মাগুরা শ্রীপুরের কালিনগর গ্রামের ৯ বছরের শিশু ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া দুই মাতবরকে আটক করেছে পুলিশ।
শ্রীপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের বর্তমান মেম্বর জয়ন্ত বিশ্বাস এবং সাবেক মেম্বর আবদুল মতিন নামে দুই মাতববরকে শ্রীপুর থানা পুলিশ সোমবার রাতে আটক করে।
সংবাদ মাধ্যম সুত্রে জানা যায়, কালিনগর গ্রামের ৯ বছর বয়সের ধর্ষণ হওয়া শিশুটি বুধবার বিকালে প্রতিবেশী আরেকটি শিশুর সঙ্গে বাড়ির পাশে খেলা করছিল।
সুযোগ সন্ধানী একই গ্রামের পূর্ণচন্দ্র মণ্ডলের ছেলে সনাৎ মণ্ডল (৪৮) মেয়েটিকে প্রলোভন দেখিয়ে বাড়ির ভেতরে নিয়ে যায়।
সেখানে মেয়েটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে মেয়েটি চিৎকার দেয়, ধর্ষণ চেষ্টাকারী সনাৎ অবস্হার বেগতিক দেখে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
পরে শিশু কন্যাটি ঘটনার কথা মা-বাবার জানায়, ঘটনার এক পর্যায়ে জয়ন্ত মেম্বর গং এবং স্থানীয় মাতবরদের কাছে এই খবর পৌঁছলে তারা মেয়েটির পরিবারকে থানা-পুলিশ করতে নিষেধ করে।
এবং বৃহস্পতিবার বিকেলে নিজেরাই সালিশি বৈঠকের মধ্যমে ব্যাপাটা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। ওই সালিশে জয়ন্ত মেম্বর, মতিন মেম্বর, সরোজিৎ মাতবর, মনোজিৎ, বিষ্ণু বাড়ৌ সহ প্রমূখ উপস্থিত ছিলো বলে স্থানীয়রা জানান।
নির্যাতনের শিকার শিশুকন্যার বাবা জানান, ওই সালিশে সনৎ মণ্ডলকে দোষী সাব্যস্ত করে মুচলেকা নেওয়া হয়, কিন্তু তার কোনো শাস্তি দেওয়া হয়নি।
সালিশি বৈঠক শেষে স্থানীয় মাতবররা মেয়েটির পরিবারকে ১০ হাজার টাকা দিতে চাইলে সেটি ফিরিয়ে দেয় বলে এলাকাবাসির কাজ থেকে জানা যায়।
তবে পরে ধর্ষণের শিকার হওয়া মেয়েটির নিকটাত্মীয়ের কাছে ২০ হাজার টাকা জোর জবরদস্তি করে দিয়ে এই ঘটনাটি প্রকাশ্যে না আনার হুমকিও মাতবর গং দ্বারা দেওয়া হয়।
অতি দুঃখের সাথে শিশু কন্যার বড় চাচা বলেন, আমরা মেয়ের সম্মান বিক্রি করতে চাইনি, কিন্তু টাকা ফেরতও দেওয়ার উপায় নেই, সমাজে চলতে গেলে এসব মাতবরদের কথার বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
ঘটনার পরে বিষয়টি নিয়ে গত রবি ও সোমবার দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে সোমবার রাতেই সাালিশ বৈঠকের আয়োজনকারী দুই মেম্বর জয়ন্ত বিশ্বাস ও আবদুল মতিনকে আটক করেছে শ্রীপুর পুলিশ।
এ বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমকে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুকদেব রায় বলেন, আটক দুই জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে থানায় আনা হয়েছে, অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে গ্রেফতার দেখানো হবে।