03/14/2025 মনিরামপুরে শিক্ষক মালেক ভূয়া নিবন্ধন সনদ দিয়ে ১০ বছর চাকরির করছেন
মনিরামপুরে শিক্ষক মালেক ভূয়া নিবন্ধন সনদ দিয়ে ১০ বছর চাকরির করছেন
নিজস্ব প্রতিবেদক
২২ নভেম্বর ২০২০ ১৬:১৯
স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর)।।
যশোরের মনিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়া গাঙ্গুলিয়া ফাজিল(বিএ) মাদ্রাসায় চাকরি করার পর ১০ বছর পর কৃষি শিক্ষক আবদুল মালেকের নিবন্ধন সনদটি ভূয়া প্রমানিত হয়েছে। বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ(এনটিআরসিএ) যাচাই বাছাই শেষে কৃষি শিক্ষক আবদুল মালেকের নিবন্ধন সনদটি ভূয়া(জাল) বলে প্রত্যয়ন করেছেন। এছাড়াও তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের এসআই সৈয়দ আজাদও তদন্তে সনদটি ভূয়া প্রমানিত হওয়ায় কৃষি শিক্ষক মালেকের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। আদালত তা গ্রহনও করেছেন। ফলে কৃষি শিক্ষক আবদুল মালেকের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদেরই জয় হতে চলেছে। অভিযোগ রয়েছে উপজেলার খেদাপাড়া গ্রামের জোহর আলী সরদারের ছেলে আবদুল মালেক খেদাপাড়া গাঙ্গুলিয়া ফাজিল মাদ্রাসার গভর্নিংবডির প্রতি প্রভাব বিস্তার করে ২০১০ সালের ১৫ ডিসেম্বর কৃষি শিক্ষক পদে যোগদান করেন।পরবর্তিতে তিনি এমপিওভূক্ত হয়ে সরকারি বেতনভাতা উত্তোলন করে আসছেন।
আবদুল মালেকের দাখিলকৃত নিবন্ধন সনদে পাশের সন উল্লেখ করা হয় ২০০৯, কেন্দ্র বগুড়া, রোল ৩১৯১২৫৭১ এবং রেজিষ্ট্রেশন নং- ৯০০০২৬৬৩। কিন্তু অভিযোগ ওঠে আবদুল মালেকের দাখিলকৃত নিবন্ধন সনদটি জাল। এ নিয়ে অভিযোগকারীদের সাথে আবদুল মালেকের বেশ কয়েকবার ঝগড়া এমনকি সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। ফলে তার সনদটি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিক লিখিত অভিযোগ করা হয়। কিন্তু অভিযোগকারীদের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেননি। ফলে উপায়ন্ত না পেয়ে অভিযোগকারীদের পক্ষে খেদাপাড়া গ্রামের মৃত মোকছেদ আলী সরদারের ছেলে জুলফিকার আলী বাদি হয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে যশোরের অতিরিক্ত চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে কৃষি শিক্ষক আবদুল মালেকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন মনিরামপুর থানার ওসিকে। তদন্তকারী অফিসার এসআই সৈয়দ আজাদ আলী আবদুল মালেকের নিবন্ধন সনদটি যাচাই-বাছাই করতে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের(এনটিআরসিএ) কাছে আবেদন করেন।
আবেদনের প্রেক্ষিতে যাচাই-বাচাই শেষে আবদুল মালেকের নিবন্ধন সনদটি ভূয়া বলে প্রত্যায়ন করেন এনটিআরসিএর সহকারি পরিচালক ফিরোজ আহমেদ। এছাড়া প্রত্যয়নে উল্লেখ করা হয় আবদুল মালেকের দাখিলকৃত নিবন্ধন সনদের প্রকৃত মালিক হলেন বগুড়া জেলার সাইদুর রহমানের ছেলে আইয়ুব আলী নামে এক ব্যক্তি। ফলে মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই সৈয়দ আজাদ আলী সেই প্রত্যয়নপত্রসহ কৃষি শিক্ষক আবদুল মালেকের বিরুদ্ধে সম্প্রতি যশোরের অতিরিক্ত চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। যার অনুলিপি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর প্রেরন করেন। মামলার বাদি জুলফিকার আলী জানান, আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহন করে গত ১১ নভেম্বর রায় ঘোষনার তারিখ নির্ধারন করেন। কিন্তু অনিবার্য কারনে ওই দিন আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় পরবর্তি তারিখে রায় ঘোষনার কথা রয়েছে। সহকারি শিক্ষক(কৃষি) আবদুল মালেক তার নিবন্ধন সনদটি সঠিক দাবি করে জানান,এনটিআরসিএ’র প্রত্যায়নপত্র সম্পর্কে তিনি অবহিত নন। তিনি জানান, আদালত যে রায় দিবে তা তিনি মেনে নিবেন। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা নাজমুস সাদাত, গভর্নিংবডির সভাপতি হাবিবুর রহমান ভোলা এবং উপজেলা মাধমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার জানান, আদালত যে রায় দিবেন তা দ্রুত কার্যকর করা হবে।