03/16/2025 কবি আশরাফ হায়দার এর লেখা ছোট গল্প- "প্রেমের গোপন ছোঁয়া"
কবি আশরাফ হায়দার এর লেখা ছোট গল্প- "প্রেমের গোপন ছোঁয়া"
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৩ এপ্রিল ২০২১ ১৫:২২
আশরাফ হায়দার।।
সেদিন ছিল শুক্রবার। বিকেল সাড়ে চারটায় আজিজ সুপার মার্কেটে সাহিত্য সভা শুরু হয়েছে। সব্যসাচী সাহিত্য সভায় যথা সময়ে উপস্থিত হয়েছে।
তখন শরৎ আকাশে ঘণকালো জলভরা মেঘমালা বিস্তার ঘুরাঘুরি করছে। হয়তো কিছুক্ষণের মধ্যেই বৃষ্টি নামবে। ভাবতে ভাবতেই ঝমঝম করে বৃষ্টি পড়ছে। কি-যে বৃষ্টির রিমঝিম শব্দ।
সব্যসাচীর সামনে বসে আছে কবি অনামিকা। অনামিকা কবিতার চেয়ে গল্প লিখে ভাল। অনামিকাকে খুব সুন্দর লাগছিল। মনে হচ্ছিল অনামিকা শিল্পীর হাতে গড়া কারুকার্যময় সোনার প্রতিমা। জামদানি শাড়িতে অনামিকাকে প্রতিমার মতো লাগছিল।
অনামিকা একটি মুক্তিযুদ্ধের গল্প পাঠ করলো। গল্পটি চমৎকার। একজন মুক্তিযোদ্ধার আত্মজীবনী তুলে ধরেছে।
যখন অনামিকা গল্প পড়ছিল তখন সব্যসাচি মাঝে মাঝে অনামিকার দিকে তাকাচ্ছিল। অবশ্যই অনামিকা সেটা লক্ষ করেছিল। তাই অনামিকা সব্যসাচীর দিকে তাকিয়ে ফিকফিক করে মিষ্টি হাসি দিয়েছিল। দু'জনে চোখাচোখি,মুখামুখি। সেই দৃশ্যটা ছিল উত্তম সুচিত্রা জুটির মতো। খুব ভালো লাগছিল।
অনামিকা মুক্তিযুদ্ধের গল্প পাঠ করেই চলেছে। গল্পের কাহিনী ছিল বুদ্ধিজীবী শহিদুল্লাহ কায়সারকে নিয়ে। শহিদুল্লাহ কায়সার মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের টাকা পয়সা দিয়ে সাহায্য সহযোগিতা করতেন। অসহায় মানুষদের টাকা পয়সা দিয়ে সহায়তা করতেন। যে সব বাড়িতে খাবার নেই সেই সব বাড়িতে গোপনে খাবার পৌছে দিয়ে আসতেন। প্রতিদিনের মতো শহিদুল্লাহ কায়সার আজও বাসা থেকে বের হওয়ার জন্য প্রস্তুত নিচ্ছিলেন তখন শহিদুল্লাহ কায়সার'র স্ত্রী পান্না কায়সার ঘরে ঢুকে শহিদুল্লাহ কায়সারকে বললেন টাকা দিয়ে দিতে। টাকা চাওয়ার কারন হলো তখন শমী কায়সার'র বয়স এক বছর আর অমিত কায়সার সবেমাত্র হয়েছে। ওদের দুধ ফুরিয়ে গেছে তাই দুধ কেনার জন্য পান্না কায়সার টাকা চাইলেন। টাকা চাওয়াতে শহিদুল্লাহ কায়সার রাগান্বিত স্বরে বললেন,টাকা নেই। এই কথা শুনার সাথে সাথে পান্না দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন ! কেবল ভাবতে ছিলেন আজ বাচ্চাদের কি খাওয়াবেন! ঠিক তখনই শহিদুল্লাহ কায়সার পায়ের মোজার ভিতরে টাকা লুকাতে ছিলেন। পান্না কায়সার জানালা দিয়ে দেখে ফেলেন শহিদুল্লাহ কায়সার'র সেই দৃশ্য। পান্না কায়সার সাথে সাথে ঘরে ঢুকে শহিদুল্লাহকে বললেন এখন টাকা কোথায় পেলে। বাচ্চাদের দুধ কেনার জন্য টাকা চাইলাম তখন বললে টাকা নাই।
শহিদুল্লাহ কায়সার অশ্রু বিসর্জন চোখে বললেন,দ্যাখো পান্না তোমার বাচ্চারা দিনে একবার হলেও খেতে পারছে । আর যে সব বাচ্চারা দুদিন, তিনদিন না খেয়ে আছে ,যে সব মুক্তিযোদ্ধোরা দিনের পর দিন না খেয়ে যুদ্ধ করে যাচ্ছে তাদের কথা একবার ভাবো! স্বদেশ মা-যে আমাদের স্বর্গ। এ কথা শুনার সাথে সাথে পান্না কায়সার'র চোখ দিয়ে দড়দড় করে অশ্রু ঝরে পড়লো। পান্না কায়সার'র বুঝতে আর বাকি রইলো না। এতো বড় দেশপ্রেমিক স্বামী পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। সেদিন থেকে পান্না কায়সার'র স্বামীর প্রতি শ্রদ্ধা ভালোবাসা আরো বেড়ে গেলো। দেশের কাছে পান্না কায়সার স্বামীকে সর্বত্র সহযোগিতা করতেন।
অনামিকার মুক্তিযুদ্ধের কাহিনী গল্পটি পড়া যখন শেষ হলো তখনই সাহিত্য আসরের সবারই চোখে ছিল টলমল অশ্রু।
সাহিত্য আসর শেষ হলো। ঝমঝম করে বৃষ্টি পড়ছে। সব্যসাচী ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে ছিল । তখন অনামিকা পিছন দিক থেকে ঘাড়ে হাত দিয়ে বললো,এই কবি এতো কি ভাবছেন?
নরম হাতের ছোঁয়ায় সব্যসাচী পিছু ফিরে তাকালো। দেখে অনামিকা হাসছে। এই প্রথম সব্যসাচী আর অনামিকার পরিচয়। দু'জনই বৃষ্টির রিমঝিম ফলা দেখতে ছিল। অনামিকা গুনগুন করে গাইলো কি-যে বৃষ্টি,কি-যে মিষ্টি। কি-যে আনন্দ আজই গোধূলি সন্ধ্যালগন।
অনামিকা সব্যসাচীকে বললো, কবি আমাকে কি দেবে?
সব্যসাচী শান্ত মনে বললো, আসন্ন গোধূলি সন্ধ্যার ঘণকালো জলভরা বৃষ্টির ফলা আপনাকে দিলাম,আর আপনার কাছে চেয়ে নিলাম প্রেমের গোপন ছোঁয়ার অনুভুতিটুকু ।
এরই মাঝে বৃষ্টি থেমে গেছে। সন্ধ্যা কেটে রাতের প্রহর শুরু। অনামিকা বললো,রাত হয়ে গেছে আমাকে পৌঁছে দিতে দিতে পারেন? সব্যসাচী না করতে পারলো না।তাই অনামিকাকে বিজয়নগর পৌঁছে দিতে গেলো। এই হলো দুটি হৃদয়ের চাওয়া পাওয়া প্রেমের চাষ।
এরপরে শুধু হলো মন দেওয়া নেওয়ার পালা। প্রায় দেখা হলো বেইলী রোডের নাটক পাড়ায়। অনামিকা একটি থিয়েটারের সাথে যুক্ত। মাঝে মাঝে মঞ্চ নাটকে অভিনয় করে। ভাল অভিনয় করেছিল রক্ত করবী নাটকে। নাটক শেষে সব্যসাচীকে নিয়ে বাসায় ফেরার পথে অনামিকা বললো,ওরা তিন ভাই বোন। ভাই বোনদের মধ্যে অনামিকা হলো বড়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় অনার্স মাস্টার্স করেছে।
বাংলা সাহিত্যে ভালই দক্ষ। এই ভাবে চলছে দু'জনের প্রেমের অনুভূতি। সব্যসাচীর ব্যবহারে অনামিকা ভীষণ মুগ্ধ। কখন যে অনামিকা সব্যসাচীকে মন দিয়েছে তা নিজেই জানে না। কথায় বলে প্রেম আসে নিরবে। অনামিকা নিঃশব্দ নিরবে সব্যসাচীকে ভালবেসে ফেলেছে। কিন্তু সেই ভালবাসার কথাটি অনামিকা বলতে পারছে না। বলবো বলবো করে অনামিকার বলাও হচ্ছে না। একদিন মনের কথা গুলো বলার জন্য সব্যসাচীকে বাসায় দাওয়াত করে নিয়ে নিজ হাতে রান্না করে খাওয়ালো তারপরও মনের জমানো হাজারো কথার মধ্যে ভালবাসার কথাটি বলা হলোনা।
অনামিকার বাবা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আর এক চাচা সচিব, আরেক চাচা মেজর। তাদের আদরের একমাত্র মেয়ে অনামিকা। অনামিকা একদিন জানালো সব্যসাচীর কথা। বাপ চাচারা মত দিয়েছে তবে ছেলে কি করে জানতে চাওয়াতে অনামিকা উত্তর দিতে পারিনি। কারন সব্যসাচী তখন সামান্য বেতনে দৈনিক পত্রিকায় করে। তবে সব্যসাচী ভাল লেখে। প্রায় সব্যসাচীর লেখা পেপারে ছাপা হয়।
সব্যসাচী আর অনামিকা একবার করে বেইলী রোডে দেখা করে। সাহিত্য,নাটক নিয়ে আলোচনা করে। সব্যসাচী বস্তি বাসিদের নিয়ে একটি লেখার কাজ করছে। সর্বসময় বিভিন্ন বস্তিতে বস্তিতে ঘুরে বেড়াতে হয়। ওদের জীবন যাপন সম্পর্কে জানতে হয়। প্রতিদিন ইনকাম সে বিষয়ে জানতে হয়। তাদের কয়টি ছেলে মেয়ে। ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করে কিনা। কেন তারা বস্তিতে থাকে? বস্তি বাসিদের কেউ কেউ বলে তাদের ঘর বাড়ি জায়গা জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আবার কেউ কেউ বলে মঙ্গা এলাকা। শ্রমজীবী মানুষের জীবন কাহিনী নিয়ে লেখা হচ্ছে উপন্যাস। যখন সব্যসাচী বিভিন্ন বস্তিতে যাতায়াত করতো তখন অনামিকা সাথে যেতো। এই সব কারনে অনামিকা সব্যসাচীকে ভালবাসে। তবে সব্যসাচীও অনামিকাকে ভালবাসে কিন্তু না পাওয়ার আসা অনামিকাকে ভালবাসে। পাওয়ার জন্য ভালবাসা আর না পাওয়ার জন্য ভালবাসা এর মধ্যে অনেক পার্থক্য। যেহেতু অনামিকে পাওয়া যাবে না সেহেতু ভালবাসার কথা বলে লাভ কি? তাই মনের কথা মনেই জমা করে রাখলো সব্যসাচী।
অনামিকা তার পাঁচ বছরের জমানো কথাটি বলার জন্য সারাবেলা সব্যসাচীর বিভিন্ন বস্তিতে আর পত্রিকার অফিসে ঘুরে বেড়ালো। তারপর পড়ন্ত বিকেলে অনামিকা সব্যসাচীকে বললো আপনাকে একটি কথা বলতে চাই। আর সেই কথাটি বলবো আপনার বাসায় গিয়ে। আর আমি জানি আপনার বাসায় গেলে আমার অমর্যাদা হবে না। আপনার উপর এতটুকু বিশ্বাস আমার আছে।
তখন বেলা পশ্চিমা আকাশ ঢলে পড়েছে। সারাদিনের কাজে দু'জনই বডড ক্লান্ত। দিনের সমস্ত ক্লান্তি মুছে অনামিকা সব্যসাচীর বাসায় গেলো। বাসায় সব্যসাচী একা থাকে। তখন গোধূলি সন্ধ্যা। বাসায় উঠে সব্যসাচী খাবার ব্যবস্থা করলো। জীবনের অনেক কথা বলাবলি হলো। যখন অনামিকা ভালবাসার কথাটি বলতে যাবে তখনই বিদ্যুৎ চলে গেলো। বিধি হলো বাম। আর বলা হলো না। অনামিকাকে বাসায় পৌছে দিয়ে এলো।
অনামিকা বাসায় গিয়ে দেখে বাপ চাচারা গল্প গুজব করছে। সচিব চাচা অনামিকাকে বললেন তোর জন্য পাত্র নিয়ে এসেছি। ছেলের বাবাও সচিব। ছেলেও বিসিএস ক্যাডার। অনামিকাকে দেখে ওদের পছন্দ হয়ে গেলো। সিদ্ধান্ত হলো আজি বিয়ে হবে। যেমন কথা তেমনি কাজ। সত্যি অনামিকার অমতে বিয়ে হয়ে গেলো। সেদিন অনামিকার কিছুই করার ছিল না। সেদিন অনামিকার স্মৃতি গুলো ঝরাপাতার মরমর কান্না পরিনত হলো। অনামিকা নিরুপায়। স্মৃতির মন্দিরে ছিল সব্যসাচীর মুখখানি। বাসর রাতে অনামিকা চোখের জল ফেলে ছিল। কেবল সব্যসাচীকে ফোন করে বলেছিল ভাল থেকো। আর আমাকে খুঁজোনা না তবে মনে রেখো। তোমাকে যে কথাটি বলতে চেয়েছিলাম সেই কথাটি হলো তোমাকে ভালোবাসি। তোমার ভালবেসে আমি অন্যের ভালবাসায় সিক্ত হলাম। আজ আমি অন্যের ঘরে স্বপ্নের বাসর সাজিয়ে হৃদয়কে করছি বিকিকিনি।
যখন তোমাকে ভালোবাসার কথা বলতে পারলাম তখনই আমি স্ত্রী হয়ে গেলাম। এটাই ভাগ্য বলে কথা!
অনামিকা আর কথা না বাড়িয়ে ফোন রেখে দিল।
সব্যসাচী বুঝতে পারলো আজ অনামিকার বিয়ে হয়ে গেছে। সব্যসাচী ভীষণ ব্যথিত হলো। একটু হলেও সব্যসাচী অনামিকাকে ভালবেসেছিল। সেই ভালবাসার যবানিকা হলো আজ। কেবল পাঁচটি বছর ধরে প্রেমের গোপন ছোঁয়া লেগে থাকলো অন্তরে অন্তরে। সব্যসাচী আর বিয়ে করিনি। দেশের বাইরে চলে যাওয়ার জন্য তোড়জোড় চলছে। ঠিকই মনের কষ্টে সব্যসাচী দেশের বাইরে চলে গেলো। দেশের মাটিতে রেখে গেলো শুধু স্মৃতি।
অনামিকার বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর থেকে লেখালেখি বন্ধ হয়ে যায়। সাহিত্য চর্চায় তার মে দক্ষতা অর্জন করে ছিল সেই দক্ষতা আস্তে আস্তে নিঃশেষ হতে থাকে। যেমন তেল না দিলে প্রদীপ আস্তে আস্তে নিভে যায় তেমনই অনামিকার সাহিত্য প্রতিভা নিভে গিয়েছিল। এখন আর কবিতা,গল্প লেখা হয় না। কোন সাহিত্য আসরেও যাওয়া হয় না। সব কিছুই বন্ধ হয়ে গেছে। সংসারের ঘানি টানতে টানতে অনামিকা ক্লান্ত পাখি। ক্লান্ত পাখি যেমন দিনের শেষে নীড় খোঁজে না পায় তেমনই অনামিকার জীবনেও সুখের নদীতে পাল তুলে যাওয়া হলো না। এক যুগ পার হয়ে গেছে তারপরও অনামিকা সব্যসাচীকে ভুলতে পারিনি। আর ভুলবেও কেমন করে যে প্রেম জীবনে প্রথম একবারই নিরবে আসে সেই প্রেম কি কখনো ভুলা যায়! একেই বলে বিনিসুতোয় গাঁথা প্রেম। সব্যসাচীর কথা ভাবতে ভাবতে একযুগ চলে গেলো অনামিকার।
আজ একটি সাহিত্য আসরের দাওয়াত পেয়েছে অনামিকা। একযুগ কোন সাহিত্য আসরে যাওয়া হয়নি। একঘেয়েমি জীবন আর ভাল লাগছে না। তাই অনামিকা আর কোন বাঁধা না মেনে সিদ্ধান্ত নিলো সাহিত্য আসরে যাবে। দুপুরের খাওয়া দাওয়া সেরে খুব সুন্দর করে সাজুগুজু করে জাদুঘর অনুষ্ঠানের জন্য রওনা দিল। গ্যালারির দ্বিতীয় সারিতে বসলো। কিছুক্ষণ পর অনুষ্ঠান শুরু হলো। এই অনুষ্ঠানের পুরস্কার পাচ্ছেন সব্যসাচী। তার সেই বস্তি বাসিদের গবেষণাধর্মী উপন্যাসের জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। বই উৎসর্গ করা হয়েছে অনামিকার নামে। অনামিকা তো অবাক! ভাবতেই পারছে না অনামিকা আজ কি বলবে? এরই মধ্যে সব্যসাচী মঞ্চে গিয়ে বসেছে। সব্যসাচীকে সুন্দর লাগছে। অনুষ্ঠান শেষে অনামিকা সব্যসাচীর কাছে গিয়ে বললো কেমন আছেন? সব্যসাচী ভাবতে পারিনি এমনি দেখা হবে অনামিকার সাথে। আস্তে করে বললো তুমি যেমন রেখেছো তেমনই আছি। শুধু এই টুকুই বলবো তোমার প্রেমের গোপন ছোঁয়ায় বিরহের মধ্য দিয়ে কেটে যাচ্ছে জীবন। তোমার সাথে দেখা হয়েছে এতেই আমার প্রশান্তি। ভাল থাকো।
অনামিকা কিছু বলতে চেয়েও বলতে পারিনি। শুধুমাত্র চোখের কোণে নোনা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো। ছলছল চোখে অনামিকা বললো বাসায় পৌছে দিতে পারবে আমায়। এই দাবি টুকু রাখলে খুশি হবো।
সব্যসাচী অনামিকাকে বাসায় পৌঁছে দিতে গেলো।সব্যসাচী অনামিকাকে বললো এই অনুষ্ঠানের জন্য দেশে এসেছিলাম। কাল আবার চলে যাবো। কথা বলতে বলতে অনামিকার বাসায় নিচে গিয়ে রিকশা থামলো। অনামিকা কোন কথা না বলে বাসায় দোতলায় উঠে ব্যালকনিতে দাঁড়ালো। সব্যসাচী নিজ বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিল তখন অনামিকা কান্না জড়িত কণ্ঠে হাত নেড়ে বললো ভাল থেকো। আবার দেখা হবে তোমার আমার তবে এই জন্মে নয় প্রজন্মে।
সব্যসাচীর রিকশা আস্তে আস্তে অদৃশ্য হয়ে গেলো। দু'চোখ মুছতে মুছতে অনামিকা ঘরের ভেতর চলে গেলো।