11/09/2025 ছোট গল্প কান্নাভেজা ঈদ
নিজস্ব প্রতিবেদক
১০ মে ২০২১ ২৩:০৫
লাগলো।
পরদিন সকালে ডাকপিয়ন বাড়িতে এসে একটা প্যাকেট ধরিয়ে চলে গেলেন আয়েশার কাছে। প্যাকেটর ভিতর মিতুর জন্য একটা লাল সবুজ রঙ্গের জামা ও একটা চিঠি। চিঠিতে লেখা ছিলো
প্রিয়তমা আয়েশা,
কেমন আছে, মিতু কেমন আছে? আমি ভালো আছি। জানি তোমাদের মন খারাপ। মিতু কি আমাকে খোঁজ করে। চিন্তা করোনা আমি ঈদের দিন বাড়িতে আসবো, তোমাদের সাথে ঈদ করবো। আর মাত্র দুইটা দিন ধৈর্য ধরো, এলাকা শত্র মুক্ত হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ্। আমার কারণে যদি ওরা তোমার বা আমার বাড়িতে কোন ক্ষতি করে তবুও তুমি মিতুকে একা ফেলে হারিয়ে যেওনা। ওরা বহু এলাকায় আমরা যারা মুক্তিযোদ্ধা আছি তাঁদের বাড়িতে বাড়িতে হামলা করছে মেয়েদের কে বিভিন্ন শারীরিকভাবে নির্যাতন করছে । ভালো থোকো সোনা পাখি।
ইতি,
তোমার আকাশ।
২৭শে রমজানের দিন ফজরের আজান থেকে শুরু হলো গোলাগুলি। চাকরি থেকে শত্রুরা ঘিরে ফেলেছে আকাশদের। একের পর এক বোমার বিকট শব্দে আতঙ্কিত। বাঁশ গাছের পাতা ছিঁড়ে ছিঁড়ে পড়ছে গোলাগুলিতে। আকাশের পাশে অনেক সহযোদ্ধা ইতিমধ্যে শহীদ হয়েছেন। অনেকেই বলছে চলো পালায়। শত্রুর একটা বুলেট হঠাৎ আকাশের ডান পায়ে এসে লাগলো। তবুও পিছু না হেঁটে গায়ের জামা ছিঁড়ে বেঁধে নিল পা। আর পালানোর পথ নাই সামনে এগুতেই হবে জয়বাংলা বলে গুলি চালাতে লাগলো আকাশ। একটানা দুই দিন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর শত্রুদের পরাজিত করে বিজয় ছিনিয়ে নিলো। ঈদের দিন সকালে বাড়িতে ফিরে এলো আকাশ। বাড়িতে এসেই ডাকতে লাগলো মিতু মিতু মা মিতু ওঠো। প্রায় এক বছর বাবাকে না দেখে মিতু বাবার কণ্ঠ চিনতে পারলো না, তাই সাড়াও দিচ্ছে না। এদিকে আয়েশার শরীরে প্রচন্ড জ্বর ও ব্যাথা। ঘুমিয়ে পড়েছে। আবারও আকাশ ডাক দিল আয়শা আয়শা দরজা খোলো আমি এসেছি। আয়শা থাড়ুমাড়ু করে ঘুম থেকে উঠে দরজার খুলতে গেলে কিন্তু মিতু ভয়ে খুলতে দিচ্ছে না, গতদিনে মায়ের উপর নির্যাতনের কথা মনে করে ভয় কাঁপছে। এর পর দরজার খুলতেই আকাশ ঘরে ঢুকে মিতুকে কোলে নিল। তখনও মিতু বাবার কোলে ভয়ে থরথর করে কাঁপছে। আর বলছে জানো বাবা ওরা মাকে.........................!! একথা শোনার পর আশাক বলে উঠলো এই বাংলায় আর কোন নারী নির্যাতন হবে না মা। ওরা আর আসতে পারবে না আমরা ওদের কে মেরে ফেলেছি। আমরা এখম মুক্ত আমরা স্বাধীন।