03/15/2025 রাজগঞ্জে জালাল উদ্দিন হত্যার ঘটনাস্থলে ইয়াবা সেবনের ও ব্যবহৃত কনডমের আলামতকে গুরুত্ব দেয়নি- পুলিশ
রাজগঞ্জে জালাল উদ্দিন হত্যার ঘটনাস্থলে ইয়াবা সেবনের ও ব্যবহৃত কনডমের আলামতকে গুরুত্ব দেয়নি- পুলিশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
৮ জানুয়ারী ২০২১ ০৯:৪১
আনোয়ার পারভেজ অনুজ।।
"ব্যাপক তল্লাশী পর পুলিশের মাথায় কিছুই ঢুকছেনা: ঘটনাস্থলে সদ্য ইয়াবা সেবনের ও ব্যবহৃত কনডম আলামতকে গুরুত্ব দেয়া হয়নি"
আজ শুক্রবার বেলা ১১ টারদিকে মনিরামপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম,রাজগঞ্জ তদন্ত কেন্দ্রের ইন্সপেক্টর শাহজাহান আহমেদসহ একদল পুলিশ খালিয়া গ্রামের জালাল উদ্দিন হত্যার স্থল শফিকুল ইসলামের সেই পরিত্যক্ত বাড়িসহ বাড়ি সংলগ্ন নির্জন বাগানে ব্যাপক তল্লাশী চালান কোন আলামত পাওয়া যায় কিনা,এমন উদ্দেশ্যে।
দীর্ঘ সময় তল্লাশী শেষে কোন আলামত না পেয়ে পুলিশ সদস্যদের মধ্যে বেশ হতাশা পরিলক্ষিত হয় এবং তারা হত্যা রহস্যের কোন দিক খুঁজে পাচ্ছেননা বলেও কথাবার্তা বলতে থাকেন।
এ সময় আমি (সাংবাদিক আনোয়ার পারভেজ অনুজ) এবং রাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক জসিম উদ্দিন সেখানে উপস্থিত ছিলাম এবং পুলিশের অনুমতি নিয়েই পরিত্যক্ত ওই বাড়ি বাউন্ডারীতে প্রবেশ করি। বসত ঘরের পাশেই পরিত্যক্ত গোয়ালঘরের ভিতরে হাঁস-মুরগী রাখার কাঠের কোঠা দেখতে পেলাম। এসময় সেখানে ৪/৫ জন বসার মতো প্লাস্টিকের বস্তা, ইয়াবা সেবনে ব্যবহৃত পাইপ এবং ৪ টি বোতলের মুখটি দেখতে পাই।
পড়ে থাকা সেই মুখটিগুলোতে সদ্য অর্থাৎ ২/৩ দিন আগে ইয়াবা সেবনের আলামত স্পষ্ট দেখা যায়। এই আলামত দেখে উপস্থিত পুলিশ অফিসারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওসি রফিকুল ইসলাম বিষয়টি তুচ্ছ ভাব প্রকাশ করে বলেন, বুঝলাম এখানে ইয়াবা সেবনের বা গাজা সেবনের আসর বসলেও ওই গভীর রাতে কেউ ইয়াবা সেবন করেনা বলেই বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এরপর সেই স্থানে একটি ব্যবহৃত অর্থাৎ বীর্ষসহ কনডমও আমরা দেখতে পাই এবং রাজগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইন্সপেক্টরকে মোবাইল ফোনে অবহিত করি। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, নিহত চা বিক্রেতা জালাল উদ্দিনের কোন শত্রু ছিলোনা,তবে তিনি কাউকে ভয় পেয়ে কথা না বলার স্বভাব ছিল। রাত ৪ টারদিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে খালিয়া মোড়ে চা-দোকানে যাওয়ার সময় তিনি টর্চ লাইট নিয়ে যেতেন। হত্যাকান্ডের রাতে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতেও তার হাতে নিত্য দিনের মতো টর্চ লাইট নিয়েই বের হয়েছিলেন।
খালিয়াজুড়ি ঈদগাহের পাশে একটু ফাঁকা স্থানে এবং একটু বলাযায় বাগানে নির্জন স্থানে সেই পরিত্যক্ত বাড়ি ঘেঁষে যাওয়া ইটের সলিং রাস্তা দিয়েই নিহত জালাল উদ্দিন দোকানে যেতেন। আর রাস্তা ঘেঁষেই বোরো আবাদ এবং পাশেই সেচ পাম্পটি দেখভাল করেন আব্দুল গণি নামের পাশের বাড়ির এক ব্যক্তি।
সঙ্গত কারনেই ওই পরিত্যক্ত বাড়ির আশ-পাশেই রাতে তার যাতায়াত ও দৃষ্টি যাওয়া স্বাভাবিক। আর আলামত দেখে যেটা বোঝা যাচ্ছে তাতে এটা প্রায় নিশ্চিত যে ওই পরিত্যক্ত বাড়ির পরিত্যক্ত গোয়ালঘরে প্রায় রাতে ইয়াবা সেবনের আসর বসতো আর অন্ধকারে ইয়াবা সেবন সম্ভব নয় একথা সকলেই জানে। অর্থাৎ আব্দুল গণি খুনের সময় কারা ছিল সেটা না জানলেও সেখানে কারা ইয়াবা সেবনের আসর বসাতো তাদের সম্পর্কে জানারই কথা।
স্থানীয় সকলের ধারনা যে, জালাল উদ্দিন নিশ্চয় আকষ্মিক হত্যার শিকার হয়েছে। এলাকাবাসীর জোরালো বিশ্বাস তিনি দোকানের উদ্দেশ্যে ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় হয় ইয়াবা সেবণকারীদের দিকে টর্চ লাইন জ্বালিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন অথবা কোন নারী-পুরুষের অনৈতিক কর্মকান্ড দেখে ফেলায় প্রমাণ বা অপকর্মের সাক্ষী না রাখার তাৎক্ষনিক সিদ্ধান্তেই হঠাৎ আঘাত করেই শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এলাকাবাসীর জোরালো এই দুটি ধারনার আপাতত প্রমাণও পাওয়া গেছে ইয়াবা সেবনের আসর বসানোর আলামত ও বীর্ষসহ কনডম।
এদিকে, স্থানীয় পুলিশ যেহেতু ওইসব আলামতকে গুরুত্বই দিচ্ছেনা আবার তাদের মাথায়ও আপাতত কিছুই ঢুকছেনা,এ কারনে হত্যা রহস্য উদঘাটন করা আপাতত দৃষ্টি দীর্ঘ সময় বা কতো দিন বা মাস অতিবাহিত হবে সেটা অনুমান করাও সম্ভব নয়। তাই এই মামলাটিকে অতি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা পূর্বক গোয়েন্দা পুলিশকে তদন্তভার অর্পণ করার জন্য যশোর পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এলাকাবাসী।