04/20/2025 সবাই ছেড়ে গেলেও বাল্যবন্ধু ও ছোট ভাই লাশ ছেড়ে যেতে পারেনি!!
মোঃ শাহাজান শাকিল।।
১০ মে ২০২২ ১৭:১১
ছবিতে ৩ জন ব্যাক্তি শুয়ে আছেন। দুই জন জীবিত ১ জন মৃত। মৃত ব্যক্তির নাম মোঃ শাহাদাত হোসেন খোকন। বাড়ি যশোরের মনিরামপুর উপজেলার পৌর শহরের ৪নং ওয়ার্ড দূর্গাপুর গ্রামে।
দুই জন জীবিত ব্যক্তির মধ্যে এক জন মৃত ব্যক্তির ছোট বেলার বন্ধু মোঃ আবু তালেব মোল্লা। আর এক জন রক্তের আপন ছোট ভাই।
ঘটনাটি গত ৩মে ২০২২ইং ঈদের দিন রাত আনুমানিক ১১.৪৫ মিনিটের সময় মাঝের জন মা-রা গেছেন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে যশোর সদর হাসপাতালে। রাত আনুমানিক ১২.৪৫ এর মধ্যে হসপিটাল থেকে লাশ গ্রামের বাড়ি দূর্গাপুর আনা হয়। এলাকাবাসী সহ কাছের কিছু আত্বীয় স্বজন সবাই আসে দেখতে। ঘড়ির কাটা রাত ১.৩০ বাজে এলাকাবাসী যার যার মতো বাড়িতে চলে গেছে। অল্প কিছু আত্মীয় আর ছেলে মেয়ে ছাড়া সবাই চলে গেছে। রাত ২ টা বাজে আত্মীয় স্বজন সবাই ঘুমাতে গেছে। রাত ২ টা ৩০ মিনিট ছেলে মেয়ে ক্লান্ত সহপিটাল থেকে এসে একটু ঘুমাতে গেছে। এখন রাত ৪ টা বাজে লাশের পাশে শুধু বন্ধু আর ভাই আছে। একটু পর ফজরের আজান দিলো আমি ও চলে আসলাম তখন ও ভাই আর ছোট বেলার বন্ধু আছে। ভোর হলো সবাই ঘুম থেকে উঠলো। সকাল ৭.৩০ বাজে লাশ গোসলের জন্য নিয়ে জাওয়া হলো তখন ও বন্ধু আর ভাই সাথেই আছে। গোসল দিয়ে কাফনের কাপড় পরিয়ে নিয়ে খাটিয়ার উপর রাখা হলো তখন ও ভাই আর বন্ধু ই কাছে। চারিদিকে কান্নাকাটির পরিবেশ। দূর দূরাত্ব থেকে আত্বীয় স্বজন আসছে।
সবাই তার পরিবারের প্রতি সমাবেদনা প্রকাশ করছে । অনেক নামি দামী লোক আসলো সবাই জানাজায় অংশ গ্রহনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে । তখন ও বন্ধু বসে আছে খাটিয়া থেকে একটু দূরে এখন তার প্রচুর কষ্ট হচ্ছে বন্ধু জন্য। ছোট বেলার সকল স্মৃতি তার চোখের সামনে ভাসছে। একটু পর বন্ধুকে চির দিনের জন্য বিদায় দিতে হবে। সকাল ৯.৩০ বাজে সবাই লাশ এখন ঈদগাহের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাচ্ছে জানাজার জন্য। পরিবারের সবাই এবং কাছের আত্মীয় অনেকে কান্নাকাটি করছে । যথারীতি প্রায় হাজার মানুষের উপস্থিতিতে জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজা শেষে কবরের উদ্দেশ্যে আবার বাড়ির পিছনে পারিবারিক কবর স্থানে দাফনের জন্য নিয়ে আসা হয় ১০.৩০ বাজে দাফন সম্পন্ন হতে হতে ১১টা বেজেগেল। সবাই দোয়া করে যারযার বাড়িতে চলে যাচ্ছে। দূরের আত্মীয় স্বজন এর জন্য খিচুড়ি রান্না করা হয়েছে তারা খেয়ে মৃতের পরিবারের প্রতি শোক প্রকাশ করে চলে গেলো। তখন ও বন্ধু আর ভাই আছে কাবরের দিকে তাকিয়ে। কিছুক্ষন পর বন্ধু চোখ মুছতে মুছতে চলে গেলো বাড়িতে। ভাই সবাই কে বিদায় দিয়ে এসে ঘরে একাকি ভেজা চোখে শুশে পড়লো ।
শিক্ষাঃ সবাই ছেড়ে গেলেও ভাই আর প্রকৃত ছোট বেলার বন্ধু কখনো ছেড়ে যায় না।
লেখক আমি- মোঃ শাহাজান শাকিল।
মৃত ব্যক্তি শাহাদাত হোসেন (খোকন) আমার বড় মামা মাঝের ব্যক্তি। ছবিতে মৃত মামার এক পাশে কাতা মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে মামার বাল্যবন্ধু আবু তালেবর মোল্লা মামা, অন্য পাশে শুয়ে আছে ছোট মামা মোঃ রাহাত আলী।