04/20/2025 নড়াইল সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ গফ্ফারের বিরূদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ
বিশেষ প্রতিনিধি।।
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২৩:৩৩
নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ আব্দুল গফ্ফারের বিরূদ্ধে দুর্নীতি অনিয়ম ও অনৈতিক কাজের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি নিজ ক্ষমতার অপব্যবহার করে এ সকল অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হিসাবে যোগদানের পর থেকে তিনি সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করেন না। সরকারি চাকুরীরত থাকা অবস্থায় পরিবারের অন্য সদস্যের নামে ক্লিনিক করে তা পরিচালনা করছেন এবং সারাক্ষণ তিনি নিজের ক্লিনিকের কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। নিজ কর্মক্ষেত্রে বসে ক্লিনিকের কার্যক্রম পরিচালনায় মোবাইল ফোনে ব্যস্ত থাকেন। গুরুত্বপূর্ণ কাজে আসা লোকজন বসিয়ে রেখে ক্লিনিকের কর্মচারীদের বিভিন্ন কাজের ডিরেকশন দেন। সারাক্ষন হাসপাতালের কর্মচারীদের উপর অহেতুক খবরদারি করে নিজের কর্তৃত্ব জাহির করেন। নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচেয় দেন। তবে তাকে নড়াইলের কয়েকজন চিহিৃত টাউটের সাথে এবং পেশাদার প্রতারকের সাথে অন্তরঙ্গ আলাপচারিতায় দেখা গেছে।
আউটসোর্সিং স্টাফদের মৌখিক অব্যহতি দেয়া সহ নানা অভিযোগ তার নামে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, একটি হাসপাতালের সার্বিক বিষয়ের দায়িত্ব পালন করেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক। অথচ ডাঃ মোঃ গফ্ফার এই দায়িত্ব নেয়ার পর তিনি নিজেই সঠিক সময়ে হাসপাতালে আসেন না।
বৈশ্বিক পরিস্থিতি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য গত বছরের ২২ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদের এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় ২৪ আগস্ট থেকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সকাল ৮ থেকে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত নিজ কর্মক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করবেন। এ নির্দেশনা কার্যকর হলেও তা তোয়াক্কা না করে খেয়াল খুশি মত নিজ কর্মক্ষেত্রে আসেন ডাঃ আঃ গফ্ফার।
জানা গেছে, যশোরের শিল্প ও বন্দরনগরী নওয়াপাড়ার ক্লিনিক পাড়ায় ড্কটরস ক্লিনিক ভবনে “ডক্টরস সেফ নরমাল ডেলিভারী সেন্টার” নামে একটি প্রাঃ হাসপাতাল পরিচালনা করছেন তিনি। একজন সরকারি চিকিৎসক অন্য কোন প্রাঃ হাসপাতাল পরিচালনা করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা থাকায় পরিবারের অন্য সদস্যের নামে ক্লিনিক করে নিজেই পরিচালনা করে আসছেন। ক্লিনিক পরিচালনা করার স্বার্থে তিনি নড়াইল না থেকে নওয়াপাড়াতেই বসবাস করেন। আর সেখান থেকেই অফিস করেন এবং নিয়মিত নওয়াপাড়া হতে তিনি দেরিতে অফিসে পৌছান। তার প্রাঃ ক্লিনিকেও চলে নানা অনিয়ম।
ক্লিনিকে ২০ বেডের অনুমোদন থাকলেও সরকারি কর ফাঁকি দিয়ে অনুমোদনের অধিক বেড রেখে রোগীদের ঠাসাঠাসি করে নোংরা পরিবেশে রেখে চিকিৎসা দিয়ে সরকারকে কর ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছেন। সম্প্রতি তার আরো একটি অনিয়ম সামনে এসেছে। তার এই অনিয়মের বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য নড়াইল-২ এর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, ডাঃ গফ্ফার নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালের দায়িত্ব নেয়ার পর যারা দীর্ঘ ১০ বছর যাবত স্বেচ্ছাসেবি হিসেবে কর্মরত আছেন তাদের মৌখিক ভাবে বাদ দিয়ে নিজের ইচ্ছামত প্রায় ৭০ জন আউটসোর্সিং স্টাফ নিয়োগ দিয়েছেন। যাদেরকে মৌখিক ভাবে বাদ দিয়েছেন তারা মহামারি করোনার সময় জীবনবাজি রেখে রোগীদের সেবা দিয়েছেন। অথচ তাদের সাথে অমানবিক আচরন করায় জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
করোনা কালিন বেতন ছাড়া সেবাদানকারী অভিজ্ঞ ৩০ জন স্বেচ্ছাসেবীদের মৌখিক ভাবে বাদ দিয়ে তিনি যে বীরত্ব দেখিয়েছেন, তা নড়াইলের মানুষ ভালো ভাবে নেয়নি। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীরা বারবার তার স্মরনাপন্ন হলেও কোন এক আজানা কারণে তিনি বিষয়টা এড়িয়ে যান। একটি মহলের অভিযোগ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আউটসোর্সিংদের নিয়োগ দিতে গিয়ে তিনি অমানবিক কাজটি করেছেন। আর তার এই অনৈতিক সুবিধা নেয়ার মধ্যস্থতার কাজটি করেন তার গাড়ি চালক। তাদের প্রত্যেকের নিকট হতে ১ থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়েছে বলে জোরালো অভিযোগ রয়েছে। এসব বিষয়ে
নড়াইল সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়কের নিকট জানতে চাইলে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, নওয়াপাড়াতে পরিবার থাকায় তিনি বাধ্য হয়ে তাদের সাথে সেখানে থাকেন। দুর থেকে আসতে গিয়ে মাঝে মধ্যে একটু দেরি হয়। আর আউটসোর্সিং নিয়োগের সময় গাড়ী চালকের অনুরোধে দু’একজনকে নেয়া হয়েছে। তবে কোন টাকা নেয়া হয়নি।