় ছাদের বিল্ডিং করে এখন মসজিদের বাকী কাজ সম্পন্ন করার প্রানান্তর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। মসজিদের কলেবর বৃদ্ধির সাথে সাথে মুসল্লীদের সংখ্যা বেড়েছে। বেড়েছে মুসল্লী সমাগম। কিন্তু মুসল্লীদের কাছে এখন সবচেয়ে বড় একটি সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে সেটা হলো মসজিদ সংলগ্ন রাস্তার দক্ষিণ পাশে সোহাগের চা’য়ের দোকান। মুসল্লীদের একটিই অভিযোগ তাদের মহল্লার ওহাব আলীর ছেলে সোহাগ হোসেন চা’য়ের দোকানে দিনরাত এক আড্ডাখানা বসিয়েছে। এই দোকানে উঠতি বয়সি যুবক ও বয়স্ক কিছু লোকদের সমাগম ঘটিয়ে দিনরাত উচ্চস্বরে টিভি ও ভিসিআর চালিয়ে মসজিদে আগত মুসল্লীদের ইবাদত বন্দেগীতে মারাত্বকভাবে ব্যঘাত সৃষ্টি করছে। পাশাপাশি চা দোকানী সোহাগ সারা রাত-দিন দোকানের মধ্যে তাসের জোয়ার আসর পরিচালনা করছে। অভিযোগ উঠেছে, এই সোহাগের চা’য়ের দোকানে জোয়ার আসরে দিনমজুর যুবকেরা সারাদিনের আয় রোজগারের টাকা শেষ করছে। এ সব যুবকেরা দিন দিন নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। জোয়ার আসরের পাশাপাশি সোহাগ মাদক বিকিকিনি করায় অনেক যুবক মাদকাক্ত হয়ে পড়ছে। শ্যামকূড় উত্তরপাড়া বটতলা জামে মসজিদের পরিচালনা কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিনিধিকে বলেন, স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির ছত্রছায়ায় চা বিক্রেতা সোহাগ মসজিদ কমিটির সদস্যদের বাঁধা নিষেধকে তোয়াক্কা না করে বেশ দৌরাতœ দেখিয়ে একেবারে মসজিদ লাগোয়া দোকানে উচ্চ সাউন্ডে টিভি চালিয়ে দোকানে প্রতিনিয়ত আড্ডা জমাচ্ছে। সেই সাথে দিনে রাতে সারাক্ষণ তাস খেলার নামে জোয়ার আসর চালাচ্ছে। এতে মসজিদের পবিত্রতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় যুব সমাজ বিপথে চলে যাচ্ছে। প্রশাসনের কোন প্রকার নজরদারি না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে পরিচালিত সোহাগের চা’য়ের দোকানের জোয়ার আসরে স্থানীয়দের সাথে এখন দুরদুরান্ত থেকে আগত লোজজন যুক্ত হচ্ছে । অতিসম্প্রতি সরেজমিন যেয়ে দেখা যায়, শ্যামকূড় উত্তরপাড়া বটতলা জামে মসজিদে বেশ অনেক মুসল্লী মাগরিবের নামাজ আদায় করছে। এই সময় মসজিদ লাগোয়া সোহাগের চা’য়ের দোকানে পাটি বিছায়ে ১০/১২জন যুবক তাস খেলছে। ওই দোকানে বেশ বড়সোড় একটি টিভি দেখা গেলেও সেটি সে সময় বন্ধ রাখতে দেখা যায়। কথা হয় চা দোকানী সোহাগের সাথে। মসজিদের কাছে টিভি চালিয়ে চা বিক্রি করাটা একটু বেমানান নয় কী? এমন কথা বলাতে সোহাগ কোন প্রতিউত্তর না দিয়ে চুপ করে থাকেন। তার বিরুদ্ধে এলাকার লোকজনের তাস খেলার নামে জোয়ার আসর বসানোর অভিযোগ রয়েছে। এমন কথা বলতেই সে এটি অস্বীকার করে বলেন, কোন প্রকার টাকা দিয়ে আমার দোকানে তাস খেলা হয় না। যারা তাস খেলতে আসে তারা চা-পান,বিড়ি-সিগারেট কেনায় আমার বেচা বিক্রি একটু বেশি হয়।
অন্যদিকে শ্যামকূড় মাঠপাড়ার আব্দুল মালেকের ছেলে শরিফুলের চা’য়ের দোকানে সম্প্রতি সন্ধ্যা থেকে রাতভর বসছে জোয়ার আসর । এই আসরে স্থানীয় যুবকদের পাশাপাশি দুরদুরান্ত থেকে জুয়াড়ীরা আসছে। রমরমা জুয়ার আসরকে ঘিরে এলাকায় মাদকের কারবার, চুরি,ছিনতাই,রাহাজানি ও বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এলাকার সচেতন সমাজ ও অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় পড়েছে। এলাকাবাসী তাই অচিরেই প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এসব জুয়ার আসর বন্ধের দাবী জানিয়েছেন।