04/20/2025 কেশবপুরে ধান কেটে জমি জবর দখলের চেষ্টা: ৪ নারীসহ আহত-৫
অলিয়ার রহমান
৬ মে ২০২৩ ০৪:৫৫
কেশবপুর প্রতিনিধিঃ
কেশবপুর রাজনগর বাঁকাবর্শী বিলে আধা-পাকা ধান কেটে এক একর জমি জবর দখলের চেষ্টা করা হয়েছে। বাধা দেওয়ায় ৪ নারীসহ ৫ জনকে মারাত্মক আহত করা হয়েছে। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এলাকাবাসি ও অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার পাঁজিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড রাজনগর বাঁকাবর্শী গ্রামের মৃত জব্বার আলী সরদারের ২ নং রাজনগর বাঁকাবর্শী মৌজায় হাল ১৮৮৬ ও সাবেক ১২৩১ দাগে ১ একর ১২ শতক ধানী জমি রয়েছে। যা পৈত্রিক সূত্রে তাঁর ৫ পূত্র এবং তার ওয়ারেশগণ ভোগ-দখল করে চাঁষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে তাদের একটি প্রতিপক্ষ উক্ত জমি জবরদখলের পায়তারা করে আসছে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঐ জমিতে ধানের চারা রোপন করেন মৃত জব্বার আলী সরদারের পূত্র ইসলাম সরদার ও হযরত সরদার এবং তাদের আরো ৩ ভাইয়ের ওয়ারিশগণ। কিন্তু গত ১০ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে প্রতিপক্ষরা উক্ত ১ একর ১২ শতক জমির ধান নষ্ট করে ৫০ হাজার টাকার ক্ষতিসাধন করেছে। জমির ধান নষ্ট করে দেওয়ায় দরিদ্র পরিবারের মানুষগুলো দিশেহারা হয়ে পড়ে। এব্যাপারে মৃত জব্বার আলী সরদারের পূত্র ইসলাম সরদার জানান, পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত উক্ত ১ একর ১২ শতক জমিতে ধান চাঁষ করে আমাদের ৫ ভাইয়ের পরিবারের সন্তানরা কোন রকমে জীবন-যাপন করে আসছি। এলাকার শহীদ মোড়ল, আলতাফ মোড়ল ও তার ছেলে রিপোন মোড়ল, আব্দুল মজিদ ওরফে মজু খাঁ ও তার ছেলে মনিরুজ্জামান বাবু, রাসেল হোসেন ,রানা ও হাফিজুর রহমান হাফি-সহ ১৫/২০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তিরা ১০ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে ঐ জমিতে রোপনকৃত সকল ধান নষ্ট করে দিয়ে ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধান করে। এব্যাপারেও হযরত আলী বাদী হয়ে ১০ ফেব্রুয়ারি -২৩ ইং থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
পরবর্তীতে ইসমাইল সরদার ও হযরত আলী সরদার এবং তাদের আরও তিন ভাইয়ের ওয়ারিশগণ দেরিতে হলেও উক্ত জমিতে পুনরায় ধানের চারা রোপন করেন। সার ওষুধ ও পানি দিয়ে পরিচর্যার কারণে নাবিতে ধানের ফলন আসে । ধান পরিপক্ক না হলেও পূর্বপরিকল্পিতভাবে শুক্রবার সকালে শহীদ মোড়ল, আলতাফ মোড়ল, রিপন ও মনিরুজ্জামান বাবুর নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ১৫/২০ জন উক্ত ধান কাটা শুরু করে। এ সময় আব্দুর রশিদ, শাহানারা বেগম, মর্জিনা বেগম, লিপি খাতুন, খাদিজা বেগম ধান কাটতে বাধা দিলে তাদের উপর হামলা করা হয়। দেশীয় অস্ত্রের হামলায় তারা মারাত্মক আহত হয়। উল্লেখ্য শুধু এই ঘটনা না উক্ত ব্যক্তিরা বিভিন্ন সময়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে জমি দখল,ঘের দখল, চাঁদাবাজি, মাদকাসক্তি ও মাদক কারবারি, মারামারি, ভাঙচুরসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ মুলক কর্মকাণ্ড করে থাকেন এবং তাদের নামে ইতিপূর্বেও বিভিন্ন অভিযোগ ও নাশকতার মামলা রয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন এঁদের খুঁটির জোর কোথায় একের পর এক অপরাধ মুলক কর্মকাণ্ড করেও থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে।
মারাত্মক আহতদের প্রথমে কেশপুর হাসপাতালে নেওয়া হয় পরে তাদের মধ্যে দুই জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। এ ঘটনায় আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে কেশবপুর থানায় ৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৫/২০ জনের নামে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কেশবপুর থানার এস আই তাপস রায় বলেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে এবং উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার জন্য বলা হয়েছে। তিনি আরও বলেন ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।#